ক্লাসেনদের রেকর্ডের পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার ১৬৪ রানের জয়
আহ্, এবার একটু হাঁপ ছেড়ে বাঁচা যাক! অস্ট্রেলিয়ার জন্য এই হাঁপ ছাড়ার উপলক্ষটা এসেছে ইনিংসের শেষ বলে। মার্কাস স্টয়নিসের বলে নাথান এলিস যখন হাইনরিখ ক্লাসেনের ক্যাচ নেন। কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ার তা হয়ে গেছে।
সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেতে সেঞ্চুরিয়নে অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালিয়েছেন ক্লাসেন। ১৩টি করে চার ও ছয়ে ৮৩ বলে ১৭৪ রান করে ফেলেছেন তিনি। অন্য প্রান্তে ডেভিড মিলারও আবির্ভূত হয়েছিলেন তাঁর ‘কিলার’ রূপে! ৬টি চার ও ৫টি ছয়ে ৪৫ বলে তিনি করেছেন অপরাজিত ৮২ রান।
সব মিলিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রেকর্ডময় এক ইনিংসই উপহার দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে তারা তুলেছে ৪১৬ রান। ক্লাসেনের ১৭৪ রান ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যানদের মধ্যে চতুর্থ সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। ৬ নম্বরে নেমে কপিল দেবের ১৭৫ রানের পর এটা ৫ বা এর পরে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। আর ২৫ ওভার বা এর পরে ব্যাটিংয়ে নেমে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি রানের ইনিংস ক্লাসেনের ১৭৪-ই।
পঞ্চম উইকেটে মিলারকে সঙ্গে নিয়ে মাত্র ৯৪ বলে ২২২ রানের জুটি গড়েন ক্লাসেন। এটা ওয়ানডেতে দ্রুততম ২০০ রানের জুটি। আর ৫ উইকেটে ৪১৬ রান ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার তৃতীয় সর্বোচ্চ স্কোর। প্রোটিয়াদের সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি ২০০৬ সালে জোহানেবার্গে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৯ উইকেটে ৪৩৮ রান।
আজকের ৪১৬ রানের ইনিংসটি ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার সপ্তম ৪০০ বার এর বেশি রানের ইনিংস। ওয়ানডে ক্রিকেটে এর চেয়ে বেশিবার ৪০০ বা এর চেয়ে বেশি রানের ইনিংস নেই আর কোনো দলের। এর আগে ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে রেকর্ডটি ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার (৬ বার)।
রান আর জুটির এতগুলো রেকর্ড যখন হয়েছে, বোলিংয়ে ভুলে যাওয়ার মতো রেকর্ড হওয়াও স্বাভাবিক। সেটা হয়েছে অ্যাডাম জাম্পার। ওয়ানডেতে সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ডে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক বোলার মাইকেল লুইসের পাশে নাম লিখিয়েছেন তিনি।
১০ ওভার বোলিং করে ১১৩ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি জাম্পা। এর আগে ২০০৬ সালে জোহানেসবার্গে এই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেই ১০ ওভারে ১১৩ রান দিয়েছিলেন লুইস। জাম্পার মতো তিনিও সেই ম্যাচে কোনো উইকেট পাননি।
অথচ আজ ইনিংসের শুরুতে এমন ঝড়ের আভাস খুব একটা পাওয়া যায়নি। ১২.৫ ওভারে প্রথম উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই সময় তাদের রান ছিল ৬৪। দ্বিতীয় উইকেট হারায় তারা ২০.১ ওভারে ৯৫ রানে। তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে এইডেন মার্করাম আউট হয়েছেন দলের ১২০ রানে, ২৫.১ ওভারে।
এরপরই উইকেটে আসেন ক্লাসেন। তিনি উইকেটে আসার পর রেসি ফন ডার ডুসেন আউট হয়ে ফেরেন ৩৪.৪ ওভারে। দক্ষিণ আফ্রিকার রান তখন ১৯৪। প্রোটিয়ারা এর পরের উইকেট হারায় ইনিংসের শেষ বলে, আউট হয়েছেন ক্লাসেন নিজেই। এর আগে শেষ ১০ ওভারে ১৭৩ রান তুলেছেন ক্লাসেন ও মিলার।
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে খুব বেশি কিছু করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। ৩৪,৫ ওভারে তারা অলআউট হয়েছে ২৫২ রানে। ম্যাচ হেরেছে ১৬৪ রানে। ৫১ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন লুঙ্গি এনগিডি আর ৪১ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন কাগিসো রাবাদা।