ক্রিকেট বেসবলে পরিণত হচ্ছে—৪২ ছক্কার ম্যাচের পর বললেন কারেন
টি-টোয়েন্টিতে রান তাড়ার বিশ্ব রেকর্ড গড়ে গতকাল জিতেছে পাঞ্জাব কিংস। কলকাতা নাইট রাইডার্সের ২৬১ রান তাড়া করতে নেমে পাঞ্জাব জিতেছে ৮ উইকেটে, ৮ বল হাতে রেখে। ৪২টি ছক্কা হয়েছে আইপিএলের এই ম্যাচে, টি-টোয়েন্টিতে যা এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ডও। জয়ের পর পাঞ্জাব অধিনায়ক স্যাম কারেন নিজের ভাবনাটা জানিয়েছেন। ইংলিশ অলরাউন্ডারের মনে হচ্ছে, ক্রিকেট দিনকে দিন বেসবল খেলায় পরিণত হচ্ছে। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে এ কথাই বলেছেন কারেন।
পাঞ্জাব অধিনায়কের ভাষায়, ‘ক্রিকেট বেসবলে পরিণত হচ্ছে, তাই না? ব্যাপারটা অবিশ্বাস্য ছিল। ২টি পয়েন্ট পেয়ে সত্যিই আনন্দিত। এমন ম্যাচের তুলনা চলে না। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো কয়েকটি সপ্তাহ বাজে (৫ ম্যাচে প্রথম জয়) গিয়েছিল, আমরা এরপরও হাল ছাড়িনি। স্কোর ভুলে যান...জয়টা আমাদের প্রাপ্য ছিল।’
আইপিএলে এখন ৩০০ রানের দলীয় সংগ্রহকে বাস্তবসম্মত বলেই মনে হয়। বিশেষ করে এবার ব্যাটিংয়ের সব রেকর্ড ভেঙে যেতে পারে। পাওয়ার হিটিংকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছেন ব্যাটসম্যানরা। এই টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ৮টি দলীয় সংগ্রহের মধ্যে ৭টিই এসেছে এবারের মৌসুমে। টি-টোয়েন্টিতে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ৩৮ ছক্কার রেকর্ডটাও এবারই দেখা গিয়েছিল—গত ২৭ মার্চ সানরাইজার্স হায়দরাবাদ এবং মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের মধ্যকার ম্যাচে রেকর্ডটি হয়, পরে ১৫ এপ্রিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর ও সানরাইজার্সের মধ্যে ম্যাচও সেই রেকর্ডে ভাগ বসায়। কিন্তু গতকাল সেটাও ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়ল পাঞ্জাব ও কলকাতার ম্যাচ। এবার ব্যাটসম্যানদের এত মারমুখী হয়ে ওঠার কারণ কী?
কারেন ব্যাখ্যা দিলেন, ‘আমার মনে হয়, আলাদা করার মতো অনেক কিছুই আছে। খেলোয়াড়েরা যেভাবে অনুশীলন করে এবং তারা দীর্ঘ সময় ধরে বল মারতে পারে। আমার মনে হয় এটা আত্মবিশ্বাস থেকে আসে, এর পাশাপাশি কোচ এবং আমরা যেভাবে অনুশীলন করি, সেসব বিষয় তো আছেই।’
কারেন এরপর বুঝিয়ে দিলেন, ক্রিকেট এখনো পুরোপুরি ব্যাটসম্যানদের খেলা হয়ে না উঠলেও খেলাটা সেই পথেই এগোচ্ছে, ‘ছোট মাঠ, শিশির, বল ভিজে যাচ্ছে, ওয়াইডও পাচ্ছেন। হয়তো ভাবছেন ডট বল হয়ে গেল, কিন্তু রিভিউয়ে পেলেন ওয়াইড। অর্থাৎ অতিরিক্ত আরও একটি ডেলিভারি যোগ হলো। তাই এটা বলছি না যে এটা ব্যাটসম্যানদের খেলা, তবে সেদিকেই যাচ্ছে...আমি নিশ্চিত সবাই ছক্কাই দেখতে চায়। আমার মনে হয়, পরিসংখ্যানের তেমন গুরুত্ব থাকবে না। ছোট ছোট মুহূর্ত জেতাই আসল ব্যাপার।’
পাঞ্জাবের হয়ে ৪৮ বলে ১০৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন জনি বেয়ারস্টো। ২৮ বলে ৬৮ রানে অন্য প্রান্ত ধরে রেখেছিলেন শশাঙ্ক সিং। ২৬২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে বেয়ারস্টোর পরিকল্পনা কী ছিল? এ প্রশ্নের উত্তরটা বেসবলসুলভ ভঙ্গিতেই দিলেন ইংল্যান্ড তারকা, ‘যত দূরে সম্ভব (বল) মারার চেষ্টা করেছি। ২৬০ রানের মতো তুলেছে কোনো দল, এর আগে এমন ম্যাচ কখনো খেলিনি। নিজের জায়গায় পেলে মারতে তো হবেই।’