জিয়াউরের অলরাউন্ড নৈপুন্যে চট্টগ্রামের নাটকীয় জয়
প্লে-অফের দৌড় থেকে দুই দলই ছিটকে পড়েছে আগেই, কার্যত এ ম্যাচটি ছিল নিয়মরক্ষারই। তার ওপর ঢাকা ডমিনেটরসের এটিই ছিল শেষ ম্যাচ। সে ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে গেল ১১৮ রান পর্যন্ত। সে রান তাড়া করতে নেমেই ঢাকা থেমে গেল ১০৩ রানে। টানা ৬টি ম্যাচ হারার পর অবশেষে জয়ের মুখ দেখল চট্টগ্রাম, আর সান্ত্বনার জয়টুকুও পাওয়া হলো না ঢাকার। তবে কেন দুই দলের একটিও প্লে-অফ খেলতে পারছে না, আজকের ম্যাচের ব্যাটিং প্রদর্শনীতেও যেন থাকল সেটির ছাপ!
আগে ব্যাটিং করা চট্টগ্রাম পথ হারিয়েছিল শুরুতেই। চট্টগ্রামের ব্যাটিংয়ের মূল ক্ষতিটা করেন আরাফাত সানি, তাঁর সঙ্গে আল-আমিন হোসেন আর রান আউটের কবলে পড়ে ২৮ রানেই ৫ উইকেট হারায় তারা। চট্টগ্রামের মাত্র দুজন পান দুই অঙ্কের দেখা—উসমান খান ও জিয়াউর রহমান। কার্টিস ক্যাম্ফারের সঙ্গে উসমানের ৩৯ বলে ৪১ রানের পর মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীকে নিয়ে ২৩ বলে ৩৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন জিয়াউর, চট্টগ্রাম ১১৮ রান পর্যন্ত যায় তাতে। ২০ বলে ৩৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন জিয়াউর, ৩টি চারের সঙ্গে মারেন ২টি ছক্কা।
আরাফাত ৪ উইকেট নেন ২২ রানে, টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এ নিয়ে তৃতীয়বার ৪ উইকেট পেলেন তিনি। আফগান বাঁহাতি স্পিনার ৩.৫ ওভারে ১৩ রানে নেন ১ উইকেট। দশম ওভারে জুবায়ের হোসেনের বদলি হিসেবে এসেছিলেন তিনি। এবার বিপিএলে মাত্র তৃতীয় ম্যাচ খেলতে নামা লেগ স্পিনার জুবায়েরের দিনটা গেছে ভুলে যাওয়ার মতোই। নিজের দ্বিতীয় ওভারে দুটি ফুলটসে নো দেন, যেগুলোকে বিমার কল করেন আম্পায়ার। সে ওভারেই তাই বোলিং থেকে সরে যেতে হয় তাঁকে।
ফিল্ডিংয়ে জিয়াউরের একটি ক্যাচ পড়লেও ভালোই ছিল ঢাকা। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট থেকে সরাসরি থ্রোয়ে মেহেদী মারুফকে স্ট্রাইক প্রান্তে রানআউট করেন অ্যালেক্স ব্লেক। এক্সট্রা কাভারে পেছন ফিরে ডাইভ দিয়ে ক্যাম্ফারের দারুণ ক্যাচ নেন আরিফুল হক।
৭ ওভারের মধ্যে ৩৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়েছিল ঢাকাও। জীবন পেয়েও ১৬ বলে ২১ রানেই থামেন সৌম্য সরকার, কার্টিস ক্যাম্ফারের বলে লাইন মিস করে হন বোল্ড। আব্দুল্লাহ আল মামুন ও আরিফুল হকও স্বচ্ছন্দ্য ছিলেন না ঠিক। অধিনায়ক নাসির হোসেনের সঙ্গে অ্যালেক্স ব্লেকের জুটিতে একটু ধাতস্থ হয় ঢাকা, তবে নিহাদুজ্জামানকে তুলে মারতে গিয়ে মিড উইকেটে ব্লেক ধরা পড়েন ১৩ বলে ১৩ রান করে। ৬৭ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় ঢাকা।
চট্টগ্রাম এরপর ফিল্ডিংয়ে কাটিয়েছে মিশ্র সময়। ২১ রানে লং অনে আফিফ হোসেনের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান নাসির। তবে তাঁকেই ফিরতে হয় মেহেদী মারুফের দুর্দান্ত এক ক্যাচে। ক্যাম্ফারকে তুলে মেরেছিলেন, ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট থেকে অনেকটা পেছনে ছুটে ডাইভ দিয়ে ক্যাচ নেন মারুফ। সে ক্যাচ সম্পন্ন করার পথে মাথায় আঘাতও পেয়েছিলেন, যদিও তেমন গুরুতর কিছু হয়নি।
নাসির অবশ্য ফেরেন অসময়েই। ৩৩ বলে ২৪ রান করে থামতে হয় তাঁকে, ঢাকার তখনো ২৪ বলে প্রয়োজন ছিল ৩১ রান। তবে ঢাকা এরপর ১৫ রান তুলতেই হারায় আরও ৪ উইকেট। ক্যাম্ফার ৩ উইকেট নেন ১৫ রানে, ২টি করের উইকেট নেন জিয়াউর ও মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীও।