গাভাস্কার বললেন ‘গামবল’ নয় ‘গোহিট’

ভারতের কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কারইনস্টাগ্রাম

টেস্ট সিরিজ শেষ হয়েছে সপ্তাহখানেক আগে। কানপুরে দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারানোর পথে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলেছে ভারত। কেউ কেউ এর পেছনে ভারতের প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীরের অবদান দেখেছেন। কিন্তু সুনীল গাভাস্কার তা মনে করেন না।

ভারতীয় কিংবদন্তির মতে, এসব কিছুতে অবদান অধিনায়ক রোহিত শর্মার। ব্যাপারটি এতটুকুতে সীমাবদ্ধ থাকলে হয়তো এ নিয়ে কথাই হতো না আর। কিন্তু এ বিষয়ে একটি মন্তব্য করে এখন নেটিজেনদের তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছেন টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ১০ হাজার রানের মাইলফলক ছোঁয়া কিংবদন্তি।

আরও পড়ুন

কানপুর টেস্টে একবার ফিরে তাকানো যাক। প্রথম দিনে ৩৫ ওভার খেলা হওয়ার পর বৃষ্টির কারণে পরের দুই দিনে খেলা হয়নি। চতুর্থ দিনে বাংলাদেশ ২৩৩ রানে অলআউট হওয়ার পর টেস্টের ফল বের করতে এবং সেটা নিজেদের পক্ষে আনতে আগ্রাসী ব্যাটিং করে ভারত। ওভারপ্রতি ৮.২২ গড়ে ৩৪.৪ ওভারে ৯ উইকেটে ২৮৫ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে রোহিতের দল। বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৪৬ রানে অলআউট হয়ে ৯৫ রানের লক্ষ্য দিতে পারায় সহজেই হেরে বসে ভারতের কাছে।

ভারতের এই জয়ের পর দেশটির বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম ইংল্যান্ডের ‘বাজবল’–এর অনুকরণে রোহিতের দলের এমন আক্রমণাত্মক খেলার নাম দেয় ‘বস–বল’ এবং ‘গাম–বল।’ পরের নামটির সঙ্গে যে গৌতম গম্ভীরের যোগসূত্র রয়েছে, সেটি না বললেও চলে। ইংল্যান্ড দলের যেমন ব্রেন্ডন ম্যাককালামের ‘বাজ’ নামের অনুকরণে ‘বাজবল।’ আর ‘বস–বল’ নামে গম্ভীরের সঙ্গে রোহিতের যোগসূত্রও আছে। ভারত জাতীয় ক্রিকেট দলের ‘বস’ কারও চোখে রোহিত, কারও চোখে গম্ভীর।

কানপুর টেস্টে রোহিত শর্মার নেতৃত্বে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলেছে ভারত
এএফপি

ভারতের সংবাদমাধ্যম ‘স্পোর্টসস্টার’–এ গতকাল লেখা কলামে এ নিয়ে নিজের মতামত দেন গাভাস্কার, ‘একটি পত্রিকা ভারতের ব্যাটিংকে “বস–বল” বলছে, কারণ তাদের অধিনায়ক অথবা দলের “বস” রোহিত পথ দেখিয়েছে। “গাম–বল” বলা হচ্ছে ভারতের কোচ গৌতম গম্ভীরের জন্য।’

গাভাস্কার আরও লেখেন, ‘বেন স্টোকস ও ব্রেন্ডন ম্যাককালামের সময়ে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। গত কয়েক বছর ধরে আমরা দেখছি রোহিত নিজে এভাবে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বাকি সতীর্থদেরও তা করতে উৎসাহ দিচ্ছে। গম্ভীর কোচ হয়ে এসেছে মাত্র কয়েক মাস। তাই এই (আগ্রাসী ব্যাটিং) মানসিকতার সঙ্গে তাকে জুড়ে দেওয়াটা পদলেহনের সর্বোচ্চ পর্যায়। ম্যাককালাম যেভাবে ব্যাট করত, গম্ভীর নিজে সেভাবে খুব কমই ব্যাট করেছে। অবদান যদি কারও থেকে থাকে সেটা শুধু রোহিতের।’

আরও পড়ুন

গত জুলাইয়ে ভারতের প্রধান কোচ হন গম্ভীর। কলামে তাঁকে ভারতের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের নেপথ্য নায়ক মনে না করে রোহিতের নামে এমন ব্যাটিংয়ের নামকরণ করার পরামর্শ দেন গাভাস্কার, ‘এই বল কিংবা সেই বল নাম না রেখে আমি বলব অধিনায়কের প্রথম নাম ব্যাবহার করে “গোহিট” রাখতে। আশা করি বুদ্ধিমান মানুষেরা “বাজবল”–এর চেয়ে বেশি প্রচলিত এই নামটি বেছে নেবে।’

গত জুলাইয়ে ভারতের প্রধান কোচ হন গৌতম গম্ভীর
বিসিসিআই

বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে ধারাভাষ্য দেওয়া গাভাস্কারের এমন মন্তব্য ভারতের অনেক ক্রিকেটপ্রেমীই ভালো চোখে দেখেননি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁকে ধুয়ে দিয়েছেন অনেকেই। এক্সে এক নেটিজেনের মন্তব্য, ‘সুনীল গাভাস্কারের অবসর নেওয়া উচিত।’ গাভাস্কার ১৯৮৭ সালেই ক্রিকেট ছেড়েছেন। সম্ভবত তাঁর ধারাভাষ্য ও ক্রিকেট–বিশ্লেষণ থেকেও অবসর নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন সেই নেটিজেন। আরেকজন লিখেছেন, ‘গাভাস্কার সাহেব, সম্মান রেখেই বলছি সব সময়ই আপনার ভক্ত ছিলাম, কিন্তু কিছু সময় আপনার স্রেফ চুপ থাকা উচিত।’

টেস্ট সিরিজ ২–০ ব্যবধানে জয়ের পর প্রথম টি–টোয়েন্টিতেও জিতেছে ভারত। তিন ম্যাচের এই টি–টোয়েন্টি সিরিজে দিল্লিতে আগামীকাল দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ।

আরও পড়ুন