পাকিস্তান বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে কিনা, এখনো জানে না পিসিবি
অক্টোবর-নভেম্বরে ভারতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাকিস্তান দল খেলবে কি না, তা নির্ভর করছে দেশটির সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর। বিশ্বকাপের খসড়া সূচি পাওয়ার পর আইসিসিকে এমনটাই জানিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
শুক্রবার লাহোরে পিসিবি কার্যালয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন পিসিবি চেয়ারম্যান নাজাম শেঠি। সেখানে তিনি বিশ্বকাপের খসড়া সূচির বিষয়ে আইসিসিকে চিঠি পাঠানো হয়েছে জানিয়ে বলেন, ‘আইসিসিকে লেখা চিঠিতে বলেছি (বিশ্বকাপের সূচি নিয়ে) আমরা সম্মতি কিংবা অসম্মতি কিছুই দিতে পারছি না। এটা আমাদের সরকারের সিদ্ধান্ত, ঠিক যেভাবে ভারতের ক্ষেত্রেও তাদের সরকার ঠিক করে দেয়। তাই আহমেদাবাদে খেলব কি না, সে প্রশ্ন আমাদের করে লাভ নেই। সময় হলে প্রথমে আমরা (পিসিবি) সিদ্ধান্ত নেব (বিশ্বকাপে খেলতে) যাচ্ছি কি না। তারপর সরকার সিদ্ধান্ত নেবে আমরা কোথায় খেলতে যাচ্ছি। এ দুটি শর্তের ওপর আমাদের বিশ্বকাপ সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে।’
এর আগে জানা গিয়েছিল, ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ ৫ অক্টোবর শুরু হবে। এর ১০ দিন পর ১৫ অক্টোবর আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ রাখা হয়েছে। আহমেদাবাদের পাশাপাশি কলকাতা, চেন্নাইসহ ভারতের ৫টি ভেন্যুতে রাখা হয়েছে পাকিস্তানের ম্যাচ। সর্বশেষ ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে গিয়েছিল পাকিস্তান দল।
ওয়ানডে বিশ্বকাপের সূচি ঘোষণা করতে এবার দেরি হয়েছে। সাধারণত বিশ্বকাপের এক বছর আগেই সূচি জানিয়ে দেওয়া হয়। ২৭ জুন এবারের বিশ্বকাপের সূচি চূড়ান্ত হতে পারে। বিসিসিআই সচিব জয় শাহ এর আগে জানিয়েছিলেন, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে (৭ জুন থেকে ১১ জুন) এই সূচি পাওয়া যাবে। কিন্তু সেটি হয়নি। সূচি প্রকাশে দেরি হওয়ার বিষয়ে নিজের মতামত জানিয়েছেন নাজাম শেঠি। আইসিসি বিশ্বকাপের সূচির ব্যাপারে সবগুলো বোর্ড ও সম্প্রচারকদের মতামত চেয়েছিল। পিসিবি প্রতিক্রিয়া জানাতে বেশি সময় নেওয়ায় দেরি হয়েছে বলে মনে করেন নাজাম শেঠি, ‘বিসিসিআই সূচি প্রকাশ করত, কিন্তু আমরা বলেছিলাম সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোনো কিছু নিশ্চিত করে বলতে পারব না।’
তবে পাকিস্তান সরকার ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে কবে সিদ্ধান্ত দেবে, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি পিসিবি চেয়ারম্যান শেঠি। কোনো সময়সীমার কথাও বলেননি তিনি। তবে দেরি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। অক্টোবরে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে পাকিস্তানে। দেশটির সরকারের এ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটার কথা।
২০১৬ সালেও সরকারে ছাড়পত্র নিয়েই ভারতে গিয়েছিল পাকিস্তান দল। এর আগে তিন সদস্যের একটি দল ভারতে গিয়ে পাকিস্তানের ম্যাচের ভেন্যুগুলোও পরিদর্শন করেছিল। পিসিবি চেয়ারম্যান এবারের সমস্যার কথা জানিয়ে বলেছেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। এ বিষয়ে তিনি সরাসরি কিছু বলেননি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন পররাষ্ট্র কার্যালয়ের মতামতও প্রয়োজন এবং ভাবতে হবে। তাই এখন অনুমতি চাওয়াটা একটু অগ্রিম হয়ে যায়। আর তা ছাড়া আমরা জানি না তখন (অক্টোবর) ক্ষমতায় কে থাকবে। তাই এখন পর্যন্ত পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। তবে সরকার স্থিতিশীল হওয়ার পর সময় হলেই আমরা অনুমতি চাইব (ভারতে যাওয়ার ব্যাপারে)।’
নাজাম শেঠি আরও বলেছেন, ‘আমরা আইসিসিকে বলেছি নিরাপত্তাব্যবস্থা বিবেচনা করে সরকার যদি আমাদের (ভারতে) যাওয়ার অনুমতি দেয় তাহলে যাব, তা না হলে কিছু করার নেই। অনুমতি পেলে ভেন্যু পছন্দের বিষয়টি আসবে। কোথায় খেলব সেসব চূড়ান্ত হবে। এটা সরকারের সিদ্ধান্ত, দুই বোর্ডের কিছু করার নেই। পিসিবি ও বিসিসিআই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। সিদ্ধান্ত নেবে আমাদের সরকার, ২০১৬ সালে যেভাবে আমাদের সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।’
বিশ্বকাপের আগে ৩১ আগস্ট থেকে শুরু হতে যাওয়া এশিয়া কাপে ভারতের মুখোমুখি হবে পাকিস্তান। পিসিবি অফিশিয়াল আয়োজক হলেও টুর্নামেন্টটি পাকিস্তানের পাশাপাশি শ্রীলঙ্কাতেও অনুষ্ঠিত হবে। এশিয়া কাপ খেলতে ভারত ক্রিকেট দল পাকিস্তানে যাবে না, বিসিসিআই সচিব জয় শাহ এ কথা জানিয়ে দেওয়ার পর ‘হাইব্রিড মডেলে’র টুর্নামেন্ট আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছিল পিসিবি।