‘এক নম্বর সুপারস্টার’ বাবরের চ্যালেঞ্জ নিতে তর সইছে না লায়নের
সর্বশেষ অ্যাশেজের মাঝপথে পায়ের মাংসপেশির চোট নিয়ে ছিটকে গিয়েছিলেন নাথান লায়ন। দেশের মাটির গ্রীষ্ম মৌসুমে টেস্টে ফেরার অপেক্ষায় এই অফ স্পিনার। তিনি রোমাঞ্চিত বাবর আজমের মতো ‘সুপারস্টার’-এর বিপক্ষে বোলিংয়ের চ্যালেঞ্জ নিতেও।
গত জুলাইয়ে অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্টে লর্ডসে চোট পান লায়ন। ওই টেস্টেই পরে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে বীরত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন তিনি। তবে এরপর আর স্মরণীয় সে সিরিজে খেলা হয়নি অস্ট্রেলিয়ার সফলতম স্পিনারের। গত মাসে শেফিল্ড শিল্ড দিয়ে ক্রিকেটে ফিরেছেন, এবার টেস্ট ক্রিকেটে ফেরার অপেক্ষায়।
আগামী ১৪ ডিসেম্বর পার্থে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলতে নামবে অস্ট্রেলিয়া। এ মাঠে সুখস্মৃতিই আছে লায়নের, এখন পর্যন্ত ৩ টেস্টে নিয়েছেন ২২টি উইকেট। সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে দারুণ এক মাইলফলক এ মাঠেই ছুঁয়ে ফেলবেন তিনি। ৫০০ উইকেট থেকে মাত্র ৪টি উইকেট দূরে তিনি। সেটি ছুঁতে পারলে ৫০০ উইকেট পাওয়া তৃতীয় ও সব মিলিয়ে মাত্র অষ্টম বোলার হবেন এই ৩৬ বছর বয়সী।
অবশ্য পাকিস্তানের বিপক্ষে কঠিন চ্যালেঞ্জই আশা করছেন লায়ন। বিশেষ করে সদ্যই সাবেক হয়ে যাওয়া অধিনায়ক বাবরের দিক থেকে। ২০১৯ সালে সর্বশেষ সফরে ব্যাট হাতে উজ্জ্বলই ছিলেন বাবর। এমনিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১০ টেস্টে ৪৪.৩৮ গড়ে ব্যাটিং করা বাবর সর্বশেষ সফরে খেলেছিলেন ১০১ ও ৯৭ রানের ইনিংস। গত বছর করাচিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাঁর ১৯৬ রানের দারুণ ইনিংসে ম্যাচ ড্র করেছিল পাকিস্তান।
ইএসপিএনক্রিকইনফোকে বাবর প্রসঙ্গে লায়ন বলেছেন, ‘প্রথমত, বাবরের বিপক্ষে খেলাটা আনন্দের ব্যাপার, তবে সে বড় একটা চ্যালেঞ্জও। আমার চোখে সে বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন, বিশেষ করে স্পিনের বিপক্ষে। সে দারুণ মানের একজন খেলোয়াড়। আমার মনে হয়, সে সব ধরনের বোলিংয়ের বিপক্ষেই ভালো।’
বিশ্বকাপ-ব্যর্থতার পর তিন সংস্করণেরই অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়েছেন বাবর। তাঁর জায়গায় টেস্ট দলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শান মাসুদকে। তবে লায়নের চোখে এখনো বাবরই সবচেয়ে বড় তারকা, ‘তাদের কয়েকজন “সুপারস্টার” আছে, কিন্তু আমি যদি সুপারস্টারদের কথা বলি, তাহলে সে আমার চোখে পাকিস্তান দলে এক নম্বর। গতবার সে এখানে তুলনামূলক ভালো খেলেছিল, ফলে আমাদের জন্য বড় একটা চ্যালেঞ্জই হতে যাচ্ছে আমি নিশ্চিত।’
এমনিতে অস্ট্রেলিয়ার মাঠে রেকর্ড মোটেই সুবিধার নয় পাকিস্তানের, এখন পর্যন্ত ১৩টি টেস্ট সিরিজ খেলে তারা জিততে পারেনি একটিও। ‘ডাউন আন্ডার’-এ সর্বশেষ ১৪টি টেস্টই হেরেছে তারা। অবশ্য সে রেকর্ড এবার বদলাতে চায় পাকিস্তান, এরই মধ্যে আশার কথা শুনিয়েছেন নতুন অধিনায়ক মাসুদ।
লায়ন অবশ্য রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের আশাই করছেন, ‘অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে টেস্ট ম্যাচে খেলার ক্ষুধাটা অনেক বেড়েছে। আমি দারুণ রোমাঞ্চিত এ নিয়ে। পার্থে অপ্টাস স্টেডিয়ামে খেলতে ভালোবাসি। পাকিস্তানের বিপক্ষে চ্যালেঞ্জ হবে, তাই রোমাঞ্চকর এক লড়াই হতে যাচ্ছে।’
আগামী মৌসুমে ইংল্যান্ডে কাউন্টি খেলতে ল্যাঙ্কাশায়ারের সঙ্গে সম্প্রতি চুক্তি করেছেন লায়ন। তবে এর আগে ঘরোয়া ক্রিকেটে আরেকটি নতুন অভিজ্ঞতাই হতে যাচ্ছে তাঁর। বিগ ব্যাশে দীর্ঘদিনের দল সিডনি সিক্সার্স ছেড়ে মেলবোর্ন রেনেগেডসে গেছেন তিনি, সামনে এসসিজিতে সিডনির বিপক্ষে নামবেন তিনি।
তবে লায়ন টেস্টে ফেরার দিকেই বেশি মুখিয়ে আছেন, ‘এসসিজিতে এসে অন্য ড্রেসিংরুমে বসাটা ভিন্নই হবে, আমি কখনো সেটি করিনি। তবে মিথ্যা বলব না, আমার এক চোখ আসলে টেস্ট ক্রিকেটে।’