৩৮ রানে অলআউট হয়ে পাকিস্তানের কাছে বড় ব্যবধানে হার হংকংয়ের
প্রথম ১০ ওভারে ১ উইকেটে ৭০, ১৫ ওভার শেষে সে স্কোর ২ উইকেটে ১১৪। সেখান থেকে চূড়ান্ত স্কোর ২ উইকেটে ১৯২। হংকংয়ের আগের ম্যাচে প্রতিপক্ষ ভারতের স্কোর এগিয়েছিল এভাবে। কাল শারজায় পাকিস্তানও পুনরাবৃত্তি করল সেটিরই। প্রথম ১০ ওভারে ১ উইকেটে ৬৪ রান তোলে পাকিস্তান, ১৫ ওভার শেষে সেটি ছিল ১ উইকেটে ১১৬ রান। ২০ ওভার শেষে সেটিই গিয়ে দাঁড়াল ২ উইকেটে ১৯৩ রানে!
ভারতের বিপক্ষে ৫ উইকেটে ১৫২ রান তুলেছিল হংকং, তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে রান তাড়ায় হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল তাদের ব্যাটিং লাইনআপ। ১০.৪ ওভারে অলআউট হয়ে গেল তারা ৩৮ রানে। ম্যাচ হারল ১৫৫ রানের বড় ব্যবধানে।
সুপার ফোরে যেতে দুই দলের জন্যই এটি ছিল বাঁচা–মরার ম্যাচ। মোহাম্মদ রিজওয়ানের ৫৭ বলে ৭৮ রানের অপরাজিত ইনিংসের সঙ্গে ফখর জামানের ৪১ বলে ৫৩ রানের পর খুশদিল শাহর ১৫ বলে ৩৫ রানের ঝোড়ো ইনিংসে হংকংকে বিশাল লক্ষ্য দেয় পাকিস্তান। অবশ্য শুরুর চিত্রটা মোটেও পক্ষে ছিল না পাকিস্তানের।
বাছাইপর্বে রান তাড়া করে আত্মবিশ্বাসী হংকং অধিনায়ক নিজাকাত গতকালও টসে জিতে নেন ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত। শারজার ধীরগতির, নিচু বাউন্সের উইকেটে শুরুতে ধুঁকেছেন পাকিস্তান ব্যাটসম্যানরা। তৃতীয় ওভারেই এহসান খানকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন অধিনায়ক বাবর আজম, ৮ বলে ৯ রান করে। পাওয়ারপ্লেতে আসে মাত্র ৫টি চার, ওঠে ৪০ রান। নেমেই রানের গতি বাড়াতে পারেননি ১৮ রানে রিভিউ নিয়ে এলবিডব্লু থেকে বেঁচে যাওয়া ফখর জামানও।
রিজওয়ানের সঙ্গে অবশ্য জুটি বড় করেছেন ঠিকই। ১৭তম ওভারে এহসানের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন ফখর, তাতেই ভাঙে ৮১ বলে ১১৬ রানের জুটি। ফখর ফিফটি করেন ৩৮ বলে, ইনিংসে শেষ পর্যন্ত মারেন ৩টি চার ও ২টি ছক্কা।
থ্রু দ্য লাইনে খেলার চেষ্টা শুরুতে সফল হয়নি কাল রিজওয়ান-ফখরদের। আবারও ধীরগতির শুরু করা রিজওয়ান এরপর মনোযোগ দেন স্ট্রাইক বদলের দিকেই। ফ্লিক ছিল তাঁর অন্যতম কার্যকরী শট, যদিও ৬টি চার ও ১টি ছক্কার কোনোটিই সে শটে পাননি তিনি। ফিফটি পূর্ণ করতে রিজওয়ান খেলেন ৪২ বল, পরের ১৫ বলে করেন ২৮ রান।
৩ ওভার বাকি থাকতেও পাকিস্তানের রান ছিল ২ উইকেটে ১৩৮। তবে ১৮তম ওভারে এসে আয়ুশ শুকলা করেন চারটি ওয়াইড, এর মধ্যে একটিতে আবার আসে ৫ রান। আগের দিন বাংলাদেশকে ভুগিয়েছে এই অতিরিক্ত খাত, কাল সেটিতে দুষ্ট হয়েছে হংকংও। ইনিংসে ১৭টি ওয়াইডের সঙ্গে ১টি নো করেছে তারা। শুকলার করা ১৮ রানের ওই ওভারের পর অবশ্য ১৯তম ওভারে ৮ রান দেন এহসান, ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে যিনি নেন ২ উইকেট।
তবে শেষ ওভারে আইজাজ খানের ওপর ঝড় বইয়ে দেন চারে নামা খুশদিল। প্রথম ২ বলে রান আসেনি, তবে পরের বলগুলোতে স্কোরিং শট ছিল এমন—৬, ৫ (ওয়াইড), ৬, ৬, ৬! ২৯ রানের ওভার শেষেই পাকিস্তান এক লাফে পেরিয়ে যায় ১৯০।
রান তাড়ায় শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে শুরু করে হংকং। তৃতীয় ওভারে নাসিম শাহর ঘণ্টায় ১৪৩ কিলোমিটার গতির বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে ক্যাচ তোলেন অধিনায়ক নিজাকাত খান। ৩ বল পর ফেরেন বাবর হায়াতও। নাসিমকে বড় শটের চেষ্টা ব্যর্থ হয় তাঁর, হন বোল্ড। ইয়াসিম মুর্তজাকে ফেরান শাহনেওয়াজ দাহানি। তাঁর শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ তোলেন তিনি, পঞ্চম ওভারটি উইকেট মেডেন করেন দাহানি।
পাওয়ারপ্লের ঠিক পরের ওভারেই আইজাজ খানকে বোল্ড করেন শাদাব খান। অষ্টম ওভারে জোড়া আঘাত করেন মোহাম্মদ নেওয়াজ—কিঞ্চিত শাহ হন এলবিডব্লু, বোল্ড হন স্কট ম্যাকেকনি। নবম ওভারের শেষ বলে শাদাবের গুগলি পড়তে ব্যর্থ হারুন আরশাদ। নওয়াজ দশম ওভারের প্রথম বলে আবার উইকেট পান। ১১তম ওভারের প্রথম বলে শুকলাকে ফিরিয়ে শাদাব জাগান হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা। হ্যাটট্রিক না পেলেও ওভারের চতুর্থ বলে গজনফরকে এলবিডব্লু করে ইতি টেনে দেন হংকংয়ের ইনিংসের।
২.৪ ওভারে ৮ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়ে শাদাবই পাকিস্তানের সেরা বোলার। নওয়াজ ২ ওভারে ৫ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট।