নিহত রিকশাচালকের ছেলের কান্না দেখেই মিরাজের এই সিদ্ধান্ত

পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজসেরা হয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজএএফপি

পাকিস্তানে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের অন্যতম নায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। ব্যাট–বলে পারফর্ম করে জিতেছেন সিরিজসেরার পুরস্কার, যা দেশের বাইরে তাঁর প্রথম। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেই সিরিজসেরার প্রাইজমানি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত রিকশাচালকের পরিবারকে দেওয়ার ঘোষণা দেন এই অলরাউন্ডার। দেশে ফিরে তিনি জানিয়েছেন, কেন সেই রিকশাচালককে সিরিজসেরার প্রাইজমানি দেবেন মিরাজ।

মিরাজ প্রথম টেস্ট চলাকালেই সিদ্ধান্ত নেন রিকশাচালকের পরিবারের জন্য কিছু করবেন। সিরিজসেরা পুরস্কার পাওয়ায় সেই কাজটা আরও সহজ হয়েছে। বিসিবি প্রকাশিত এক ভিডিওতে মিরাজ বলেছেন, ‘প্রথম টেস্টের শেষ দিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেছিলাম একটা ছেলে কান্না করেছে। ছেলেটার বয়স আমার ছেলের বয়সের মতোই। “আমার বাবা মারা গেছেন নামাজ পড়তে গিয়ে, গুলি খেয়ে মারা গেছেন, আমি রক্ত দেখেছি। আমার বাবা ফিরে আসে না”—ওই কথাগুলো আমার এখনো কানে বাজে।’

আরও পড়ুন

মিরাজ যোগ করে বলেছেন, ‘আমার খুব খারাপ লেগেছিল। তখনই নিয়ত করেছিলাম। “ম্যান অব দ্য সিরিজ” হব কি না, তা তো জানতাম না। তবে দেশে এসে ওদের সাহায্য করব, সেটা তখনই নিয়ত করেছি। যেহেতু ম্যান অব দ্য সিরিজ হয়েছি, সেটাই আমি উৎসর্গ করে দিয়েছি।’

দুই টেস্টে ব্যাট হাতে ১৫৫ রান করার পাশাপাশি বল হাতে নিয়েছেন ১০ উইকেট। এর মধ্যে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২৬ রানে ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর লিটন দাাসের সঙ্গে অবিশ্বাস্য ১৬৫ রানের এক জুটি গড়েন মিরাজ। রাওয়ালপিন্ডিতে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানকে ২৭৪ রানে গুটিয়ে দেওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল মিরাজের। ৬১ রান দিয়ে নিয়েছেন ৫ উইকেট।

আরও পড়ুন

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শেষের পর নিজের মতো বাংলায় কিছু কথা বলার অনুমতি চেয়েছিলেন মিরাজ। এরপর সিরিজসেরার প্রাইজমানি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত রিকশাচালকের পরিবারকে দেওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আমি প্রথমবারের মতো দেশের বাইরে ম্যান অব দ্য সিরিজ হয়েছি। সম্প্রতি আমাদের দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন হয়েছে, যেখানে অনেকে শহীদ হয়েছেন। এই আন্দোলনে একজন রিকশাচালক আহত হয়েছিলেন, পরে উনি মারা যান। এই ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কারটা তাঁর পরিবারকে আমি দিতে চাই।’