বাংলাদেশের কাছে ইংল্যান্ডের ধবলধোলাই প্রসঙ্গে ভারতকে খোঁচা ভনের
যেকোনো কিছু নিয়ে টুইট করাটা প্রায় অভ্যাসের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইকেল ভন। সেই টুইট যে সব সময় নিরীহ, তা বলা যায় না। নিজের মত প্রকাশ করতে গিয়ে অনেক সময় অন্যদের খোঁচা দিয়ে ফেলেন সাবেক এই ওপেনার। তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে ইংল্যান্ড টি–টোয়েন্টি সিরিজে ধবলধোলাই হওয়ার পর আশ্চর্যজনকভাবে নীরবতা পালন করে আসছিলেন ভন। শেষ পর্যন্ত পারেননি। টুইটারে অনুসারীর চাপে মন্তব্য করে তাঁর মধ্যেই ভারতকে খোঁচা দিয়েছেন।
গত মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সিরিজের শেষ টি–টোয়েন্টি ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ১৬ রানে হারিয়ে ৩–০ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। টি–টোয়েন্টিতে দুর্বল বাংলাদেশের সঙ্গে একটি ম্যাচও জিততে না পারা ইংল্যান্ড এ সংস্করণে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। মাত্র তিন মাস আগেই অস্ট্রেলিয়ায় দাপট দেখিয়ে জিতেছে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এমন একটা দলের বাংলাদেশের কাছে ধবলধোলাই হওয়া স্বাভাবিকভাবেই ক্রিকেটপ্রেমীদের অবাক করেছে। ধবলধোলাই নিশ্চিত হওয়ার পরই টুইটারে খোঁচাখুঁচি আর ট্রল করে আলোচিত ভারতের সাবেক ওপেনার ওয়াসিম জাফর ভনকে ট্যাগ করে লেখেন, ‘অনেক দিন দেখা হয় না’। বাংলাদেশের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের উড়ে যাওয়া নিয়ে ভনকে উত্ত্যক্ত করতেই মূলত ওয়াসিম জাফর সেই টুইটটি করেছিলেন। জাফরের সেই টুইটের নিচে প্রচুর মন্তব্য এসেছিল। কিন্তু ভন ইংল্যান্ডের ধবলধোলাই হওয়া নিয়ে টুইটে আওয়াজ দিয়েছেন এক দিন পর। এক মন্তব্যকারীর মন্তব্যের জবাব দিয়েছেন তিনি।
কিছুদিন আগে আহমেদাবাদে বিরাট কোহলির ৭৮তম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি নিয়ে ভন টুইট করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘টেস্টে কোহলিকে সেঞ্চুরিতে ফিরতে দেখতে ভালো লাগছে। তাঁর ব্যাটিং দেখতে খুব ভালো লাগে। তাঁর শেষ সেঞ্চুরিটি এসেছিল ৩ বছর আগে। আমি মনে করি, সে আরও সেঞ্চুরি করবে।’
এই টুইটের নিচে এক টুইটার ব্যবহারকারী ভনকে বাংলাদেশের কাছে ইংল্যান্ডের ৩–০ ব্যবধানে সিরিজ হার নিয়ে টুইট করতে অনুরোধ করেন। সেই অনুরোধের জবাবে ভন লেখেন, ‘হ্যাঁ তারা হেরেছে (ইংল্যান্ড)। কিন্তু তারপরও ইংল্যান্ড বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। বিশ্বকাপ জেতার ব্যাপারে তারা এখনো খুব ভালো অবস্থানে আছে। এটা ভালো ব্যাপার। ভারতের উচিত ইংল্যান্ডকে অনুসরণ করা।’
ভন এই টুইট দিয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ভারতের বিশ্বকাপ জিততে না পারার বেদনায় আঘাত করেছেন। ২০১১ সালে নিজেদের মাটিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতার পর আইসিসির টুর্নামেন্টগুলোতে খরা চলছে ভারতের। এরপর ফেবারিট থাকা সত্ত্বেও ২০১২, ২০১৪ ও ২০১৬ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিততে পারেনি ভারত। জিততে পারেনি ২০১৫ ও ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে হেরেছিল ভারত।
ইংল্যান্ডের অবস্থাও আগে তেমনই ছিল। নিজেদের মাটিতে প্রথম তিনটি ওয়ানডে বিশ্বকাপ হলেও একটিতেও শিরোপা জিততে পারেনি তারা। এরপর ১৯৮৭ ও ১৯৯২ সালে পরপর দুইবার ফাইনালে গিয়েও ইংলিশরা ছিল শিরোপাবঞ্চিত। এরপর বিশ্বকাপ জয়ের হিসাবের বাইরেই ছিল ক্রিকেটের জনকেরা। ২০০৭ সালে প্রথম টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ভারত জেতে। ২০০৯ সালে জেতে পাকিস্তান। ইংল্যান্ড প্রথমবারের মতো ২০১০ সালে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়ে জয় করে প্রথম বৈশ্বিক শিরোপা। ২০১৬ সালের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারলেও ২০১৯ প্রথমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয় করে তারা। তারই ধারাবাহিকতায় ইংল্যান্ড ২০২২ সালে দ্বিতীয়বারের মতো জয় করে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এ মুহূর্তে ক্রিকেটের যেকোনো বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় ইংল্যান্ডকে টপ ফেবারিট দল হিসেবেই ধরা হয়।