‘অভাগা’ ভ্যালেমিক ৬ বছর পর বিশ্বকাপে ফিরে ৪ বল পরই মাঠের বাইরে
কথায় আছে ‘অভাগা যেদিকে চায়, সাগর শুকিয়ে যায়।’ অস্ট্রেলিয়া নারী দলের ডানহাতি পেসার টায়লা ভ্যালেমিকও নিজেকে এখন তেমন অভাগা মনে করতে পারেন।
নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুবাইয়ে গতকাল রাতে পাকিস্তানকে ৯ উইকেটে হারিয়ে সেমিফাইনাল প্রায় নিশ্চিত করে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। এই ম্যাচের চতুর্থ বলে ফিল্ডিং করতে গিয়ে ডান কাঁধের হাড় সরে গেছে মেয়েদের ক্রিকেটের অন্যতম গতিময় এ পেসারের।
পাকিস্তানের ওপেনার ও অধিনায়ক মুনিবা আলীর ব্যাটের কানায় লেগে বল থার্ডম্যান অঞ্চল দিয়ে সীমানা পাড়ি দিচ্ছিল। শর্ট থার্ডম্যানে ফিল্ডিংয়ে দাঁড়ানো ভ্যালেমিক বলের পিছু ছুটে বাউন্ডারি থামানোর জন্য শেষ মুহূর্তে স্লাইড করে বলটি ধরার চেষ্টা করেন। হাতের ওপর ভর করে বাজেভাবে পড়ে যাওয়ায় দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাঁর কাঁধের হাড় সরে যায়।
সীমানার পাশে কাঁধে হাত দিয়ে শুয়ে কাতরাচ্ছিলেন ভ্যালেমিক। অস্ট্রেলিয়ার মেডিকেল দল ছুটে যায় তাঁর পাশে। ভ্যালেমিককে মাঠের বাইরে নিয়ে গিয়ে তাঁর সরে যাওয়া হাড় আবার যথাস্থানে বসানোও হয়। তবে আর ফিল্ডিংয়ে নামতে পারেননি। ভ্যালেমিকের বদলি ফিল্ডার হিসেবে মাঠে নামেন পেসার ডার্সি ব্রাউন। ভ্যালেমিকের চোট কতটা গুরুতর, তা জানা যাবে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে, আজ তাঁর স্ক্যান করানো হবে।
২৫ বছর বয়সী ভ্যালেমিকের ইনজুরি-ভাগ্য মোটেও ভালো নয়। ক্যারিয়ারে অনেকবারই চোটে পড়েছেন। এই চোট কাটিয়েই ফিট হয়ে গত মার্চ-এপ্রিলে বাংলাদেশ সফর দিয়ে অস্ট্রেলিয়া দলে ফেরেন ভ্যালেমিক। তারপর জায়গা করে নেন অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্কোয়াডে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রথম দুই ম্যাচে একাদশে সুযোগ পাননি। কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে গ্রেস হ্যারিসের জায়গায় একাদশে ডাক পান। এর মধ্য দিয়ে ২০১৮ সালের পর বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন ভ্যালেমিক। কিন্তু মাত্র চার বলেই ছিটকে পড়তে হলো মাঠের বাইরে। ২০১৮ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের পর বিশ্বকাপে এটা ছিল ভ্যালেমিকের দ্বিতীয় ম্যাচ।
২০১৭-১৮ মৌসুমে ভিক্টোরিয়ার হয়ে ম্যাচে ভ্যালেমিকের বাঁ কাঁধের হাড় স্থানচ্যুত হয়েছিল। গত বছর অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের ইংল্যান্ড সফরে বোলিংয়ের সময় তাঁর একই কাঁধের হাড় আবারও স্থানচ্যুত হয়। সেরে উঠতে অস্ত্রোপচার করাতে হয়েছিল। ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেকের আগে দুবার এসিএল চোটে পড়েছেন ভ্যালেমিক।
এ ছাড়া পায়ের স্ট্রেস ফ্রাকচারের কারণে ২০২০ সালে ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০২২ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও কমনওয়েলথ গেমস এবং ২০২৩ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে পারেননি। পায়ের এই চোট সারাতে অস্ট্রেলিয়ান ব্যালের পেশাদার নাচিয়েদের সঙ্গে অনুশীলনও করতে হয়েছে ভ্যালেমিককে।