তবে কি গম্ভীরই হচ্ছেন রোহিত-কোহলিদের কোচ
কাকতালীয় কিংবা যা খুশি বলতে পারেন। এটা সত্যি, কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে বিভিন্ন সময়ে কাজ করা কোচ ও মেন্টররা বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট বোর্ডগুলোর কাঙ্ক্ষিত মুখ। ২০১২ ও ২০১৪ সালে কোচ হিসেবে কলকাতাকে দুটি আইপিএল শিরোপা জেতান ট্রেভর বেলিস। তারপর ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) থেকে দুই দফা প্রস্তাব পাওয়ার পর ইংল্যান্ড জাতীয় ক্রিকেট দলের দায়িত্ব নিতে রাজি হন এই অস্ট্রেলিয়ান। ভারতের সংবাদমাধ্যম ‘ক্রিকবাজ’কে এক সূত্র বেলিসের সেই নিয়োগ নিয়ে বলেছেন, ‘প্রস্তাবটি এতটাই ভালো ছিল যে না করা যায় না। বেলিসও তাতে রাজি হন।’
ম্যাথু মটের প্রসঙ্গও টানতে পারেন। কলকাতার সহকারী কোচের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁকেও সাদা বলের সংস্করণে ইংল্যান্ডের কোচ বানিয়েছে ইসিবি। স্থানীয় সময় ২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জস বাটলারদের সঙ্গেই থাকবেন মট। ব্রেন্ডন ম্যাককালামকেও মনে পড়তে পারে। ২০১৯ সালে কলকাতার প্রধান কোচের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। কিউই কিংবদন্তিও দুই বছর পর লাল বলের সংস্করণে ইংল্যান্ডের প্রধান কোচের দায়িত্ব নেন।
এবার সম্ভবত গৌতম গম্ভীরের পালা। ভারতের হয়ে বিশ্বকাপজয়ী সাবেক এই ওপেনার এবার কলকাতার আইপিএল জয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিটির মেন্টরের দায়িত্বে ছিলেন। ভারতের ছেলেদের জাতীয় দলের প্রধান কোচ হওয়ার দৌড়ে গম্ভীর এগিয়ে—এই গুঞ্জন চলছে বেশ কিছুদিন ধরেই। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষে ভারতের বর্তমান প্রধান কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের মেয়াদও শেষ হবে। এরই মধ্যে নতুন কোচ পদে আবেদন চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ভারতের ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)।
ভারতের সংবাদমাধ্যম ‘ক্রিকবাজ’ আজ জানিয়েছে, বিরাট কোহলিদের কোচ নির্বাচনে বিসিসিআইয়ের নির্বাচক প্যানেল একটি কথা মাথায় রাখছে। সেটি হলো, নতুন কোচ যা-ই করুন না কেন, সেটি ‘দেশের জন্য করতে হবে’। আর এ বিষয়ে বিসিসিআই ও গম্ভীরের চিন্তাভাবনাও নাকি একই, ‘আমাদের অবশ্যই দেশের জন্য করতে হবে।’ ক্রিকবাজ জানিয়েছে, বিসিসিআই সচিব জয় শাহর সঙ্গে সাক্ষাতে এ বিষয়কে কেন্দ্র করেই আলোচনা করেছেন গম্ভীর।
গম্ভীর এ মুহূর্তে সব দিক বিবেচনা করছেন বলে জানিয়েছে ক্রিকবাজ। টিভিতে ক্রিকেট বিশ্লেষক হিসেবে সুনাম কামিয়েছেন। কোচ ও মেন্টর হিসেবেও গম্ভীর বেশ সফল। অর্থাৎ ৪২ বছর বয়সী গম্ভীরের সামনে অনেক রকম সুযোগই খোলা আছে। ভারতের প্রধান কোচের দায়িত্ব নিলে গম্ভীর স্বাভাবিকভাবেই অন্য কোথাও মনোযোগ দিতে পারবেন না। কিন্তু অন্য ভূমিকায় তা পারবেন।
ঝামেলা আছে আরও। ভারতের প্রধান কোচ হিসেবে বছরে প্রায় ১০ মাসই ভ্রমণ করতে হবে। এদিকে গম্ভীর কলকাতার মেন্টরের দায়িত্ব নিয়ে দুই মাসের মধ্যে পাঁচবার ছুটি নিয়েছেন। কিন্তু ভারতের কোচ হওয়ার আবেদনের সঙ্গে ফ্র্যাঞ্চাইজির দায়িত্ব নেওয়ার তুলনা চলে না। আর এমন নয় যে ভারতের কোচের দায়িত্ব পালনের পর গম্ভীর আর কখনো নাইটদের ডেরায় ফিরতে পারবেন না।
ক্রিকবাজ জানিয়েছে, গম্ভীর তাঁর ঘনিষ্ঠজনদের জানিয়েছেন, ভারতের কোচের দায়িত্বটি তিনি গ্রহণ করতে পারেন। ১৭ মে ইএসপিএনক্রিকইনফো জানিয়েছিল, ভারতের প্রধান কোচ হিসেবে বিসিসিআইয়ের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে গম্ভীর। গম্ভীর যে ভারতের কোচের দায়িত্বটি নিতে পারেন, সেটি নাকি কলকাতা নাইট রাইডার্সের সহমালিক শাহরুখ খানও জানেন। গতকাল ছিল ভারতের কোচ পদে আবেদনের শেষ দিন। ক্রিকবাজ জানিয়েছে, গম্ভীরের আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করার সম্ভাবনাই বেশি। যদিও দুই পক্ষ এ বিষয়ে এখনো কিছুই নিশ্চিত করেনি।
বিসিসিআইয়ের উচ্চ মহলের ঘনিষ্ঠ আইপিএলের একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের মালিক ক্রিকবাজকে জানিয়েছেন, গম্ভীরের ভারতের কোচ হওয়া চূড়ান্ত। এ নিয়ে সব প্রক্রিয়া নাকি এরই মধ্যে শেষও হয়ে গেছে। এখন শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণাই বাকি। একজন হাই প্রোফাইল ধারাভাষ্যকারও জানিয়েছেন, আনুষ্ঠানিক ঘোষণা যেহেতু এখনো হয়নি, তার অর্থ হলো দুই পক্ষই আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।