অজুহাত নেই, তবে আক্ষেপ আছে হৃদয়ের
তাওহিদ হৃদয় মাত্রই আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ৬৩ রানের ইনিংস খেলে রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলনে এলেন। কিন্তু তাঁর চোখেমুখে অন্ধকার। ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ দলের ১৩৩ রানের বিশাল হার যেন ভেঙে দিয়েছে তরুণ এই ব্যাটসম্যানকে। এমন মানসিকতায় সংবাদ সম্মেলনের কথাবার্তা কেমন হতে পারে, তা তো অনুমান করাই যায়। মাঠের খেলায় বাংলাদেশ দলের অসহায় আত্মসমর্পণের মতো সংবাদ সম্মেলনে এসেও তা–ই করলেন হৃদয়।
হারের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি যেমন বললেন, ‘সত্যি কথা বলতে, খুবই ভালো উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য। আমরা ভালো বোলিং করিনি। আমরা কিছু জায়গায় উন্নতি করতে পারি। আশা করি আমরা সেটা করতে পারব।’ পরে যোগ করেন, ‘আমরা তো বল ভালো করিনি। শুধু বল না, ব্যাটিংও ভালো করিনি পুরো সিরিজে। আমাদের কিছু জায়গায় ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিংয়ে উন্নতি করতে হবে। ওরা অনেক ভালো ব্যাটিং করেছে। আমরা আরও ভালো করতে পারতাম।’
টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার কথাও এসেছে তাঁর কথায়, ‘দেখুন, প্রতিটা দলেই টপ অর্ডার থেকে রান হয়। সেখানে রান এলে ইনিংস বড় হয় স্বাভাবিকভাবেই। টপ ফোর থেকে যদি বড় রান আসে, তাহলে রান ১৮০ হয়। আমাদের সবকিছু মিলিয়ে অনেক জায়গা আছে উন্নতির। এই সিরিজে আমাদের জন্য অনেক কিছু শেখার আছে। আশা করি সেটা করতে পারব।’
সিরিজজুড়ে নিজেদের ঘাটতির কথাও মেনে নিয়েছেন হৃদয়, ‘সব জায়গাতেই কমতি ছিল। এক দিন ব্যাটিং ভালো হয়েছে তো বোলিং ভালো হয়নি, বোলিং ভালো হলে ব্যাটিং। আমরা আসলে এই রকম উইকেটে খেলি না। আমি অজুহাত দিচ্ছি না। তবে এ ধরনের উইকেটে আমরা যত খেলব, তত ভালো খেলব।’
ফ্ল্যাট উইকেটে দুই দলের শক্তির পার্থক্যের প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হলে হৃদয়ের উত্তর ছিল এমন, ‘আমাদের মান যে খুব নিচে তা বলব না। আমরা তো বড় দলের সঙ্গে খেলেছি। ভারত শক্তিশালী দল। ওদের হোমে খেলা। ওদের সবকিছু ভালো। স্কিলের দিক থেকেও ওরা এগিয়ে আছে। আমরা যে খুব পিছিয়ে আছি তা বলব না। আমরা ফ্ল্যাট উইকেটে কীভাবে খেলতে পারব, সেটা যত খেলব, তত ভালো বুঝব।’
এ ক্ষেত্রে ভারতকেই আদর্শ উদাহরণ মনে করেন হৃদয়, ‘ভারত আমাদের জন্য উদাহরণ হতে পারে। ফ্ল্যাট উইকেটে কীভাবে খেলা যায়…ভালো পরিকল্পনা করা যায়।’
হৃদয় আইপিএলের সঙ্গেও বিপিএলের তুলনায় যেতে চাননি। উল্টো নিজেদের দক্ষতায় পিছিয়ে থাকার কথা বলেছেন, ‘বিপিএলের সঙ্গে আইপিএলের তুলনা করতে চাই না। উইকেটের কথাই শুধু নয়, আমাদের স্কিলেও উন্নতি আনতে হবে।’
উন্নতি আনতে হবে উইকেট পড়তে পারার দক্ষতায়ও। কিছুটা আক্ষেপের সুরও শোনা গেল হৃদয়ের কণ্ঠে, ‘আমরা বেশির ভাগ খেলোয়াড় উইকেট পড়তে পারি না। আমরা বেশির ভাগ ম্যাচ খেলি মিরপুরে। চট্টগ্রামে খেললে জানি যে কেমন উইকেট হবে। কিন্তু অন্য জায়গায় একেক দিন একেক রকম উইকেট থাকে। আমরা যদি ভালো উইকেট খেলতে থাকি, তাহলে ডে বাই ডে উন্নতি করতে পারব। রাতারাতি হবে না।’