সেঞ্চুরিতে হেডের ‘রেকর্ড’, অপেক্ষায় স্মিথ

চতুর্থ উইকেটে ২৫১ রান তুলে অবিচ্ছিন্ন ট্রাভিড হেড–স্টিভেন স্মিথরয়টার্স

ক্লাইভ লয়েডকে অনেক কারণেই মনে রেখেছে বিশ্ব ক্রিকেট। তার একটি—ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে প্রথম সেঞ্চুরিয়ান তিনি।

ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তির মতো আজ আরেকটি বিশ্বকাপ ফাইনালের প্রথম সেঞ্চুরির খাতায় নাম লিখিয়েছেন ট্রাভিস হেড। ওভালে শুরু হওয়া বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের প্রথম দিন ভারতের বিপক্ষে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার এই বাঁহাতি।

শুধু হেডই নন, টেস্ট শ্রেষ্ঠত্বের ফাইনালের প্রথম দিনে ভারতের বোলারদের ভুগিয়েছেন স্টিভেন স্মিথও। চতুর্থ উইকেটে হেড-স্মিথের অবিচ্ছিন্ন ২৫১ রানের জুটিতে ভর করে ৩২৭ রান তুলে প্রথম দিন শেষ করেছে অস্ট্রেলিয়া। হেড ১৪৬, স্মিথ ৯৫ রানে ব্যাট করছেন।

হেড-স্মিথের জমাট জুটির আগে স্বস্তিদায়ক অবস্থাতেই ছিল ভারত। ওভালে সকালে সূর্যের দেখা ছিল না, উইকেটে ছিল ঘাসের উপস্থিতি। এ ধরনের উইকেটে শুরুতে পেসাররা সুবিধা আদায় করতে পারেন বলে টস জিতে বোলিং নিতে দ্বিধা করেননি ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। একাদশে চার পেসার নিতে গিয়ে বাদ দেওয়া হয় আইসিসি র‍্যাঙ্কিংয়ের ১ নম্বর বোলার রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে। প্রাথমিকভাবে এই সিদ্ধান্ত কাজেও দেয়। প্রথম সেশনেই অস্ট্রেলিয়ার ২ উইকেট তুলে নেন ভারতের দুই পেসার।

শুরুতে অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানদের চাপে রেখেছেন ভারতের পেসাররা
এএফপি

চতুর্থ ওভারেই উসমান খাজাকে উইকেটের পেছনে শ্রীকর ভরতের ক্যাচ বানান মোহাম্মদ সিরাজ। ১০ বল খেলে কোনো রান করতে পারেননি খাজা। আরেক ওপেনার ওয়ার্নার অবশ্য দারুণ কিছু শট খেলেছেন। তবে ৬০ বলে ৪৩ রান করে মধ্যাহ্নবিরতির ঠিক আগে শার্দূল ঠাকুরের লেগ সাইড ঘেঁষা শর্ট বলে ব্যাট চালিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি। ২৩ ওভারে ২ উইকেটে ৭৩ রান নিয়ে বিরতিতে যায় অস্ট্রেলিয়া।

আরও পড়ুন

বিরতির পর দ্বিতীয় ওভারে মোহাম্মদ শামির ফুল লেংথের বল মিস করে বোল্ড হন মারনাস লাবুশেন। ৫ রানের মধ্যে ২ উইকেট নিয়ে উজ্জীবিত ভারত অবশ্য মিইয়ে যায় এরপরই। মুখোমুখি পঞ্চম বলে শামিকে চার মেরে প্রতি-আক্রমণ শুরু করেন হেড, প্রথম ১৬ বলে করেন ২৭ রান। এরপর অবশ্য গতি কিছুটা মন্থর হয়ে আসে, ফিফটিতে যেতে তাঁর প্রয়োজন হয় ৬০ বলের।

ক্যারিয়ারের ৩১তম সেঞ্চুরির অপেক্ষায় আছেন স্টিভেন স্মিথ
রয়টার্স

অন্য প্রান্তে স্টিভেন স্মিথ করেন সতর্ক ব্যাটিং। কখনো স্টাম্পের ওপরে উড়তে থাকা পোকা তাঁকে ঝামেলায় ফেলেছে আবার স্কয়ার লেগে বেশ ওপরে ঝুলে থাকা স্পাইডারক্যাম নিয়েও নালিশ দিয়েছেন আম্পায়ারের কাছে। তবে চার বছর আগে ইংল্যান্ডে যেখানে শেষ করেছিলেন, এবারও যেন শুরু করলেন সেখান থেকেই। দুজনের জুটি অবিচ্ছিন্ন থেকে যায় চা-বিরতিতে, দ্বিতীয় সেশনে লাবুশেনের উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া যোগ করে ৯৭ রান।

তৃতীয় সেশনে প্রথম মাইলফলক স্পর্শ করেন স্মিথই। ফিফটি করতে তাঁর লাগে ১৪৪ বল, ইংল্যান্ডের মাটিতে সর্বশেষ ৮ ইনিংসে সাতবারই কমপক্ষে ৫০ রান করলেন তিনি।

ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি তুলে অপরাজিত ট্রাভিস হেড
রয়টার্স

৭৫ বলে ৬০ রানে অপরাজিত থেকে বিরতিতে যাওয়া হেড শেষ সেশনের শুরুটা করেন আক্রমণাত্মক, প্রথম ১৭ বলে করেন ৩২ রান। সেঞ্চুরিতে পৌঁছান ১০৬ বলে। এ নিয়ে দ্বিতীয়বার টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল হচ্ছে, তবে সেঞ্চুরি এই প্রথম। ১৯৭৫ সালে প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১০২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক লয়েড, যা বিশ্বকাপ ফাইনাল ইতিহাসে প্রথম সেঞ্চুরি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে এখন পর্যন্ত কেউ সেঞ্চুরি করতে পারেননি।

ওভালে হেড তাঁর ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরিটিকে দিন শেষে টেনে নিয়েছেন ১৪৬ পর্যন্ত। স্মিথ আছেন ৩১তম সেঞ্চুরির অপেক্ষায়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর (প্রথম দিন শেষ):

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ৮৫ ওভারে ৩২৭/৩ (হেড ১৪৬*, স্মিথ ৯৫*, ওয়ার্নার ৪৩; সিরাজ ১/৬৭, শার্দূল ১/৭৫, শামি ১/৭৭)