ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে গ্লেন ফিলিপস শূন্যে ভেসে ওলি পোপের যে ক্যাচটা নিয়েছেন, নিঃসন্দেহে এ বছরের সেরা ক্যাচগুলোর একটি। দুর্দান্ত সব ক্যাচের জন্য আগেই ‘বাজপাখি’, ‘সুপারম্যান’ তকমা পাওয়া ফিলিপসের ক্যারিয়ারে এই ক্যাচ নিশ্চয়ই ওপরের দিকেই থাকবে।
কিন্তু ফিলিপসের আরেকবার ‘বাজপাখি’ হয়ে ওঠার দিনে নিউজিল্যান্ডের বাকি ফিল্ডাররা যেন হাতে মাখন মেখে (বাটার ফিঙ্গার) নেমেছিলেন! একটি-দুটি নয়, আজ ক্রাইস্টচার্চে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৪ ওভারের মধ্যে ৬টি ক্যাচ মিস করেছে নিউজিল্যান্ড! এক হ্যারি ব্রুকই ক্যাচ দিয়ে বেঁচেছেন ৪ বার!
এত বেশি সুযোগ দিলে একজন ব্যাটসম্যান ফিল্ডিং দলকে যা শাস্তি দেওয়ার, সেটিই দিয়েছেন ব্রুক। ডানহাতি এ ব্যাটসম্যান সপ্তম টেস্ট সেঞ্চুরি করে দিন শেষে মাঠ ছেড়েছেন ১৩২ রানে অপরাজিত থেকে। দিনের শুরুতে নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংস ৩৪৮ রানে থামিয়ে দেওয়া ইংল্যান্ড দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে ৫ উইকেটে ৩১৯ রান নিয়ে।
আগামীকাল তৃতীয় দিন সকালে ব্রুকের সঙ্গে ব্যাট করতে নামবেন বেন স্টোকস। ৩৭ রানে অপরাজিত থাকা ইংল্যান্ড অধিনায়কও একবার ক্যাচ দিয়ে বেঁচেছেন। প্রতিপক্ষ অধিনায়ক টম ল্যাথামের কাছে ক্যাচ দিয়ে বাঁচার সময় তাঁর রান ছিল ৩০। স্টোকস কতটা ভোগাবেন, সেটা তৃতীয় দিনে বোঝা যাবে। তবে চারবার জীবন পাওয়া ব্রুক এরই মধ্যে কিউইদের যথেষ্ট ভুগিয়েছেন।
১৮, ৪১, ৭০ ও ১০৬—নিয়মিত বিরতিতে ক্যাচ দিয়েছেন ব্রুক, নিউজিল্যান্ড ছেড়েছে সব কটিই। এর মধ্যে প্রথমটিই ছেড়েছেন ফিলিপস, বাকিগুলো ল্যাথাম, ডেভন কনওয়ে ও টম ব্লান্ডেল। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক ল্যাথাম তাঁর প্রথম ক্যাচটি ছেড়েছেন ইনিংসের শুরুর দিকে বেন ডাকেটের।
এত এত ক্যাচ মিসের কারণেই ব্রুক পঞ্চম উইকেটে পোপের সঙ্গে গড়েন ১৫১ রানের জুটি, আর ষষ্ঠ উইকেটে স্টোকসের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ৯৭ রান যোগ করে। অথচ ৭১ রানেই চার উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা অবস্থায় ছিল ইংল্যান্ড। ম্যাট হেনরি চতুর্থ ওভারে জ্যাক ক্রলিকে তুলে নেওয়ার পর ডাকেট ও জ্যাকব বেথেলের কিছুটা দেখেশুনে খেলছিলেন। ইনিংসের ১৫তম ওভারে দুই বলের ব্যবধানে বেথেল এবং জো রুটকে দুজনকে ফেরান নাথান স্মিথ। অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা স্মিথের বলে শূন্য রানে বোল্ড হয়েছেন ১৫০তম টেস্ট খেলতে নামা রুট।
এমন ভালো শুরুই নিউজিল্যান্ড শেষ পর্যন্ত পাইকারি ক্যাচ মিসের কারণে ধরে রাখতে পারেনি, যার সাজাটা এখন দিয়ে চলেছেন ব্রুক।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউজিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৯১ ওভারে ৩৪৮ (উইলিয়ামসন ৯৩, ফিলিপস ৫৮*, ল্যাথাম ৪৭, রবীন্দ্র ৩৪; কার্স ৪/৬৪, বশির ৪/৬৯, অ্যাটকিনসন ২/৬১)।
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৭৪ ওভারে ৩১৯/৫ (ব্রুক ১৩২*, পোপ ৭৭, ডাকেট ৪৬, স্টোকস ৩৭*; স্মিথ ২/৮৬, হেনরি ১/৫০)।
—দ্বিতীয় দিন শেষে।