সাকিবের শূন্যতা অনুভব করবেন আরেক সাকিব
একজন সাকিব আল হাসান, অন্যজন তানজিম হাসান সাকিব। একজন বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার, হয়তো সেরাই। অন্যজনকে মনে করা হচ্ছে আগামীর তারকা।
নামে মিল দুজনের। খুব স্বাভাবিকভাবেই তানজিমকে হয়তো এই প্রশ্নও অনেকবার শুনতে হয়েছে, তাঁর নামকরণে সাকিব আল হাসানের তারকাখ্যাতির প্রভাব আছে কি না।
সেই প্রভাব থাকার কোনো সম্ভাবনাই নেই। কারণ, তানজিম সাকিবের যখন জন্ম, ২০০২ সালে, তখন সাকিব আল হাসানের বয়স ১৫ বছর। সাকিব তারকা হয়ে উঠেছেন আরও পরে। নামে মিল ও ক্রিকেটার পরিচয় ছাড়া বাংলাদেশ দলে দুজনের ভূমিকা একেবারেই আলাদা। সাকিব বাঁহাতি স্পিনিং অলরাউন্ডার, তানজিম মূলত পেসার।
তবে দুজনই যেহেতু বাংলাদেশ দলের হয়ে ক্রিকেট খেলেন, তাঁদের নামের মিল নিয়ে আলোচনা হওয়াটা স্বাভাবিকই। তানজিম প্রায়ই সাকিব বিষয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হন। যেমন হলেন আজ মিরপুরে অনুশীলনেও। সেটা অবশ্য নামের মিলের কারণে নয়, অন্য এক প্রসঙ্গে।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে এ মুহূর্তে সম্ভবত সবচেয়ে আলোচিত নাম সাকিব আল হাসান। ভারতে টেস্ট সিরিজের মাঝে অবসরের ঘোষণা দিয়ে আলোচনায় এসেছেন তিনি। সেই ঘোষণায় অবশ্য কিছু শর্ত, কিছু যদি-কিন্তু আছে।
যেমন টেস্ট থেকে অবসর প্রসঙ্গে বলেছেন, দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এই মাসেই হতে যাওয়া দুই টেস্টের সিরিজের মিরপুর টেস্টটি খেলে এই সংস্করণকে বিদায় বলতে চান। তার আগে চান তাঁকে দেশে ফেরার পর আবার নিরাপদে দেশ ত্যাগ করার নিশ্চয়তা। টি-টোয়েন্টি নিয়ে বলেছেন, আপাতত সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই দেশের হয়ে তাঁর শেষ ম্যাচটা খেলা হয়ে গেছে। তবে বিসিবি যদি কখনো মনে করে তাঁকে দলে প্রয়োজন, তিনি এই সংস্করণে ফেরার কথা ভেবে দেখবেন।
শেষ পর্যন্ত কী হয়, সেটা দেখার জন্য আপাতত অপেক্ষায় থাকা ছাড়া উপায় নেই।
তবে আপাতত বাস্তবতা হচ্ছে, ভারতের বিপক্ষে ৬ অক্টোবর শুরু হতে যাওয়া তিন টি-টোয়েন্টি সিরিজের বাংলাদেশ দলে আরও অনেকের সঙ্গে এখন সাকিবও নেই। সিরিজটি খেলতে আজ ভারতে দলের সঙ্গে যোগ দিতে যাচ্ছেন তানজিম হাসান, শরীফুল ইসলাম, রাকিবুল হাসান, মাহমুদউল্লাহ, পারভেজ হোসেন, তাওহিদ হৃদয়, তানজিদ হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, রিশাদ হোসেন ও মেহেদী হাসান।
স্বাভাবিকভাবেই মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুশীলনের সময় আজ তানজিম সাকিব যখন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন, তখন সাকিব আল হাসান প্রসঙ্গও এসেছে। টি-টোয়েন্টিতে সাকিবের অভাব কতটা অনুভব করবে বাংলাদেশ দল, এমন প্রশ্নে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী তানজিম বলছেন, ‘সাকিব ভাই না থাকার প্রভাব দলে অবশ্যই পড়বে। সাকিব ভাই বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। তিনি ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং—সব দিক থেকেই দলকে সহায়তা করতেন। আমরা ওই জায়গায় তাঁর শূন্যতা অনুভব করব।’ সাকিবের সেই অভাব কীভাবে পূরণ করবে বাংলাদেশ দল? তানজিমের কথা, ‘আমরা চেষ্টা করব দলীয়ভাবে যেন সেই শূন্যতা পূরণ করতে পারি।’
সাকিব প্রসঙ্গ এসেছে ভারতগামী আরেক ক্রিকেটার রাকিবুল সংবাদমাধ্যমে কথা বলার সময়ও। তানজিমের সঙ্গে যেমন সাকিবের নামে মিল, রাকিবের সঙ্গে সেই মিল কিছুটা দলে তাঁর ভূমিকায়। সাকিবের মতোই রাকিবুলও বাঁহাতি স্পিনার। সাদা বলের ক্রিকেটে সাকিবের পর আসলে বাংলাদেশের এই দলে একমাত্র বাঁহাতি স্পিনার রাকিবই। তিনি কি পারবেন সাকিবের বিকল্প হয়ে উঠতে?
উত্তরে রাকিবুল খুব নতুন কিছু বলেননি অবশ্য, ‘আমি আমার সেরাটাই দেওয়ার চেষ্টা করব। নিজেকে সেভাবে প্রস্তুত করছি। দলে সুযোগ পেলে সেটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করব।’
সুযোগ পেলে রাকিবুল নিজের সেরাটা দিয়ে সাকিব হয়ে উঠতে পারেন কি না আর বাংলাদেশ দল পারে কি না সত্যিকারের দল হয়ে খেলে সাকিবের শূন্যতা পূরণ করতে, ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে সেটাই দেখার অপেক্ষা।