বাবরের রেকর্ডের রাতে পাকিস্তানের হার
জিতলেই সিরিজ নিশ্চিত হয়ে যেত পাকিস্তানের। বাবর আজমের ৫৯ বলে অপরাজিত ৮৭ রানের অসাধারণ এক ইনিংসে ইংল্যান্ডকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যই দিয়েছিল তারা। আগের দুই ম্যাচে এর চেয়ে কম রান করেই জিতেছিল বাবরের দল।
তবে লাহোরে ফিল সল্টের বিধ্বংসী এক ইনিংসে পাকিস্তানের ৬ উইকেটে ১৬৯ রানের স্কোরটা হয়ে গেল ‘অনেক ছোট’! ৪১ বলে ১৩ চার ও ৩ ছক্কায় অপরাজিত ৮৮ রানের ইনিংস খেলে ইংল্যান্ডকে ৮ উইকেটের জয় এনে দিয়েছেন সল্ট।
রান তাড়ায় চার মেরেই ইংল্যান্ডের ইনিংস শুরু করেন সল্ট। প্রথম ওভারেই ইংলিশরা করে ১১ রান। দ্বিতীয় ওভারে রীতিমতো রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন দুই ইংলিশ ওপেনার। শাহনেওয়াজ দাহানির এই ওভারে আসে ২২ রান।
দুই প্রান্তে রান তোলার গতি অব্যাহত রেখে ৩ ওভার শেষে দলের স্কোর ৫০ স্পর্শ করায় সল্ট-হেলস জুটি। তৃতীয় ওভারে আসে ১৭ রান। পরের ওভারে রানের গতিতে লাগাম টানার সঙ্গে ভয়ংকর হয়ে ওঠা ওপেনিং জুটিও ভাঙেন শাদাব খান।
ফেরার আগে ১২ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ২৭ রান করেন হেলস। অন্য প্রান্তে অবশ্য ব্যাটিং–ঝড় থামাননি সল্ট। নওয়াজের করা ইনিংসের পঞ্চম ওভারে ১৯ রান যোগ করে ইংল্যান্ডকে পৌঁছে দেন ৭৪ রানে। ১৯ বলে ৮ চার ও ২ ছক্কায় ২৬৩.২ স্ট্রাইক রেটে ফিফটিতে পৌঁছান সল্ট। যা টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডের তৃতীয় দ্রুততম ফিফটি।
৭ ওভারে শেষেই তিন অঙ্কে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড। ২৬ রান করে ম্যালান ফিরলেও দলকে জয়ের পথে নিয়ে যান সল্ট। শেষ পর্যন্ত দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন তিনি। সল্টের অপরাজিত ইনিংসটির স্ট্রাইক রেট ২১৪.৬৩। শেষ দিকে ঝড়ের গতি না কমালে স্ট্রাইক রেটটা আরও বেশি হতে পারত।
এর আগে অন্য প্রান্তে ঠিকঠাক সঙ্গ না পেলেও পাকিস্তানকে পথ দেখান অধিনায়ক বাবর। ইনিংসের আদ্যোপান্ত ব্যাট করে দলকে এনে দেন লড়াইয়ের পুঁজিও। এদিন দ্রুততম ৩ হাজার রানের মাইলফলক গড়ার পথ ছুঁয়েছেন বিরাট কোহলিকে। দুজনই এই কীর্তি গড়েন ৮১ ইনিংসে।
তবে সল্ট-ঝড়ে ম্লান হয়ে যায় বাবরের ৭ চার ও ৩ ছয়ে সাজানো ইনিংসটি। ৩৩ বল হাতে রেখে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ জিতে নেয় ইংল্যান্ড। এ জয়ে ৭ ম্যাচের সিরিজে ৩-৩ সমতায় ফিরেছে ইংলিশরা। রোববার সিরিজের শেষ ম্যাচটি এখন অলিখিত ফাইনাল।
জিতলেই এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ নিজেদের—এমন ম্যাচে নিয়মিত ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ফাস্ট বোলার হারিস রউফকে বিশ্রাম দেয় পাকিস্তান। রিজওয়ানের জায়গায় বাবরের সঙ্গে ওপেনিং করেন অভিষিক্ত মোহাম্মদ হারিস। ২১ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান অবশ্য ৭ রানের বেশি করতে পারেননি।
দলীয় ১৪ রানে ফেরেন রিচার্ড গ্লেসনের শিকার হয়ে। এ ধাক্কার রেশ কাটার আগেই দ্বিতীয় উইকেট হারায় পাকিস্তান। ডেভিড উইলির বলে শান মাসুদ এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন কোনো রান করার আগেই । আম্পায়ার অবশ্য উইলির আবেদনে সাড়া দেননি। পরে রিভিউ নিয়ে শান মাসুদকে ফেরায় ইংল্যান্ড। ১৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে পাকিস্তান।
হায়দার আলীকে সঙ্গে নিয়ে বিপর্যয় কাটানোর চেষ্টা করেন বাবর। তবে ধীরগতির ব্যাটিংয়ে রানের চাকা সেভাবে ঘোরাতে পারেননি এই দুজন। ৭.২ ওভারে দলীয় ৫০ পেরোয় পাকিস্তান।
৮.৪ ওভারে স্যাম কারেনের শর্ট বলের ফাঁদে হায়দার (১৮) ধরা পড়লে ভাঙে এ জুটি। ১০ ওভার শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ৭০ রান। প্রান্ত আগলে দলকে টেনে নেন বাবর। চতুর্থ উইকেটে তাঁকে সঙ্গ দেন ইফতেখার আহমেদ।
১৩.৩ ওভারে ছক্কা মেরে পাকিস্তানকে ১০০ পার করান ইফতেখার। একই ওভারে ফিফটিও পেয়ে যান বাবর। পরের ওভারে অবশ্য উইকেট হারায় পাকিস্তান। ২১ বলে ৩১ রান করা ইফতেখারকে ফিরিয়ে পাকিস্তানের চাপ বাড়ান কারেন।
১৫ ওভার শেষে পাকিস্তানের রান ছিল ৪ উইকেটে ১১৩। বাবর এক প্রান্ত আগলে রাখলেও সঙ্গীরা ছিলেন আসা–যাওয়ায় ব্যস্ত! বাবরকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি আসিফ আলীও (৯)।