২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

যে অভিষেকটা ভুলতে চাইবেন তানজিদ

চোখে বড় স্বপ্ন নিয়েই আজ ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন তানজিদ হাসান। তবে অভিষেকে শূন্য রানে ফিরেছেন বাংলাদেশের ওপেনারবিসিবি

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক মানে একজন ক্রিকেটারের আশৈশব স্বপ্নপূরণের দিন। মনে মনে এই দিনটিকে কত রঙেই না সাজান ক্রিকেটারেরা। তানজিদ হাসানও নিশ্চয়ই এর ব্যতিক্রম নন। দারুণ ফর্মে থাকা এই বাঁহাতি ওপেনার এশিয়া কাপের দলে জায়গা পেয়েই স্বপ্নের একটা ধাপ পেরিয়ে গিয়েছিলেন। এর পরের ধাপটা তো অনুমেয়ই। অভিষেকে দারুণ কিছু করে তা স্মরণীয় করে রাখা। কিন্তু তা আর হলো কই!

বরং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক-লগ্নটা যতটা খারাপ হওয়া সম্ভব, তা-ই হলো। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আজ দুই বল খেলে কোনো রান না করেই আউট হয়ে গেলেন তানজিদ। এর আগে বাংলাদেশের ১৫ জন ব্যাটসম্যান ওয়ানডে অভিষেকে শূন্য রানে আউট হওয়ার যন্ত্রণায় পুড়েছেন। শুধু ওপেনারদের আলাদা করে নিলে তানজিদের আগে তিনজন।

আন্তর্জাতিক অভিষেক তো একবারই হয়। তবে এর আগেও তো নানা পর্যায়ে অভিষেক হয়। সেই সব অভিষেককেই কিন্তু মোটামুটি রঙিন করে রেখেছেন তানজিদ। জাতীয় দলে আসার আগে প্রত্যেকটা ধাপেই তানজিদের অভিষেক ছিল দুর্দান্ত। ওয়ানডে অভিষেক প্রসঙ্গে যেহেতু কথা হচ্ছে, ৫০ ওভারের ক্রিকেটের কথাই হোক সবার আগে।  লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে অভিষেকেই তানজিদের  হাফ সেঞ্চুরি ছিল। ২০১৯ সালের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে উত্তরা স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে খেলছিলেন শক্তিশালী শেখ জামালের বিপক্ষে। ফতুল্লা স্টেডিয়ামের সেই ম্যাচে তানজিদের ব্যাট থেকে আসে ৭৫ বলে ৬৪ রান। ২টি চার ও ৪টি ছক্কা ছিল তানজিদের ইনিংসে।

আরও পড়ুন
ম্যাচের আগে ওয়ানডে ক্যাপ মাথায় তানজিদ হাসান

একই বছর ঢাকা লিগে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয় তানজিদের। উত্তরার হয়ে খেলাঘরের বিপক্ষে নিজের অভিষেক ম্যাচটা রাঙান ৫৭ বলে ৭২ রান করে। উদ্বোধন করতে নেমে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় সাজানো খেলেন ১২৬ স্ট্রাইক রেটের ইনিংস। সেই ম্যাচে দুটি ক্যাচও নিয়েছেন, দলকে জিতিয়ে হয়েছেন ম্যাচসেরা।

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও অভিষেকে হাফ সেঞ্চুরি করার এই ধারা ধরে রেখেছিলেন তানজিদ। ২০২০ সালের বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিসিএল) তাঁর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দক্ষিণাঞ্চলের বিপক্ষে সেই ম্যাচে পূর্বাঞ্চলের হয়ে ছয়ে নেমে তানজিদ খেলেছিলেন ৮৭ বলে ৮২ রানের ইনিংস।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মঞ্চটা আরও বিশাল হলেও অভিষেকে ভালো পারফরম্যান্সের অতীত ইতিহাস নিশ্চয়ই আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছিল তানজিদকে। কিন্তু সবকিছু কি আর নিয়ম মেনে হয়! অভিষেক এবার পুরোই উল্টো এক অভিজ্ঞতা উপহার দিল তানজিদকে। যে অভিষেক নিয়ে এত স্বপ্ন দেখে এসেছেন, এখন হয়তো তা তিনি ভুলে যেতে পারলে বাঁচেন। অভিষেকের রোমাঞ্চে কাটানো রাতের পর বাংলাদেশ ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই শেষ তাঁর ইনিংস। শিকার হয়েছেন স্পিনার মহীশ তিকশানার। ক্যারম বলের লাইন না বুঝে হয়েছেন এলবিডব্লু।

আরও পড়ুন
অভিষেকে শূন্য রানে ফেরার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভালো করেছেন, বাংলাদেশের এমন কাউকে খুঁজলে এক আফতাব আহমেদকেই পাওয়া যায়।
ফাইল ছবি

এর আগে বাংলাদেশের যে ১৫ জন ব্যাটসম্যান ওয়ানডে অভিষেকে শূন্য রানে আউট হয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগই বোলার। পরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভালো করেছেন, এমন কাউকে খুঁজলে এক আফতাব আহমেদকেই পাওয়া যায়। কিছুদিন আগেও জাতীয় দলে খেলা ইয়াসির আলীও আছেন এই দলে। তানজিদের আগে যে বাংলাদেশের তিন ওপেনার ওয়ানডে অভিষেকে শূন্য রানে আউট হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে নুরুল আবেদীন মাত্র ৪টি ওয়ানডে খেলেছেন, হারুনুর রশিদ খেলেছেন ২টি। নোবেল ও লিটন নামে বেশি পরিচিত এই দুই ওপেনার দীর্ঘদিন বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে উদ্বোধনী জুটি ছিলেন। দুজনই বাংলাদেশের টেস্ট-পূর্ব সময়ের খেলোয়াড়। তানজিদের আগে শূন্য রানে আউট বাংলাদেশের তৃতীয় ওপেনার রফিকুল ইসলাম ওয়ানডে খেলেছেন ওই একটিই।

অভিষেকে শূন্য রানে আউট হওয়া বাংলাদেশের আগের তিন ওপেনারের কারও ক্যারিয়ারই বলার মতো কিছু হয়নি। তানজিদ হাসান নিশ্চয়ই ব্যতিক্রম হতে চাইবেন। সে জন্য প্রেরণারও অভাব নেই। ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি রানের মালিক শচীন টেন্ডুলকার তো জীবনের প্রথম দুই ওয়ানডেতেই শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন!

আরও পড়ুন