অশ্বিন যেখানে দ্বিতীয় দ্রুততম, ভারত–অস্ট্রেলিয়া সিরিজে হতে পারে আরও যেসব রেকর্ড
বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফির প্রথম টেস্ট আজ শুরু হয়েছে নাগপুরে। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে চাপের মুখে পড়ে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১৭৭ রানে অলআউট হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। রবীন্দ্র জাদেজা অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট তুলে নেওয়ার পথে দুর্দান্ত ‘স্ট্রেট ডেলিভারি’তে বোল্ড করেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটিংয়ের স্তম্ভ স্টিভেন স্মিথকে।
৩৭ রানে আউট হওয়া স্মিথ টেস্টে দ্রুততম ৯ হাজার রানের রেকর্ড গড়ার পথে আরেকটু এগিয়ে গেলেন। তেমনি জাদেজাও টেস্টে ২৫০ উইকেটের মাইলফলক ছোঁয়ার পথে এগিয়েছেন আরেকটু পথ। তবে রবিচন্দ্রন অশ্বিন আজ অ্যালেক্স ক্যারিকে বোল্ড করে টেস্টে ৪৫০তম উইকেটের দেখা পেয়েছেন। ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে চলতি বোর্ডার–গাভাস্কার টেস্ট সিরিজে এমন আরও কিছু রেকর্ড ও মাইলফলক হতে পারে। আসুন সেসব জেনে নিই—
বিরাট কোহলি
ক্রিকেটের তিন সংস্করণ মিলিয়ে ২৫ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁতে আর ৬৪ রান চাই বিরাট কোহলির। নাগপুর টেস্টেই মাইলফলকটির দেখা পেতে পারেন ভারতীয় তারকা। সেটি হয়ে গেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিন সংস্করণ মিলিয়ে ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে ২৫ হাজারি ক্লাবের সদস্য হবেন কোহলি। ৪৯১ ম্যাচে কোহলির রান আপাতত ২৪৯৩৬। ভারত থেকে এর আগে শুধু একজন ব্যাটসম্যানই ২৫ হাজারি ক্লাবের দেখা পেয়েছেন। শুধু ২৫ হাজারি কেন, বলা ভালো ৩৪ হাজারি ক্লাবের দেখা পেয়েছেন। ঠিকই ধরেছেন, সে ব্যাটসম্যানের নাম শচীন টেন্ডুলকার। ৬৬৪ ম্যাচে টেন্ডুলকারের রানসংখ্যা ৩৪৩৫৭। কোহলি ও টেন্ডুলকারের মাঝে যে চারজন আছেন—কুমার সাঙ্গাকারা (২৮০১৬), রিকি পন্টিং (২৭৪৮৩), মাহেলা জয়াবর্ধনে (২৫৯৫৭) ও জ্যাক ক্যালিস (২৫৫৩৪)।
স্টিভেন স্মিথ
টেস্টে দ্রুততম ৭ হাজার ও ৮ হাজার রানের রেকর্ড স্টিভেন স্মিথের। এখন দ্রুততম ৯ হাজার রানের রেকর্ডও ডাকছে তাঁকে। নাগপুর টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৩৭ রানে আউট হওয়ার পর ৯৩ টেস্টে ১৬৩ ইনিংসে স্মিথের মোট রানসংখ্যা দাঁড়াল ৮৬৮৪। অর্থাৎ ৯ হাজারি ক্লাবে ঢুকতে আর ৩১৬ রান চাই অস্ট্রেলিয়ান তারকার। টেস্টে দ্রুততম ৯ হাজার রানের রেকর্ড শ্রীলঙ্কার কুমার সাঙ্গাকারার। ১০৩ ম্যাচে ১৭২তম ইনিংসে রেকর্ডটি গড়েছিলেন সাঙ্গাকারা। বোর্ডার–গাভাস্কার সিরিজেই তাই সাঙ্গাকারার রেকর্ডটি ভাঙার সুযোগ পাচ্ছেন স্মিথ। স্রেফ দুটি ভালো ইনিংসেই রেকর্ডের এই পাতা ওলট–পালট হয়ে যেতে পারে।
