শিকার রোহিত, গিল ও কোহলি, সকালের সেশনে হাসানের হাসি

সকালের সেশনে ৩ উইকেট নেন হাসানএএফপি

টস জিতে নিজের সিদ্ধান্ত জানিয়েই সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন। কিন্তু চমক বাকি ছিল তারপরও। আর সেটাই চেন্নাই টেস্টে আজ প্রথম দিনে প্রথম সেশনে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সবচেয়ে বড় চমক।

কে ভেবেছিল, সকালের সেশনে এক ঘণ্টার মধ্যেই ড্রেসিংরুমে ফিরবেন রোহিত শর্মা, শুভমান গিল ও বিরাট কোহলি! ২৩ ওভারে ৩ উইকেটে ৮৮ রান তুলে মধ্যাহ্নভোজ বিরতিতে গিয়েছে ভারত।

আরও পড়ুন

চেন্নাইয়ের এই চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে ৯০ বছরের টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় অধিনায়ক হিসেবে টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন নাজমুল। এমন কিছুর (টস জিতে ফিল্ডিং) প্রথম ও সর্বশেষ নজিরও চার দশকের বেশি সময় আগে— ১৯৮২ সালে। সিদ্ধান্তটি জানিয়েই নাজমুল বলেছিলেন, তিনি কন্ডিশনটা কাজে লাগাতে চান।

দুর্দান্ত হাসান মাহমুদ। এই কন্ডিশনের জন্য আদর্শ বোলার। সঠিক গতি ও দুই দিকেই সুইং করাতে পারেন। কতক্ষণ সে নিজের ঝাঁজ দেখাতে পারে, সেটাই দেখার বিষয়।
হার্শা ভোগলে, ভারতের ধারাভাষ্যকার

চিদাম্বরমের আকাশে তখন খানিকটা মেঘের ঘনঘটা, পরিবেশও ছিল তুলনামূলক ঠান্ডা। তবু নাজমুলের সিদ্ধান্তের ওপর আস্থা রাখতে পারেননি অনেকেই। কারণ, চিদাম্বরমের উইকেট প্রথাগতভাবে স্পিনবান্ধব, সময় গড়ানোর সঙ্গে যেটি ভাঙতে শুরু করে। সে কারণে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং করা এই মাঠে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং। টস জিতে সেখানে ব্যাটিং নেওয়াই যেন শেষ কথা!

রোহিতকে ফিরিয়ে উইকেট নেওয়ার শুরু করেন হাসান
এএফপি

কিন্তু নাজমুল তাঁর বোলারদের ওপর আস্থা রেখেছেন। প্রথম সেশনে তাঁর ব্যবহার করা চার বোলারের মধ্য থেকে একজন কাজের কাজটি করে দিয়েছেন—হাসান মাহমুদ। প্রথম সেশনে প্রথম ঘণ্টার মধ্যেই হাসানের বলে আউট হয়েছেন টপ অর্ডারের তিন তারকা—রোহিত, গিল ও কোহলি। এরপর চতুর্থ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৫৪ রানের জুটি গড়ে প্রথম সেশনটি শেষ করেছেন ঋষভ পন্ত ও যশস্বী জয়সোয়াল। ৩৭ রানে অপরাজিত জয়সোয়াল ও ৩৩ রানে অন্য প্রান্ত ধরে রেখেছেন পন্ত।

আরও পড়ুন

প্রথম ঘণ্টায় টানা ৭ ওভার বোলিং করেছেন হাসান। প্রথম ওভারটি স্টাম্পের একটু বাইরে করলেও এরপর আঁটসাঁট লেংথে বোলিং করেছেন, সুইং ও সিম মুভমেন্ট পেয়েছেন দুই দিকেই। তাঁকে সাবধানে খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে স্লিপে ক্যাচ দেন ভারতের অধিনায়ক রোহিত (৬)। গিল (০) আউট হয়েছেন লেগ সাইড দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বল খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে।

কোহলির আউটটি বেশ দর্শনীয়। অফ স্টাম্পের বাইরে ক্ল্যাসিক লেংথের ডেলিভারি, কোহলি ড্রাইভ করতে গিয়ে ক্যাচ দেন উইকেটকিপার লিটন দাসকে। ৯.২ ওভারে ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে তখন বেশ চাপেই পড়েছিল ভারত। ওই ওভার শেষে হাসানের স্পেল দাঁড়ায় ৫-২-৬-৩! হাসানের আগে কোনো টেস্টের প্রথম ইনিংসে প্রথম ১০ ওভারের মধ্যে ভারতের ন্যূনতম তিন ব্যাটসম্যানকে সর্বশেষ আউট করেছিলেন শ্রীলঙ্কার পেসার চানাকা ভেলেদেগেরা। সেটি ২০০৯ সালে আহমেদাবাদ টেস্টে।

বাংলাদেশ পন্তকেও আউট করার সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু ২২তম ওভারে স্লিপে তাঁর ক্যাচ নিতে পারেননি সাদমান ইসলাম। তবে সকালের সেশনে মুগ্ধ করেছে হাসানের বোলিং। তা দেখে এই টেস্টের ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে এক্স এ লিখেছেন, ‘দুর্দান্ত হাসান মাহমুদ। এই কন্ডিশনের জন্য আদর্শ বোলার। সঠিক গতি ও দুই দিকেই সুইং করাতে পারেন। কতক্ষণ সে নিজের ঝাঁজ দেখাতে পারে, সেটাই দেখার বিষয়।’

আরও পড়ুন