শাহিন আফ্রিদি, নাসিম শাহ, আমির জামাল—তিন পেসারের পাকিস্তান দল মুলতানে সিরিজের প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিল। প্রথম ইনিংসে ৫৫৬ রান করেও ম্যাচ হেরেছিল ইনিংস ব্যবধানে। এমন হারের পর পাকিস্তান দলে আবার চলে বদলের বুলডোজার। মুলতানেই দ্বিতীয় টেস্টের দল থেকে বাবর আজমের সঙ্গে বিশ্রাম দেওয়া হয় দুই পেসার আফ্রিদি ও নাসিমকে। ব্যবহৃত উইকেটে তিন স্পিনার নিয়ে দল সাজায় পাকিস্তান। সাজিদ খান ও নোমান আলীর সঙ্গে ছিলেন জাহিদ মেহমুদ।
দ্বিতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডের ২০ উইকেটের সব কটি নিয়ে পাকিস্তানকে জয় এনে দিয়েছেন সাজিদ ও নোমান। রাওয়ালপিন্ডিতে আজ শুরু সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের ১০ উইকেটের ৯টি নিয়ে ইংল্যান্ডকে ২৬৭ রানে অলআউট করতে বড় ভূমিকা রেখেছেন এ দুই স্পিনার। ইংল্যান্ডের অন্য উইকেটটিও নিয়েছেন একজন স্পিনার—জাহিদ মেহমুদ। জবাবে ৩ উইকেটে ৭৩ রান নিয়ে প্রথম দিনের খেলা শেষ করেছে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের অধিনায়ক শান মাসুদ দুই প্রান্ত থেকে দুই স্পিনারকে দিয়ে বোলিং আক্রমণ শুরু করেন। দুই প্রান্ত থেকে দুই স্পিনারের টেস্টে বোলিং শুরু করার চতুর্থ ঘটনা এটি। পাকিস্তানের মাটিতে এমন ঘটনা এটাই প্রথম। তবে উইকেট পেতে ১৪তম ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় পাকিস্তানকে। জ্যাক ক্রলিকে ফিরিয়ে ৫৬ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙেন নোমান। আরেক ওপেনার বেন ডাকেটের সঙ্গে জুটি বাঁধেন ওলি পোপ। দুজনে মিলে পাকিস্তানের স্পিনের বিপক্ষে ভালোই প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। কিন্তু পোপকে দলীয় ৭০ রানে ফিরিয়ে এবার জুটি ভাঙেন সাজিদ।
এরপর দ্রুত আরও ৪ উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ডের স্কোর হয়ে যায় ৬ উইকেটে ১১৮ রান। ইংল্যান্ডের পঞ্চম উইকেটটি পড়েছে ৯৮ রানে, বাজবল যুগে আগে ব্যাট করে এর আগে ১০০ রানের নিচে ৫ উইকেট হারায়নি ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ডের প্রথম ৬টি উইকেটই নিয়েছেন সাজিদ (৪) ও নোমান (২)। তাঁরা দুজনে টানা বল করেছেন ৪২ ওভার। মুলতানে দ্বিতীয় টেস্ট থেকে ধরলে এই জুটি টানা ৮৯.৫ ওভার বোলিং করেছেন। মুলতানে প্রথম ইনিংসের শেষ ১৪.২ ওভারের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৩.৩ ওভার এবং এখন ৪২ ওভার।
প্রথম স্পেলে পোপ, জো রুট, হ্যারি ব্রুক ও বেন স্টোকসের উইকেটের পর সাজিদ পরে এসে তুলে নিয়েছেন রেহান আহমেদ ও জ্যাক লিচকে। ৬ উইকেট নিতে তিনি খরচ করেছেন ১২৮ রান। নোমান ৩ উইকেট পেয়েছেন ৮৮ রান দিয়ে।
সাজিদ-নোমানের ‘ঘূর্ণিঝড়’-এর পর অবশ্য পাকিস্তানের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা দলকে ভালো শুরু এনে দিতে পারেনি। ব্যাটিংয়ে নেমে দশম ওভারেই উইকেট হারায় তারা। আবদুল্লাহ শফিক ফিরে যান দলের ৩৫ রানে। ৮ রান পরই আউট হয়ে ফেরেন সাইম আইয়ুব। ৪৬ রানে ফিরে গেছেন বাবরের জায়গায় দলে এসে মুলতানে নিজের অভিষেক টেস্টেই দারুণ এক সেঞ্চুরি করা কামরান গুলামও। অধিনায়ক শান মাসুদের সঙ্গে জুটি বেঁধে দিনের বাকি সময়ে আর কোনো উইকেট পড়তে না দিয়ে পার করে দেন সৌদ শাকিল। দুজনেই ১৬ রান নিয়ে উইকেটে আছেন।
এর আগে ইংল্যান্ড মূলত আড়াই শর বেশি রান করতে পারে জেমি স্মিথের সৌজন্যে। জাহিদের বলে উইকেটকিপার মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ১১৯ বলে ৫টি চার ও ৬টি ছয়ে ৮৯ রান করেছেন স্মিথ। ইংল্যান্ডের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫২ রান করেছেন ডাকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৬৮.২ ওভারে ২৬৭ (ক্রলি ২৯, ডাকেট ৫২, স্মিথ ৮৯, অ্যাটকিনসন ৩৯; সাজিদ ৬/১২৮, নোমান ৩/৮৮, জাহিদ ১/৪৪)।
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ২৩ ওভারে ৭৩/৩ (শফিক ১৪, সাইম ১৯, মাসুদ ১৬*, শাকিল ১৬ *; লিচ ১/৩৩, অ্যাটকিনসন ১/২, বশির ১/২৯)।
* ১ম দিন শেষে।