রবিচন্দ্রন অশ্বিন
৪৪৯ উইকেট নিয়ে নাগপুর টেস্টে খেলতে নেমেছিলেন অশ্বিন। তাঁকে রির্ভাস সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হন ক্যারি। তাতেই ম্যাচের হিসেবে মুত্তিয়া মুরালিধরনের পর দ্বিতীয় দ্রুততম বোলার হিসেবে টেস্টে ৪৫০তম উইকেটের মাইলফলকের দেখা পেলেন তিনি। লঙ্কান কিংবদন্তি ক্যারিয়ারের ৮০তম টেস্টে ৪৫০তম উইকেট পেয়েছিলেন। অশ্বিন একই মাইলফলকের দেখা পেলেন নিজের ৮৯তম টেস্টে। অনিল কুম্বলের পর ভারতের দ্বিতীয় বোলার হিসেবেও টেস্টে এই মাইলফলকের (৪৫০) দেখা পেলেন অশ্বিন।
নাথান লায়ন
অস্ট্রেলিয়া বোলিংয়ে নামার পর ক্ষণগণনা শুরু হবে নাথান লায়নকে নিয়ে। নাগপুরের স্পিনবান্ধব উইকেটে লায়ন যত বেশি সম্ভব উইকেট নেওয়ার চেষ্টা করবেন। তাতে মুরালিধরনের পর দ্বিতীয় বোলার হিসেবে টেস্টে ভারতের বিপক্ষে ১০০ উইকেট নেওয়ার মাইলফলকের দেখা পেয়ে যেতে পারেন এই অফ স্পিনার। সে মাইলফলকের দেখা পেতে আর ৬ উইকেট প্রয়োজন লায়নের। ভারতের বিপক্ষে ৯৪ উইকেট নিতে লায়ন খেলেছেন ২২ টেস্ট। চার টেস্টের এই বোর্ডার–গাভাস্কার সিরিজে আরেকটি রেকর্ডও হাতছানি দিয়ে ডাকছে তাঁকে। এ সিরিজে সর্বোচ্চ ১১১ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড ভারতের কিংবদন্তি কুম্বলের। তাঁকে পেছনে ফেলে রেকর্ডটি নিজের করে নিতে আর ১৮ উইকেট চাই লায়নের।
চেতেশ্বর পূজারা
টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০০০ রান খুব বেশি ভারতীয় ব্যাটসম্যানের নেই। এর আগে মাত্র তিনজন এই মাইলফলকের দেখা পেয়েছেন—টেন্ডুলকার (৩৯ ম্যাচে ৩৬৩০ রান), ভিভিএস লক্ষ্মণ (২৯ ম্যাচে ২৪৩৪ রান) ও রাহুল দ্রাবিড় (৩২ ম্যাচে ২১৪৩ রান)। এবারের বোর্ডার–গাভাস্কার সিরিজেই চেতেশ্বর পূজারা এই তালিকায় নাম লেখাতে পারেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২১ টেস্টে ১৮৯৩ রান তাঁর।
রবীন্দ্র জাদেজা
২৪২ উইকেট নিয়ে নাগপুর টেস্টে খেলতে নেমেছিলেন ভারতের রবীন্দ্র জাদেজা। অস্ট্রেলিয়াকে তাদের প্রথম ইনিংসে দুই শ রানের কমে অলআউট করার নেপথ্যে এ বাঁহাতি স্পিনারের ভূমিকাই বেশি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার দিনে ৪৭ রানে ৫ উইকেট নেন বাঁহাতি এ স্পিনার। আর মাত্র ৩ উইকেট পেলেই টেস্টে ভারতের অষ্টম বোলার হিসেবে আড়াই শ উইকেটের মাইলফলকের দেখা পাবেন এই স্পিন অলরাউন্ডার। ভারতের বাঁহাতি স্পিনারদের মধ্যে শুধু বিষেন সিং বেদীরই তাঁর চেয়ে বেশি উইকেট (২৬৬)।