তাসকিন-ইবাদতরাও এখন আয়ারল্যান্ডের দুশ্চিন্তার কারণ
ধীরগতির স্পিন-সহায়ক উইকেটে সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাসুম আহমেদদের মতো বোলার—বাংলাদেশে সফর করা কোনো দলের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জের নাম। তবে গতকাল সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বেশ ভালো ব্যাটিং উইকেটে আয়ারল্যান্ডের মূল ক্ষতিটা করলেন বাংলাদেশ পেসাররাই।
এমন কন্ডিশন আয়ারল্যান্ড যেমন ঠিক প্রত্যাশা করেনি, তেমনি স্পিনারদের পাশাপাশি এবার বাংলাদেশ পেসারদের নিয়েও আলাদা করে ভাবতে হচ্ছে আয়ারল্যান্ডকে।
বাংলাদেশ দলের আনুষ্ঠানিক অনুশীলন না থাকলেও আয়ারল্যান্ডের অনুশীলন করার কথা ছিল আজ। তবে সকাল থেকেই সিলেটে বৃষ্টি, ফলে আইরিশদের অনুশীলন হয়ে পড়ে অনিশ্চিত। বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল ব্যক্তিগত অনুশীলনে ইনডোরে এসে সময় কাটালেও আইরিশদের অনুশীলন বাতিলই করা হয়।
পরে জানানো হয়, অনুশীলন না করলেও দলের প্রতিনিধি কেউ একজন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে আসবেন। দলের ম্যানেজারকে নিয়ে সেটিই করতে এলেন কোচ আইনরিখ ম্যালান।
গতকাল রাতে আয়ারল্যান্ড রীতিমতো উড়ে গেছে স্বাগতিকদের কাছে। ৩৩৯ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দলটি মুখ থুবড়ে পড়েছে ৩০.৫ ওভারে ১৫৫ রান তুলতেই। ইবাদত হোসেন ও তাসকিন আহমেদ—দুই বাংলাদেশি পেসার নিয়েছেন আয়ারল্যান্ডের ৬ উইকেট।
আগামীকাল দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর আগে তাই তাসকিনদের নিয়েও ভাবতে হচ্ছে, সংবাদ সম্মেলনে সেটাই বললেন ম্যালান, ‘গতকাল রাতেই দেখেছি, বাংলাদেশ দল মানে শুধু স্পিনার নয়, তিনজন মানসম্পন্ন পেসারও আছে। আমার মনে হয় আমাদের জন্য ভালো একটি চ্যালেঞ্জ এটি। এটা নিশ্চিত করতে হবে যাতে আমরা আগামীকাল ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারি।’
বাংলাদেশে প্রথম ম্যাচে প্রত্যাশার চেয়ে একটু ভিন্ন কন্ডিশন ছিল বলেও মনে করেন ৪১ বছর বয়সী এ দক্ষিণ আফ্রিকান, ‘দেখুন, অবশ্যই এমন শুরু চাইনি আমরা। এটা নিশ্চিত করতে হবে যে আমরা কন্ডিশনে শতভাগ স্বচ্ছন্দ। যেমনটি প্রত্যাশা করেছিলাম, সত্যি বলতে কি তার চেয়ে একটু ভিন্ন কন্ডিশন। উইকেট সত্যিই ভালো ছিল। আমাদের এখন স্বচ্ছ একটা ধারণা থাকতে হবে এ ব্যাপারে।’
প্রথম ম্যাচে প্রথম পাওয়ার–প্লের মধ্যেই দুই বাংলাদেশি ওপেনারকে ফিরিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। তবে সাকিব আল হাসান ও তাওহিদ হৃদয়ের চতুর্থ উইকেট জুটি ভুগিয়েছে তাদের।
টিম মিটিংয়েও এ ব্যাপারে আলাদা করে কথা বলেছেন কোচ, ‘টি-টোয়েন্টি বা ওয়ানডেতে উইকেট নেওয়ার সামর্থ্য তো একটা ব্যাপার। কালও আলাদা কিছু ছিল না। পাওয়ার–প্লেতে কিছু উইকেট নিয়েছিলাম, তবে মাঝের ওভারগুলোতে ওই জুটি গড়ে ভিত গড়ে দিয়েছে তারা। আমরা টিম মিটিংয়ে আলোচনা করেছি, কীভাবে উইকেট নেওয়া যায়, জুটি ভাঙতে হয়। নিজেদের কন্ডিশনে খেলা ভালো কিছু খেলোয়াড়দের চাপে ফেলা যায়।’
বাংলাদেশ প্রায় পূর্ণশক্তির হলেও আইপিএলের কারণে আয়ারল্যান্ড এ সফরে পাচ্ছে না তাদের সেরা অলরাউন্ডার জশ লিটলকে। তাঁকে মিস করলেও লিটলের না থাকায় অন্য সুযোগও দেখছেন ম্যালান, ‘আমরা আসলে কয়েক বছর ধরেই দেখেছি, সে কতটা পার্থক্য গড়তে পারে—সেটি আমাদের হয়ে খেলার সময় হোক, ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক ক্রিকেটে হোক। তাকে আমাদের মধ্যে পেলে তো ভালোই লাগে। তবে তার না থাকায় আমরা অন্যদের খেলাতে পারছি। আইপিএলে তার জন্য শুভকামনা, যাতে সে ভালো করে। একই সঙ্গে আমরাও স্কোয়াডের গভীরতাও পরখ করতে পারছি।’