একুশ শতকে লিটনের বাংলাদেশই সেরা
অধিনায়কত্ব কেমন উপভোগ করেছেন?
লিটন দাস: খুবই উপভোগ করেছি। বোলাররা আমাকে অনেক সহায়তা করেছে। উইকেটের পেছন থেকে দেখছি বোলাররা কীভাবে বল ক্যারি করাচ্ছে। এ রকম বলে কিপিং করেও মজা। অধিনায়ক থাকলে এ রকম সময়ে ভালো লাগে, কারণ উইকেট পাওয়ার সুযোগ থাকে।
এরপর তো এটাই জানতে চাওয়া স্বাভাবিক যে অধিনায়কত্ব নিয়ে লিটনের ভবিষ্যৎ চিন্তা কী। সাকিব আল হাসান নেই বলে এই টেস্টে সহ–অধিনায়ক থেকে অধিনায়কে পদোন্নতি পেয়েছেন লিটন। টেস্ট অধিনায়ক দলে ফিরলে তো তিনি আবার সেই সহ–অধিনায়কই। তারপরও টেস্টে প্রথম অধিনায়কত্ব করা বলে কথা। কখনো যদি লম্বা সময়ের জন্যও অধিনায়কত্ব পান, তা নিয়ে কী ভাবনা লিটনের?
না, আপাতত তাঁর কোনো ভাবনাই নেই এ নিয়ে। তিনি বরং এটাই চাইছেন যে টেস্টের নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব ফিরে আসুন দায়িত্বে, ‘দেখুন আপাতত একটি টেস্টের জন্য দায়িত্ব পেয়েছি। আশা করব সাকিব ভাই তাড়াতাড়ি ফিরে আসবেন এবং তাঁর কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করব। ভবিষ্যতের কথা পরে ভাবব।’
লিটন ভবিষ্যৎ নিয়ে যা–ই ভাবুন না কেন, এই এক টেস্টে অধিনায়কত্ব করেই একটা ইতিহাসে তিনি ঢুকে পড়েছেন ভালোভাবেই। টেস্টে রানের ব্যবধানে বড় জয় পাওয়া অধিনায়কদের তালিকা নিয়ে বসলে এখন সেখানে তিন নম্বরেই পাওয়া যাবে লিটনের নাম।
আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ৫৪৬ রানের জয় একুশ শতকে রানের ব্যবধানে সবচেয়ে বড় টেস্ট জয়। আর টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ জয়।
টেস্টে রানের ব্যবধানে সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ডটি ৯৫ বছর পুরোনো। ১৯২৮ সালে ব্রিসবেনে জ্যাক রাইডারের অস্ট্রেলিয়াকে ৬৭৫ রানে হারিয়েছিল আর্থার পার্সি ফ্রাঙ্ক চ্যাপম্যানের ইংল্যান্ড। টেস্টের ইতিহাসে সেটিই এখনো রানের ব্যবধানে সবচেয়ে বড় জয়ের কীর্তি হয়ে আছে।
এর ছয় বছর পর, ১৯৩৪ সালের আগস্টে ইংল্যান্ডকে একটা পাল্টা জবাব দেয় অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ড যে রকম অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছিল তাদের ঘরের মাঠে গিয়ে, অস্ট্রেলিয়াও ইংল্যান্ডকে তার কাছাকাছি জবাব দিল ওভালের মাঠে। ইংল্যান্ডের ৬৭৫ টপকানো যায়নি, তবে বিল উডফুলের অস্ট্রেলিয়ার ৫৬২ রানের সেই জয়টিই এখন পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে রানের ব্যবধানে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জয়ের কীর্তি হয়ে আছে।
দুটোই গত শতাব্দীর ঘটনা। এই শতাব্দীতে আজকের আগপর্যন্ত রানের ব্যবধানে সর্বোচ্চ জয়ের গৌরব ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জোহানেসবার্গে ৪৯২ রানের জয়, যেটিকে কাল পেছনে ঠেলে দিয়েছে লিটন দাসের বাংলাদেশ।
শুধু তা–ই নয়, এই জয়ের পর এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে টেস্টে সবচেয়ে বড় জয়টাও এখন বাংলাদেশের। সেটা ঢেকে দিয়েছে বাংলাদেশের একটা লজ্জাও। ২০০৯ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে পাওয়া শ্রীলঙ্কার ৪৬৫ রানের জয়টাই যে এত দিন রানের ব্যবধানে এশিয়ার কোনো দলের সর্বোচ্চ জয় ছিল।