সেমিফাইনালে উঠতে হলে ইংল্যান্ডকে যা করতে হবে
চার ম্যাচের তিনটিতে হার, জয় মাত্র একটিতে। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে এমনই অপ্রত্যাশিতভাবে। ১০ দলের পয়েন্ট তালিকায় জস বাটলারের ১০ এখন ৯ নম্বরে। তা–ও ১০ নম্বরে থাকা আফগানিস্তানের চেয়ে মাত্র ০.০০২ রানরেটে এগিয়ে থাকায়।
৯ ম্যাচের লিগ পর্বে চার ম্যাচ মানে প্রায় অর্ধেক। অর্থাৎ সেমিফাইনাল টিকিটের লড়াইয়ে প্রায় অর্ধেক ম্যাচ খেলে তলানির দিকে অবস্থান করছে ২০১৯–এর চ্যাম্পিয়নরা। শুরুর এই ধাক্কা সামলে দলটি সেমিফাইনালে উঠতে পারবে কি না, এ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। কারণ, হাতে থাকা বাকি পাঁচ ম্যাচ জিতলেও শেষ চারে থাকা অনিশ্চিত।
এখন দেখা যাক, ইংল্যান্ডকে সেমিফাইনালে উঠতে হলে নিজেদের কী করতে হবে, আর অন্য দলগুলোর কেমন ‘সহযোগিতা’ লাগবে। এ মুহূর্তে পয়েন্ট তালিকার নিচের পাঁচটি দল হচ্ছে যথাক্রমে বাংলাদেশ (ষষ্ঠ), নেদারল্যান্ডস (সপ্তম), শ্রীলঙ্কা (অষ্টম), ইংল্যান্ড (নবম) এবং আফগানিস্তান (দশম)। এই পাঁচ দলের সবার জয় একটি, পয়েন্ট ২ করে। দলগুলোর মধ্যে ব্যবধান তৈরি হয়েছে রানরেটে। আর সেটা ষষ্ঠ থেকে দশমের মধ্যে মাত্র ০.৪৬৬।
এখানে পয়েন্ট তালিকার চতুর্থ ও পঞ্চম দলও প্রাসঙ্গিক। চার ম্যাচে ৪ পয়েন্ট করে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া চারে এবং পাকিস্তান পাঁচে আছে। অস্ট্রেলিয়ার রানরেট –০.১৯৩, পাকিস্তানের –০.৪৫৬। অর্থাৎ পয়েন্ট তালিকার চারে ও ১০ নম্বরে থাকা দলের ব্যবধান মাত্র দুই পয়েন্টের।
১০ দলের রাউন্ড রবিন লিগে একটি দলের সাত ম্যাচ জিতেও সেরা চারে না থাকা আবার মাত্র তিনটি জিতেও সেরা চারে থাকা সম্ভব। কিন্তু টুর্নামেন্টের পয়েন্ট তালিকা আর ইংল্যান্ড যেখানে দাঁড়িয়ে, তাতে বাটলারদের জন্য বাস্তবসম্মত সম্ভাবনা আসলে কতটা?
টুর্নামেন্টের এই পর্যায়ের পয়েন্ট তালিকা বলছে, ইংল্যান্ড ৯ ম্যাচের ৬টিতে জিতলেও সেরা চারে থাকা নিশ্চিত হবে না, বিশেষ করে তাঁদের বাজে রানরেটের কারণে। পয়েন্ট তালিকার গতিপথ বলছে, ইংল্যান্ড তাদের পরের পাঁচ ম্যাচের সব কটিতে জিতলেও চারটির বেশি দলের কমপক্ষে ছয়টি জয় থাকবে। সমীকরণ হতে পারে এ রকম—দক্ষিণ আফ্রিকা হারাল ভারত, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানকে। পাকিস্তান হারাল নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানকে। ইংল্যান্ড জিতল পাঁচে পাঁচটিই। ব্যাপারটি ঘটলে ৬ দলের কমপক্ষে ৬টি করে জয় থাকবে। এমনটি ঘটতে গেলে রানরেট হয়ে উঠবে মূল প্রভাবক। যেখানে এ মুহূর্তে বেশ পিছিয়ে ইংল্যান্ড।
আবার এমনও ঘটতে পারে, ইংল্যান্ড পরের পাঁচ ম্যাচের একটিতে হেরেও পাঁচ জয় নিয়ে সেরা চারে থাকা দলগুলোর সমান পয়েন্টে থাকতে পারবে। এমনকি পাঁচ জয়েও সেরা চার সম্ভব, নেট রানরেটের হিসাবও দরকার পড়বে না। তবে এ জন্য একাধিক অঘটন ঘটতে হবে যেমন নিউজিল্যান্ডের পাঁচ জয় থাকবে, যার মধ্যে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ও থাকবে। দক্ষিণ আফ্রিকা হারাবে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানকে। আর অস্ট্রেলিয়া হারাবে নেদারল্যান্ডস, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশকে। আর ভারতকে হারাতে হবে শ্রীলঙ্কা বা নেদারল্যান্ডসকে।
অর্থাৎ মূল ব্যাপার দাঁড়াচ্ছে ইংল্যান্ড আর একটি হারও হয়তো সামাল দিতে পারবে না। এমনকি টানা পাঁচ জেতাও হয়তো যথেষ্ট হবে না। তবে বাটলারদের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে ২০১৯ বিশ্বকাপ। সেবার এউইন মরগানের দল ৯ ম্যাচের ৩টিতে হেরেও সেমিফাইনালে উঠেছে। শেষ পর্যন্ত জিতেছে বিশ্বকাপ ট্রফিও। সেবার তারা অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কার কাছে পরপর হেরেছিল, যেমনটি এবার হয়েছে আফগানিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।