মোস্তাফিজহীন দিল্লির টানা দ্বিতীয় জয়
পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা দুই দলের লড়াই। দুই দলই ধুঁকছিল ব্যাটিংয়ে, আজকের লড়াইয়েও ছাপ থাকল সেটির। মনীশ পান্ডে ও অক্ষর প্যাটেলের অবদানে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ১৪৪ রান পর্যন্ত যায় আগে ব্যাটিং করা দিল্লি। সে সম্বল নিয়েই সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে তারা হারিয়েছে ৭ রানে। এ নিয়ে টানা তিন ম্যাচে হারল হায়দরাবাদ, আর টানা দুই ম্যাচ জিতল প্রথম ৫ ম্যাচে হারা দিল্লি। অবশ্য নেট রান রেটের কারণে পয়েন্ট তালিকায় হায়দরাবাদের পরই থাকছে দিল্লি।
এ ম্যাচেও খেলানো হয়নি মোস্তাফিজুর রহমানকে, তাঁকে ছাড়া দিল্লি টসে জিতে নামে ব্যাটিংয়ে। এ বছরের আইপিএলে প্রথম অধিনায়ক হিসেবে হায়দরাবাদে টসে জিতে ব্যাটিং নেন ডেভিড ওয়ার্নার। পাওয়ারপ্লেতে তাঁরা হারায় ২ উইকেট। ভুবনেশ্বর কুমারের করা প্রথম ওভারে ফিল সল্ট কট বিহাইন্ড হওয়ার পর ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শের জুটিতে একটু এগিয়েছিল দিল্লি। এ মৌসুমে পাওয়ারপ্লেতে বেশ খরুচে ওয়াশিংটন সুন্দরকে মৌসুমে নিজেদের প্রথম পাওয়ারপ্লের ছক্কাটি মারেন ওয়ার্নার—চতুর্থ ওভারে। এর আগে মার্কো ইয়ানসেনের ১ ওভারে চারটি চার মেরেছিলেন মার্শ।
দিল্লির যা ঝলক, তা মিলিয়ে যায় সুন্দরের এক ওভারেই। মার্শ টি নটরাজনের শিকার হয়েছিলেন আগেই। এবার ডেভিড ওয়ার্নার, সরফরাজ খান ও আমান হাকিম—সুন্দরের ৫ বলের মধ্যে ফেরেন ৩ জন। এর আগ পর্যন্ত এবারের আইপিএলে সুন্দর ছিলেন উইকেটশূন্য।
৬২ রানে ৫ উইকেট হারানো দিল্লি যে শেষ পর্যন্ত ১৪৪ রান তুলেছে, সেটি মনীশ পান্ডে ও অক্ষর প্যাটেলের অবদানে। ষষ্ঠ উইকেটে দুজন ৫৯ বলে যোগ করেন ৬৯ রান। অক্ষর ফেরার পর শেষ ১৩ বলে ১৩ রান যোগ করতেই অবশ্য দিল্লি হারায় আরও ৩ উইকেট। ৪ ওভারে মাত্র ১১ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন ভুবনেশ্বর।
রান তাড়ায় এবার হ্যারি ব্রুকের সঙ্গে হায়দরাবাদের হয়ে ওপেন করতে আসেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল। তিনি একদিকে শট খেলছিলেন, অন্য দিকে ধুঁকছিলেন ব্রুক। আনরিখ নর্কিয়াকে স্কুপ করতে গিয়ে পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে বোল্ড হন ব্রুক, ১৪ বলে ৭ রান করে। এ মৌসুমে সেঞ্চুরির ঝলক বাদ দিলে নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি এই ইংলিশ ব্যাটসম্যান। পাওয়ারপ্লেতে হায়দরাবাদ তোলে ৩৬ বলে ৩৬ রান।
মাঝের ওভারগুলোতে হায়দরাবাদ রানের গতি তো বাড়াতে পারেইনি, উলটো হারিয়েছে উইকেট। আগারওয়াল ও রাহুল ত্রিপাঠির জুটি ৩৮ রান তুলতেই খেলে ফেলে ৩৯ বল। দুজন ফেরেন পরপর দুই ওভারে—অক্ষরের শিকার ২১ বলে ১৫ রান করা ত্রিপাঠি, ইশান্ত শর্মা বোল্ড করেন ৩৯ বলে ৪৯ রান করা আগারওয়ালকে।
দুই থিতু ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ফেলা, সঙ্গে প্রয়োজনীয় রানরেট বেড়ে যাওয়া—দ্বিমুখী চাপে পড়ে দ্রুত আরও ২ উইকেট হারিয়ে ফেলে হায়দরাবাদ। কুলদীপ যাদব ও অক্ষরকে সামলাতে পারছিলেন না তাঁরা, এবার ফেরেন অভিষেক শর্মা ও অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। শেষ ৪ ওভারে হায়দরাবাদের প্রয়োজন ছিল ৫১ রান।
হাইনরিখ ক্লাসেন ও সুন্দর হায়দরাবাদকে আশা দেন ভালোভাবেই। নর্কিয়া ও মুকেশ কুমারের পরের ২ ওভারে আসে ২৮ রান। নর্কিয়ার পরের ওভারে আকাশে তুলেছিলেন ক্লাসেন, তবে বেশ খানিকটা পেছনে দৌড়ে নাগাল পেলেও সেটি রাখতে পারেননি মার্শ। ঠিক পরের বলেই অবশ্য ডিপ পয়েন্টে ক্যাচ তোলেন ক্লাসেন, ১৯ বলে ৩১ রান করেই থামতে হয় তাঁকে। নর্কিয়ার পঞ্চম বলে চার মেরে হায়দরাবাদকে লড়াইয়ে রাখেন সুন্দর। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৩ রান।
নির্দিষ্ট সময়ে ওভার শেষ করতে না পারায় মুকেশের করা শেষ ওভারে বৃত্তের ভেতর অতিরিক্ত একজনকে আনতে হয় হায়দরাবাদের। সেটির সুবিধা অবশ্য নিতে পারেননি সুন্দররা, প্রথম ৩ বলে ৩ রান নিতে পারেন তাঁরা। পরের ২ বলে দুটি সিঙ্গেলের বেশি দেননি মুকেশ, শেষ বলে দেন ডট। তাতেই নিশ্চিত হয় দিল্লির নাটকীয় জয়।