ফল সৃষ্টিকর্তার হাতে, রিজওয়ান লড়তে পেরেই খুশি
পাকিস্তানের ইনিংস শেষে কি মনে হয়েছিল? রান অনেক কম হয়েছে। হারিস রউফ–শাহিন আফ্রিদিরা হয়তো লড়াইটাও করতে পারবেন না। কিন্তু ম্যাচ শেষে কি বোঝা গেল? রান অনেক কম হয়নি, আর কিছু রান হলেই হয়তো হয়ে যেত!
এই যে আর কিছু রান না হওয়ার আক্ষেপ—পাকিস্তানের সমর্থকদের মনে তা হয়তো অনুরণন তুলেছে। কিন্তু পাকিস্তান অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ানের কাছ থেকে এমন কিছু শোনা গেল না। মেলবোর্নে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে আজ ২ উইকেটে হারের পর রিজওয়ান বলেছেন, ভাগ্য অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে থাকায় তাঁরা জিতেছে।
ভাগ্যের প্রসঙ্গ কেন আসছে, তা বোঝাতে ম্যাচের পরিস্থিতি একটু বলতে হয়। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৬.৪ ওভারে ২০৩ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। তাড়া করতে নেমে ৩ উইকেটে ১১৩ রান তোলার পর ৭২ রানের মধ্যে আরও ৫ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। পাকিস্তান এ সময়ে কীভাবে ম্যাচে ফিরেছে তা–ও বলতে হবে।
১৯.৪ ওভার থেকে ২০.২ ওভারের মধ্যে ৫ বলের ব্যবধানে ০ রানে ৩ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। ৩ উইকেটে ১৩৯ থেকে ৬ উইকেটে ১৩৯ রানে পরিণত হয় অস্ট্রেলিয়ার স্কোর।
তখন শাহিন আফ্রিদি বিপজ্জনক জস ইংলিসকে ১৯.৪ ওভারে ফিরিয়ে দেওয়ার পর ২০.১ ও ২০.২ ওভারে মারনাস লাবুশেন ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে আউট করেন রউফ। অস্ট্রেলিয়া এরপর বিপদে পড়েছে আরও একবার। ২৯.৪ ওভারে শন অ্যাবোট রান আউট হওয়ার সময় অস্ট্রেলিয়ার স্কোর দাঁড়ায় ৮ উইকেটে ১৮৩। হাতে ২ উইকেটে রেখে ১২২ বলে ১৯ রান দরকার ছিল অস্ট্রেলিয়ার। আর পাকিস্তানের জয়ের জন্য দরকার ছিল মাত্র দুটি উইকেট নেওয়া ডেলিভারি। রউফরা সেটি যেমন পারেননি, তেমনি অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের অপরাজিত ৩১ বলে ৩২ রানের ইনিংসে শেষ পর্যন্ত জিতেছে অস্ট্রেলিয়াই।
হারের পর সম্প্রচারক চ্যানেলের সঙ্গে আলাপচারিতায় পাকিস্তান অধিনায়ক রিজওয়ান বলেন, ‘পরিস্থিতি যেমনই হোক, আমরা সাহস দেখিয়ে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এমন ম্যাচে আসলে নিশ্চিত করে কিছু বলা যায় না। এমন ম্যাচ কোন দিকে যাবে সেটাও বোঝা কঠিন। ফল তো সৃষ্টিকর্তার হাতে, তবে লড়াই করতে পেরে আমি খুশি।’
মেলবোর্নে পাকিস্তানের প্রতি সমর্থন ও বোলারদের প্রশংসা করে রিজওয়ান যোগ করেন, ‘আমরা (মেলবোর্নে) সব সময়ই পাকিস্তানের অনেক সমর্থন দেখেছি। হারিস রউফ খুব ভালো বোলিং করেছে। আমরা পঞ্চম কিংবা ষষ্ঠ বোলার পর্যন্ত যেতে চাইনি। চার সিমারকেই ব্যবহারের চেষ্টা করেছি। ভাগ্য অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ছিল এবং সে জন্যই তারা জিতেছে।’
চার পেসার ব্যবহার করেছে পাকিস্তান। ৬৭ রানে ৩ উইকেট নেন রউফ। অস্ট্রেলিয়ার জায়গা থেকে এই জয়টা স্বস্তির এবং ৯৯ বল হাতে রেখে তুলে নেওয়া জয়টা একটি তালিকায়ও জায়গা করে নিয়েছে। ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি বল হাতে রেখে ন্যূনতম ২ উইকেটে জয়ের তালিকায় এটি চতুর্থ সর্বোচ্চ। সর্বোচ্চ ১৬১ বল হাতে রেখে নিউজিল্যান্ড ১ উইকেটে জিতেছিল ২০১৫ বিশ্বকাপে। প্রতিপক্ষ? এই অস্ট্রেলিয়াই!
আরও একটি বিষয়, এই ম্যাচে দুই দল মিলে তুলেছে মোট ৪০৭ রান। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ওয়ানডেতে ফিফটিহীন দুই দলের মোট সর্বোচ্চ রানের ম্যাচে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ। ১৯৯৯ সালে সিডনিতে অস্ট্রেলিয়া–ইংল্যান্ড ওয়ানডেতে দুই দল মিলে তুলেছিল সর্বোচ্চ ৪২১। সে ম্যাচে দুই দলের কেউ ফিফটি পাননি।