মার খেলেই বেরিয়ে আসেন ‘আসল’ হাসান
প্রথম স্পেলে শেষ দুই বলে দুই ছক্কা। জস বাটলার চড়াও হয়েছিলেন হাসান মাহমুদের ওপর। তবে পরের স্পেলে প্রথম বলেই হাসানের প্রত্যাবর্তনটা হলো দারুণ, ফেরালেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক বাটলারকে। চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডও পথ হারাল। হাসান বলছেন, প্রতিপক্ষ চড়াও হওয়ার পর নিজের ‘ক্যারেক্টর শো’ করতে পছন্দ করেন তিনি।
২০২০ সালে অভিষেক হলেও চোটের কারণে বেশ কিছুদিন বাইরে ছিলেন তরুণ এ পেসার। গত বছরের মাঝামাঝি থেকে আবার দৃশ্যপটে, টি-টোয়েন্টি জাতীয় দলে জায়গাটাও পাকা করে তুলছেন। নিজের চারিত্রিক দৃঢ়তার একটা নমুনাই দেখিয়েছেন প্রথম ম্যাচের অমন বোলিংয়ে। প্রথম ২ ওভারে ২১ রান দেওয়া হাসান পরের ২ ওভারে দিয়েছিলেন মাত্র ৫ রান! সে দুটি ওভারও করেছিলেন ডেথে গিয়েই।
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির আগে দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে হাসান আজ ডেথ ওভারে বোলিং প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘আমি বল ধরে ধরে চিন্তা করি। চিন্তা থাকে যাতে ডট দিতে পারি। যদি বাউন্ডারি হয়েও যায়, তবু আমি আমার শক্তিমত্তায় থাকতে চাই। যেটা পছন্দ করি সে বলটাই করি। ওই সময়টায় আমি নিজের “ক্যারেক্টরটা শো” করতে পছন্দ করি। আমি চাই ওই চ্যালেঞ্জটা নিতে।’
বাটলার দুই ছক্কা মারার পরও তাই ভড়কে যাননি হাসান। বলেছেন, ‘ও আমাকে পরপর দুটি ছয় মেরেছে, আমি ছয়ের দিকে তাকাইনি। আমি কী করব, সেটা নিয়ে ভাবছিলাম। আমার চ্যালেঞ্জ ছিল পরের দুই ওভার ডিফেন্ড করার। আমি সেটাই করার চেষ্টা করেছি।’
টি-টোয়েন্টিতে হাসানের মূল লক্ষ্যই থাকে রান আটকানো, ‘টি-টোয়েন্টিতে তো সময় কম থাকে। ব্যাটসম্যানরা শুরু থেকেই মারতে চায়। আমরাও শুরু থেকে রান কম দেওয়ার চিন্তা করি। যে বলে ডট পাওয়া যাবে, ওইটাই বেশি চেষ্টা করব।’
সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে অবশ্য মিশ্র অভিজ্ঞতাই হয়েছিল হাসানের। রোহিত শর্মা, হার্দিক পান্ডিয়া ও অক্ষর প্যাটেলের উইকেট পেলেও শেষ ৪ ওভারে খরচ করেছিলেন ৪৭ রান। তবে ওই ম্যাচ থেকেও শিক্ষা নিয়েছেন হাসান, ‘ভারতের সঙ্গে ওই ম্যাচটার পর আমার ভয়টা কেটে গেছে। এখানে আমার জন্য একটু সহজ হয়েছে। কোনো ব্যাটসম্যান কোন শটটা ভালো খেলে, সে অনুযায়ী পরিকল্পনা থাকে বোলিং করার।’
সর্বশেষ বিপিএলেও তানভীর ইসলামের সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ছিলেন হাসান। সে বিপিএলে মিরপুরের উইকেটও ছিল বেশ ব্যাটিং সহায়ক। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে অমন উইকেট থাকলেও হাসান জানালেন সে চ্যালেঞ্জ নিতে তাঁরা প্রস্তুত, ‘চ্যালেঞ্জ ছিল আমাদের জন্য। ডিফেন্ড করতে খুব কষ্ট হয়েছে। এমন উইকেট থাকলে আমাদেরও শেখা হবে। ভালো ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে বোলিংয়ের অভিজ্ঞতা হবে।’
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে স্যাম কারেন, মার্ক উডদের কাছ থেকে শেখার সুযোগও আছে হাসানের। এখনো অবশ্য আলাদা করে ইংল্যান্ডের কোনো পেসারের সঙ্গে কথা বলেননি, তবে সে পরিকল্পনা আছে তাঁর, ‘সিরিজ শেষে জিজ্ঞাসা করব—চাপটা কীভাবে সামলায়, নতুন বলে কীভাবে বোলিং করে। তারা তো খুব স্মুথলি বোলিং করে।’