ইতিহাস গড়ার সঙ্গে হাথুরুর চোখ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে শ্রীলঙ্কাকে প্রথমবারের মতো সিরিজ হারানোর সুযোগের সামনে দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে ৩ রানে হারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে ৮ উইকেটের বড় জয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে নাজমুল হোসেনের দল। আগামীকাল লঙ্কানদের বিপক্ষে জয় এলেই হয়ে যাবে ইতিহাস। বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেও তেমন কিছুরই অপেক্ষায় আছেন। একই সঙ্গে হাথুরুর চোখ জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে হতে যাওয়া টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও আছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের উইকেট কেমন হবে, সেটা নিযে ভাবছেন তিনি। এ বিষয়ে হাথুরুসিংহে তাঁর অস্ট্রেলীয় যোগাযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন।
আজ সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দলের অনুশীলন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলেছেন, ‘আপনি যেমন বললেন, আমরা ইতিহাসটা বদলানোর দ্বারপ্রান্তে আছি।’ এ ম্যাচে অবশ্য লঙ্কান দলে ফিরছেন তাদের নিয়মিত অধিনায়ক ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। হাথুরুসিংহে অবশ্য তারকা লেগ স্পিনারের ফেরা নিয়ে খুব একটা চিন্তত নন, ‘ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা আমাদের জন্য অন্যদের মতোই একজন ক্রিকেটার।’
হাথুরুসিংহে বরং নিজেদের খেলায় মনোযোগ দিতে চাচ্ছেন, ‘আমরা সিরিজটা জেতার মতো অবস্থানে আছি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ম্যাচটা জেতা। ম্যাচটা যেহেতু দিনে, আমাদের বেশ কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে। আমরা যদি আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারি, তাহলে আমাদের ভালো সুযোগ থাকবে ম্যাচটা জেতার। তবে এটাও বলব, শ্রীলঙ্কা খুবই ভালো টি-টোয়েন্টি দল। যা-ই হোক, আমরা নিজেদের খেলায় মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করছি।’
সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের নিজেদের ভুল শুধরে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রশংসা করেছেন হাথুরুসিংহে, ‘শেষ ম্যাচের কথা যদি বলি, আমরা প্রায় নিখুঁত খেলেছি। এটা দেখে ভালো লেগেছে যে ছেলেরা খুব দ্রুত এর আগের ম্যাচ থেকে শিখেছে। বোলাররা প্রথম ম্যাচে যেমন বল করেছে, তার চেয়ে ভালো করেছে পরের ম্যাচে। ব্যাটসম্যানরাও প্রথম ম্যাচে পাওয়ারপ্লের ভুল শুধরে নিয়েছে পরের ম্যাচে।’
বছরটা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের হওয়ায় হাথুরুসিংহেকে শুধু শ্রীলঙ্কা সিরিজ নিয়ে ভাবতে হচ্ছে না। তাঁকে তাকাতে হচ্ছে আগামী জুনে যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে হতে যাওয়া বিশ্বকাপ নিয়েও। শ্রীলঙ্কা সিরিজ থেকেই শুরু হলো তাঁর বিশ্বকাপের জন্য সঠিক সমন্বয় খোঁজা, ‘আমরা বিশ্বকাপের জন্য সমন্বয় খুঁজছি। সেই সমন্বয়ে কে কেমনভাবে জায়গা করে নেয় এবং সেখানে কে কতটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে, সেটাও দেখছি।’
যুক্তরাষ্ট্রে উইকেট কেমন থাকবে এ নিয়ে অবশ্য পরিষ্কার কোনো ধারণা নেই। হাথুরুসিংহে যদিও তাঁর অস্ট্রেলীয় যোগাযোগ কাজে লাগিয়ে কিছুটা তথ্য বের করার চেষ্টা করেছেন, ‘আমরা ভালো উইকেটে খেলতে চাই। আমি জানি না আমরা যুক্তরাষ্ট্রে কেমন উইকেট পাব। আমাদের যুক্তরাষ্ট্রে দুটি ম্যাচ আছে, খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুটি ম্যাচ। কারও কোনো ধারণা নেই, সেখানে উইকেট কেমন হবে। সেখানকার কোনো পরিসংখ্যান নেই। আমি জেনেছি, সেখানে ড্রপ ইন উইকেট থাকবে। অ্যাডিলেডে প্রস্তুত করে যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়া হবে। আশা করছি, অস্ট্রেলীয় উইকেট যেমন হয়, তেমনই হবে।’
গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হওয়া মেজর লিগ ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার মালিকানাধীন দুটি দল খেলেছে। এর মধ্যে একটি হাথুরুসিংহের সাবেক কর্মস্থল নিউ সাউথ ওয়েলসের দল ওয়াশিংটন ফ্রিডম। সেই সূত্রে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের উইকেট সম্পর্কে কিছুটা ধারণা নিয়ে রেখেছেন, ‘ডালাস, সেখানে কেমন হতে পারে, তা নিয়ে কিছুটা প্রতিক্রিয়া পেয়েছি নিউ সাউথ ওয়েলস থেকে। কারণ, সেখানে তাদের দ্য ওয়াশিংটন ফ্রিডম দলটা মেজর লিগে খেলে। আমি যখন অস্ট্রেলিয়া ছিলাম, তখন ওদের জেনারেল ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা এসব অচেনা চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখেই প্রস্তুতি নিচ্ছি যতটা সম্ভব। এরপর আমাদের ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেন্ট ভিনসেন্টেও খেলা আছে। যতটা মনে পড়ে সেখানে আমরা টেস্ট খেলেছিলাম। আমরা যতটা সম্ভব প্রস্তুতি নেওয়ার চেষ্টা করছি।’