ম্যাচ–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে কয়েকবারই প্রশ্নটা করা হলো সাকিব আল হাসানকে। বৃষ্টির পর যখন আবার খেলা শুরু হলো, বাংলাদেশের মাঠে নামতে কোনো আপত্তি ছিল কি না। ডিএলএসের নতুন লক্ষ্য, অ্যাডিলেড ওভালের ভেজা মাঠ—কোনো কিছু নিয়ে আপত্তি তুলে ওই সময়েই মাঠ নামতে আদৌ রাজি ছিলেন কি না তিনি। নাকি অনেকটা জোর করেই বাংলাদেশকে মাঠে নামতে বাধ্য করা হয়েছে!
সাকিব প্রসঙ্গটি বারবারই এড়িয়ে গেলেও জানা গেছে, মাঠ ভেজা থাকার কারণে ওই সময়ই খেলা আবার শুরু করার পক্ষে ছিলেন না সাকিব। দলের একটি সূত্র জানিয়েছে, মাঠ তখনো খেলার উপযোগী ছিল না। সাকিব আম্পায়ারদের সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন। ওই সময় আবার মাঠে নামতে রাজি ছিলেন না তিনি।
আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কথা বলতে নেই। খেলায় তাঁদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। বিশেষ করে একবার সিদ্ধান্ত হয়ে যাওয়ার পর এ নিয়ে চুপ থাকাই নিয়ম। সাকিবও এ কারণেই মুখ খুললেন না। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবারই কৌশলে এড়িয়ে গেলেন প্রসঙ্গটা।
একবার তো এমনও বললেন, ‘আমার কি ক্ষমতা আছে আম্পায়ারদের কোনো কিছুতে রাজি করানোর!’ সঙ্গে বলেছেন, আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত নিয়ে অভিযোগ করার কিছু নেই। অভিযোগ না করার আরেকটা কারণও থাকত পারে। ডিএলএস পদ্ধতিতে বাংলাদেশের সামনে যে নতুন লক্ষ্য দেওয়া হয়েছিল, সেটি বরং মূল লক্ষ্যের চেয়ে তুলনামূলক সহজই ছিল। বেশির ভাগ দলই এমন ম্যাচ জিতে যেত। কিন্তু বাংলাদেশ সেটা পারেনি।
বৃষ্টিতে ৫২ মিনিট খেলা বন্ধ থাকার পর আম্পায়াররা যখন ডিএলএস পদ্ধতিতে বাংলাদেশের নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করে দিলেন, তখন টেলিভিশন পর্দায়ও দেখা গেছে কৌতূহলোদ্দীপক একটা দৃশ্য। ড্রেসিংরুমের সামনে আম্পায়ারদের সঙ্গে কথা বলছেন সাকিব, সেখানে উপস্থিত ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মাও।
আম্পায়ারদের সঙ্গে কথাবার্তায় কোনো একটা বিষয়ে অসন্তুষ্টই মনে হচ্ছিল সাকিবকে। রোহিত পিঠে হাত দিয়ে তাঁকে সম্ভবত শান্ত করতে চাইলেন। পরে সাকিব ফিরে যান ডাগআউটে। সতীর্থ এবং কোচিং স্টাফের সদস্যরা ঘিরে ধরেন তাঁকে। সাকিব দুই হাতে মাথা চেপে ধরে কিছু একটা বলছিলেন তাঁদের।
সংবাদ সম্মেলনের পর ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে সাকিবের কাছে এই প্রতিবেদক আবারও জানতে চান ঠিক কী নিয়ে তিনি কথা বলছিলেন আম্পায়ারদের সঙ্গে। বাংলাদেশ অধিনায়ক এবারও হেসে এড়িয়ে যান প্রসঙ্গটা। তবে দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে, সাকিব আম্পায়ারদের বোঝাতে চেয়েছেন মাঠ তখনো ভেজা। এই মাঠে খেলা ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত না মেনে উপায় ছিল না তাঁর।
বৃষ্টির পর ব্যাটিংয়ে নেমে লিটন দাসের দুবার পা পিছলানোও প্রমাণ করে, মাঠ তখনো ভেজা ছিল। একবার তো রান নিতে গিয়ে পা পিছলে পড়েই গেলেন লিটন! পরে রানআউট হওয়ার সময়ও দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে গতি কমে গিয়েছিল তাঁর। ম্যাচ শেষে সাকিব আনুষ্ঠানিকভাবে এর কোনো কিছুকেই হারের কারণ বলেননি। বলেছেন সবকিছুর পর ম্যাচটা তাঁদের জেতাই উচিত ছিল।
আম্পায়ারদের সিদ্ধান্তই যেখানে চূড়ান্ত, সেখানে আর কীই–বা বলতে পারেন সাকিব!