নিউজিল্যান্ডকে খাদের কিনারায় ঠেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সুপার এইটে
১৮ ওভার শেষে রান ৯ উইকেটে ১১২। ওয়েস্ট ইন্ডিজ এখান থেকে কত দূর যেতে পারে? এতক্ষণে তা নিশ্চয়ই জানা। সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ শেষ পর্যন্ত তুলেছে ১৪৯। শেষ দুই ওভারে একাই ব্যাট হাতে ৩৭ রান করলেন শেরফান রাদারফোর্ড।
শেষের ২ ওভারে খুঁজে পাওয়া ছন্দে পরে বোলিংয়েও জ্বলে উঠেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ত্রিনিদাদের ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডকে তারা হারিয়েছে ১৩ রানে। ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৩৬ রানেই থেমেছে নিউজিল্যান্ড। টানা তৃতীয় জয়ে সুপার এইটে পৌঁছে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর টানা দুই হারে নিউজিল্যান্ড এখন বিদায় নেওয়ার খুব কাছে। ‘সি’ গ্রুপে তাদের অবস্থান এখন পয়েন্ট তালিকার তলানিতে।
মন্থর উইকেটে ১৫০ রানের লক্ষ্য ছুঁতে শুরুটা ভালো শুরু করতে হতো নিউজিল্যান্ডকে। সেটা তারা করতে পারেনি। উল্টো প্রথম ৭ ওভারে ৪৫ রান তুলতে গিয়ে হারিয়েছে ৩ উইকেট। যার মধ্যে একটি কিউই অধিনায়ক কেইন উইলিয়ামসনের।
মাত্র ১ রান করে স্পিনার গুড়াকেশ মোতির বলে উইকেটকিপার নিকোলাস পুরানের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন উইলিয়ামসন। এর আগে আউট হয়েছেন ফিন অ্যালেন ও ডেভন কনওয়ে। রাচীন রবীন্দ্র ও ড্যারেল মিচেলও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। দুজনেই ফিরেছেন ১১ ওভারের মধ্যে। তখন নিউজিল্যান্ডের রান ১১ ওভারে ৫ উইকেট ৬৩।
এরপর একাই লড়ে গেছেন গ্লেন ফিলিপস। ৩৩ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলে নিউজিল্যান্ডকে কিছুটা আশা দেখিয়েছিলেন তিনি। আলজারি জোসেফ বল হাতে নিয়েছেন ১৯ রানের ৪ উইকেট। মোতি নিয়েছেন ৩ উইকেট।
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজের শুরুটা হয় বাজেভাবে। পাওয়ার প্লের মধ্যে ৪ উইকেট হারায় দলটি। তুলতে পারে মাত্র ২৩ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজ পঞ্চম উইকেট হারায় ৩০ রানে।
সেখান থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রানটা ১৪৯ পর্যন্ত একাই নিয়ে যান রাদারফোর্ড। ২ চার ও ৪ ছক্কায় ৩৯ বলে ৬৮ রানের ইনিংস খেলেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং ইনিংসের রাদারফোর্ডের ৬৮ রানের ইনিংসের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান এসেছে নিকোলাস পুরানের ব্যাট থেকে, তিনি করেছেন মাত্র ১৭ রান।
রাদারফোর্ড ইনিংসের শুরুতে খেলেছেন রয়ে সয়ে। পরিস্থিতি বুঝে জুটি গড়ার চেষ্টা করেছেন। ইনিংসের ১৮তম ওভার শেষে তাঁর রান ছিল ২৭ বলে মাত্র ৩১। সেখানে থেকে মোতিকে নিয়ে দশম উইকেটে ৩৭ রানের জুটি গড়ার পথে একাই ৩৭ করেন তিনি। ১৯তম ওভারে মিচেল ১৯ ও ২০তম ওভারে স্যান্টনার দেন ১৮।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ৩০ রান বা এর চেয়ে কমে ৫ উইকেট হারানোর পর এটাই সর্বোচ্চ স্কোর। টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ৬ নম্বর কিংবা এর পরে নেমে খেলা সর্বোচ্চ রানের ইনিংসগুলোর তালিকায় রাদারফোর্ডের ইনিংসটির অবস্থান তৃতীয়। রাদারফোর্ডের অসাধারণ ইনিংসেই ‘ইমপ্যাক্ট’ কমে গেছে নিউজিল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্টের অসাধারণ স্পেলটির। ৪ ওভারে ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন বোল্ট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০ ওভারে ১৪৯/৯( রাদারফোর্ড ৬৮*, পুরান ১৭, আকিল ১৫, রাসেল ১৪, শেফার্ড ১৩; বোল্ট ৪-১-১৬-৩, সাউদি ৪-০-২১-২, ফার্গুসন ৪-০-২৭-২)
নিউজিল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৩৬/৯ ( ফিলিপস ৪০, অ্যালেন ২৬, রবীন্দ্র ১০, নিশাম ১০; জোসেফ ৪-০-১৯-৪, মোতি ৪-০-২৫-৩)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৩ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা: শেরফান রাদারফোর্ড