আজ সকালেও জয়ের ‘শতভাগ সুযোগ’ দেখেছিল আইরিশরা
গতকাল আয়ারল্যান্ডের জয়ের স্বপ্নের কথা শুনিয়েছিলেন লোরকান টাকার। অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বলবার্নি বললেন, আজ সকালেও জয়ের শতভাগ সুযোগ দেখেছিলেন তাঁরা। সব চাপ বাংলাদেশের ওপরই ছিল বলেও মনে করেন বলবার্নি।
১৩১ রানে এগিয়ে থেকে চতুর্থ দিন শুরু করেছিল আয়ারল্যান্ড। তবে ৯ ওভার ব্যাটিং করলেও গতকালের সঙ্গে আর ৬ রান যোগ করতেই শেষ ২ উইকেট হারায় তারা। ৭১ রানে অপরাজিত অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন ছিলেন, আয়ারল্যান্ডও বড় লিডের আশা করেছিল বলেই জানালেন বলবার্নি, ‘শতভাগ (জয়ের সুযোগের ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলাম)! উইকেট বেশ ভালো ছিল। (তবে) ইবাদত ভালো বোলিং করেছে, স্টাম্প তাক করেছে। তবে আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম ১৮০ রানের লিড পাব।’
প্রায় চার বছর পর টেস্ট খেলতে নামা আয়ারল্যান্ড নির্ভারই ছিল, মনে করেন তাদের অধিনায়ক, ‘আমাদের বার্তা ছিল, সব চাপ বাংলাদেশের ওপরই। তারা যদি হারত, তাহলে তো সংবাদ সম্মেলন কক্ষে আরও অনেক মানুষ থাকত। ১৩০ রান তাড়ায় যদি বিনা উইকেটেও ১০০ রান থাকত, তবুও চাপ তাদের ওপরই থাকত। কেউ প্রত্যাশা করেনি আয়ারল্যান্ড এখানে এসে টেস্ট জিতবে।’
শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকে ১৩৮ রানের বেশি লক্ষ্য দিতে পারেনি আয়ারল্যান্ড। এরপরও তাদের যে আশা ছিল, সেটি লিটন দাসের ব্যাটিংয়েই শেষ বলেও মনে করেন তিনি, ‘লিটন যেভাবে খেলেছে, তাতেই মোমেন্টাম চলে গেছে আমাদের থেকে। তবে আমরা অটল থেকেছি, সুযোগ তৈরি করেছি, হয়নি।’
দ্বিতীয় দিনই পরাজয়ের শঙ্কায় পড়ে যাওয়া দলটি শেষ পর্যন্ত জয়ের সম্ভাবনা তৈরির কথা বলতে পারছে, নিশ্চিতভাবেই আইরিশদের অনেক বড় অর্জন সেটি। বলবার্নিও বলছেন সেটিই, ‘দ্বিতীয় দিন তো আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল, গতকাল হয়তো অনেকেই আমাদের হিসাব থেকে বাদ দিয়েছিল। তবে গতকাল আয়ারল্যান্ডের সেরা একটি দিন ছিল—চারিত্রিক দৃঢ়তা, নিবেদন আর স্কিলে। উইকেট আজও ভালো ছিল। ১৭০-১৮০ রানের লিড হলে কেই-বা বলতে পারে কী হতো!’
বাংলাদেশ থেকে সরাসরি শ্রীলঙ্কা যাবে আয়ারল্যান্ড। বাংলাদেশ থেকে পাওয়া শিক্ষা সেখানে ১৬ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া দুই টেস্ট সিরিজে কাজে লাগবে বলে আশাবাদী আয়ারল্যান্ডকে প্রথমবার টেস্টে নেতৃত্ব দেওয়া বলবার্নি, ‘প্রথম ইনিংসই সবচেয়ে বড়। এমন কন্ডিশনে প্রথম ইনিংসে সুযোগ কাজে লাগাতে হবে বড় স্কোর গড়তে, যাতে আপনি ম্যাচের শুরুটা ভালো পান। দ্বিতীয় ইনিংসের মতো হয়তো অমন করে দেখাতে পারিনি প্রথম ইনিংসে, তবে টেস্টের কথা বাদ দিন, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটই সেভাবে খেলিনি। ফলে আমাদের দ্রুত শিখতে হবে। উইকেটের দাম বুঝতে হবে। প্রথম ইনিংসে মুশির (মুশফিক) মতো সেঞ্চুরি করতে হবে।’
শেষ পর্যন্ত স্বপ্নের জয় না পেলেও মিরপুর টেস্ট দারুণ উপভোগ করেছেন বলবার্নিরা, ‘শ্রীলঙ্কায় তো এর চেয়ে সহজ হবে না, তবে এ কারণেই এর নাম টেস্ট ক্রিকেট। চার দিনের প্রতিটি মিনিট উপভোগ করেছি, আমার মনে হয়, বাকি সবাইও তাই করেছে। চার দিনে আমরা দেখিয়েছি আমাদের ভালো কিছু ক্রিকেটার আছে। তাদের যদি আরও লাল বলে খেলার সুযোগ দিই, প্রথম শ্রেণিতে খেলে, তাহলে আমরা ভালো একটা টেস্ট দল হতে পারব, কিছু জয় পাব।’