তিন বছর পর নাটকীয়ভাবে ইংল্যান্ড দলে হেলস
অবশেষে ইংল্যান্ড দলে ফিরলেন অ্যালেক্স হেলস। গলফ খেলতে গিয়ে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ায় জনি বেয়ারস্টোর জায়গায় এ ওপেনারকে পাকিস্তান সফর ও টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে ডেকেছে ইংল্যান্ড। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সবশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি।
ওই বছরের বিশ্বকাপে হেলসকে বাদ দেওয়া ছিল বড় একটি সিদ্ধান্ত। এর আগে মাদক নিয়ে ডোপ টেস্টে পজিটিভ হওয়ার পর বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ দেওয়া হয় তাঁকে। ওই সময়ের অধিনায়ক এউইন মরগান বলেছিলেন, হেলসের ওপর দলের আস্থা একেবারে ভেঙে পড়েছে। মরগান ছাড়াও বেশ কয়েকজন সিনিয়র ক্রিকেটার হেলসকে দলে চান না, জানা গিয়েছিল এমনই।
সম্প্রতি অবশ্য পরিস্থিতি বদলেছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন মরগান, দায়িত্ব পেয়েছেন জস বাটলার। সীমিত ওভারে এসেছেন নতুন কোচ ম্যাথু মট, তবে হেলসের শিঁকে ছেঁড়েনি। ফর্মে না থাকা ওপেনার জেসন রয়কে বাদ দেওয়া হলেও ইংল্যান্ড বেয়ারস্টোকে দিয়ে ওপেনিং করানোর কথা ভেবেছিল, সঙ্গে বিকল্প ওপেনার হিসেবে দলে ডাকা হয়েছিল ফিল সল্টকে।
বেয়ারস্টোর অদ্ভুত চোটে বদলে যায় পরিস্থিতি। গলফ খেলতে গিয়ে পায়ে চোট পেয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য মাঠের বাইরে চলে গেছেন বেয়ারস্টো। এরপরই ডাকা হলো হেলসকে। অবশ্য বিশ্বকাপের দল ঘোষণার পরই ইংল্যান্ডের ছেলেদের ক্রিকেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রবার্ট কি বলেছিলেন, হেলসকে না নেওয়ার পেছনে শৃঙ্খলাজনিত কারণ নেই। ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে ওই ডোপ টেস্টই হেলসের ক্যারিয়ারের একমাত্র নেতিবাচক ঘটনা নয়। এর আগে ২০১৭ সালে ব্রিস্টলের পানশালায় মারামারিতে জড়িয়ে গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন তিনি বেন স্টোকসের সঙ্গে।
টিম ম্যানেজমেন্টের সুনজরে না পড়লেও হেলস ঘরোয়া ক্রিকেটে রান করে গেছেন নিয়মিতই। সবশেষ দ্য হানড্রেডে শিরোপাজয়ী ট্রেন্ট রকেটসের হয়ে ১৫২.৩৫ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ২৫৯ রান। ডেভিড ম্যালানের সঙ্গে তাঁর ওপেনিং জুটি ট্রেন্টের শিরোপা জয়ে অন্যতম ভূমিকা রেখেছিল। সম্প্রতি ইংল্যান্ডের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে ১০ হাজার রানও পূর্ণ করেন তিনি।
শুধু ইংল্যান্ডের মাটিতে নয়, বিদেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতেও নিয়মিত রান করে গেছেন হেলস। অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ লিগে ২০১৯ সাল থেকে খেলছেন সিডনি থান্ডারে। ৪৫ ম্যাচে করেছেন ১১টি ফিফটি ও ১টি সেঞ্চুরি। আগামী অক্টোবর–নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়াতেই হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এর আগে পাকিস্তান সফরেও কাজে লাগবে হেলসের পিএসএলে খেলার অভিজ্ঞতা। ২০০৫ সালের পর প্রথমবারের মতো পাকিস্তান সফরে যাচ্ছে ইংল্যান্ড।
এখন পর্যন্ত ৬০টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলে হেলসের রান ১৬৪৪, ব্যাটিং করেছেন ৩১.০১ গড় ও ১৩৬.৬৬ স্ট্রাইক রেটে। ২০১৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রামে ইংল্যান্ডের হয়ে প্রথম সেঞ্চুরির রেকর্ডটিও তাঁরই। এখন পর্যন্ত হেলসের অপরাজিত ১১৬ রানের ইনিংসই ইংল্যান্ডের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে সর্বোচ্চ।