বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্সে অধিনায়ক নিগার নিজেই ‘সারপ্রাইজড’
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে দলের ব্যাটারদের পারফরম্যান্সে নিজেই বিস্মিত হয়েছেন বাংলাদেশ নারী দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা। মানসিক দিক দিয়ে প্রথম ম্যাচের পর থেকেই তাঁরা পিছিয়ে পড়েছেন, সিরিজে এরপর আর ফিরতে পারেননি বলে মত নিগারের।
৩ ম্যাচ সিরিজের একটিতেও বাংলাদেশ ১০০ ছুঁতে পারেনি। আজ শেষ ম্যাচে ৮৯ রানে গুটিয়ে গেছে নিগারের দল, যেখানে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর ছিল শেষ ব্যাটার মারুফা আক্তারের ১৪ বলে ১৫ রান। ৩ ম্যাচ মিলিয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোরটি ২৭ রানের। ফল, দেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো কোনো সিরিজে ধবলধোলাই হওয়া।
ব্যাটাররা আসলে তাঁদের সামর্থ্যের কতটুকু এ সিরিজে দিতে পারলেন, ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্নের জবাবে নিগার বলেন, ‘১০ শতাংশও না। কারণ, আমি নিজেও টোটালি সারপ্রাইজড (পুরোই বিস্মিত)। কারণ, গত ৬ মাসে যেভাবে ক্রিকেট খেলেছি, এটা একেবারেই অমন না। পুরো দল ব্যর্থ। দু–একটা দিকে ভুল হলে তবুও মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু পুরো দল ভিন্ন ধরনের ক্রিকেট খেলছে। মনে হচ্ছে যে ব্যাকফুটে রেখেছে (কেউ), মনে হয় যে সামর্থ্যের ১০ ভাগও খেলতে পারিনি।’
কেন খেলতে পারলেন না, তার জবাবে নিগারের উত্তর, ‘মনে হয় মানসিক ব্যাপার। কারণ, স্কিল অনুযায়ী তো সমস্যা আছে বলে মনে হয় না। যদি থাকত, তাহলে তো আগে ম্যাচ জিততে পারত না।’
মানসিক কোন দিক দিয়ে ব্যাটাররা পিছিয়ে ছিলেন, তা অবশ্য নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি নিগার, ‘আমি জানি না সবার মধ্যে কী কাজ করছে। আমি তো সবাইকে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কেন জানি সবাই ব্যাকফুটে ছিল প্রথম ম্যাচ থেকেই। সেখান থেকে খেলোয়াড়রা আর ফিরতে পারেনি।’
প্রথম ম্যাচে ২১৪ রান তাড়া করতে নেমে এক সময় ২ উইকেটে ৭০ রান তুলে ফেলেছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে দল গুটিয়ে যায় ৯৫ রানেই। ওই ধসের চাপ থেকে দল বেরোতে পারেনি বলে মনে করেন ৩ ম্যাচ মিলিয়ে ৪৪ রান (যা সিরিজে দলের সর্বোচ্চ) করা নিগার, ‘প্রথম ম্যাচে যখন ১০০-এর নিচে আউট হয়ে গেলাম, তখন থেকে সবার মধ্যে ছিল যে কঠিন হয়ে যাবে, কঠিন হয়ে যাবে। ব্রেনে এটা ঢুকে গেছে। না হলে দ্বিতীয় ম্যাচে উইকেট অনেক ভালো ছিল। তারাও ব্যাটিং করছে, আমরা কেন করতে পারব না।’
ব্যাটিংয়ে টপ অর্ডারের ব্যর্থতা যে বেশি ভুগিয়েছে, নিগার উল্লেখ করেছেন সেটিও, ‘অবশ্যই পুরো দল অনেক হতাশ। সবাই আসলে এমন আশা করেনি। আমরা নিজেরাও আশা করিনি, এতটা বাজে খেলব। দ্বিতীয়ত, আমাদের ইন্টেন্টের অভাব তো অবশ্যই বলব। প্রতিটা দিন টপ-অর্ডার যেভাবে ব্যাটিং করেছে... তাদের থেকে আমরা পাইনি। তারা মাঠে থাকতে পারেনি, থাকলেও রান করতে পারেনি। জুটি গড়ার দিকে কারও কোনো মনযোগ ছিল না।’
নিগার এরপর যোগ করেন, ‘এমন মনে হচ্ছিল যেন, অন্যদের দিকে দায়িত্ব ঠেলে দেওয়া হচ্ছে যে “আমি পারিনি, তুমি করো।” তো পুরো জিনিসটা আসলে দলের জন্য নেতিবাচক।’
স্বাভাবিকভাবে অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ নিয়মিত অঘটন ঘটাবে, সেটি আশা করা একটু বাড়াবাড়িই। তবে নিগারের বলা পরের কথাটিতেই আসলে ফুটে ওঠে সিরিজে বাংলাদেশের আক্ষেপ, ‘অন্তত এমন ক্রিকেট তো খেলব না। এর চেয়ে বেটার ক্রিকেট তো খেলার সামর্থ্য ছিল আমাদের।’