‘অ্যাশেজ’ থেকে জেগে ওঠা ব্রডের পানশালা
ক্রিকেটে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্পের অভাব নেই। ২০১৯ হেডিংলি টেস্টে হারের মুখ থেকে ইংল্যান্ডকে যেমন অবিস্মরণীয় জয় এনে দিয়েছিলেন বেন স্টোকস, কিংবা ১৯৮১ সালের সিরিজে অস্ট্রেলিয়াকে যেমন একাই হারিয়ে দিয়েছিলেন ইয়ান বোথাম। যুগে যুগে ‘অ্যাশেজ’ সিরিজ এভাবেই লিখেছে ছাইভস্ম থেকে নতুন করে জেগে ওঠার কত গল্প!
ঘুরে দাঁড়ানোর তেমন একটা গল্প আছে স্টুয়ার্ট ব্রডেরও। বাইবেলের ‘ল্যাজারাস অব বেথানি’র সেই কিংবদন্তির মতো। মহামতি যিশু ল্যাজারাসকে যেভাবে পুনর্জন্ম দিয়েছিলেন, তেমনই এক পুনর্জন্মের সাক্ষী হবেন ব্রুড। তবে সেটি মাঠের বাইরে।
ইংল্যান্ডের লেস্টারশায়ারের মেলটন মোব্রেতে ব্রডের একটি পানশালা আছে। আগামী সপ্তাহে এই পানশালা নতুন করে যাত্রা শুরু করবে। নতুন করে যাত্রা শুরু? একটু খোলাসা করে বলা প্রয়োজন। এই পানশালা গত বছর ১১ জুন আগুনে ভস্মীভূত হয়েছিল। লন্ড্রির একটি ড্রায়ার থেকে আগুনটা লেগেছিল। ইংল্যান্ডের সাবেক পেসার হ্যারি গার্নের সঙ্গে পানশালাটির যৌথ মালিক ছিলেন ব্রড। আগুন লেগে দোকান ছাইভস্ম হওয়ার পর ব্রডের হৃদয়টাই ভেঙে গিয়েছিল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য টাইমস’কে সেই ঘটনা জানিয়েছেন হ্যারি গার্নে। পানশালা আগুনে জ্বলছে, গার্নে এ খবর পেয়েছিলেন ফোনে। তারপর অনেক রাতই নির্ঘুম কেটেছে গার্নের। তাঁর ভাষায়, সেই ‘দুঃস্বপ্ন বারবার ফিরে এসেছে।’ গার্নের মুখেই শুনুন, ‘বেশ কয়েক বছর আমি রাতে ঘুম থেকে উঠে সিসিটিভি চেক করতাম। দেখতাম নিরাপত্তাব্যবস্থা ভেঙে কেউ ঢুকেছে কি না, কিংবা আগুন লেগেছে কি না।’ পানশালায় আগুন লাগার সেই ঘটনা নিয়ে গার্নে বলেছেন, ‘রাত ৩টা ৩০ মিনিটের দিকে ফোন পাই। গিয়ে দেখি পানশালায় নরকের মতো আগুন জ্বলছে। কিছু চেয়ার-টেবিল বাদে প্রায় সব ভস্মীভূত হয়েছিল।’
সেই দুর্ঘটনার পর পানশালাটিকে নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। খরচ হয়েছে প্রায় ১৩ লাখ পাউন্ড। সাড়ে ৩ লাখ পাউন্ড ব্যয়ে বানানো হয়েছে নতুন রান্নাঘর। আগুন লেগে ভস্মীভূত হওয়ার আগে ‘ট্যাপ অ্যান্ড রান’ নামের পানশালাটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।
আগুন লাগার কিছুদিন আগেই লেস্টারশায়ারে ‘বছরের সেরা পানশালা’র পুরস্কার পেয়েছিল ট্যাপ অ্যান্ড রান। প্রায় এক বছর অপেক্ষার পর এখন তা খুলে দেওয়া হবে। গার্নে এ নিয়ে বললেন, ‘আগুন লাগার কারণে এটা বন্ধ করে দেওয়াটা হতো হতাশার। এটার কারণেই আমরা উন্নতির অপ্রত্যাশিত সুযোগটা পেয়েছিলাম এবং ক্রেতারা এতে (পুনরায় খোলায়) খুশি হবেন।’
গার্নে জানিয়েছেন, পানশালাটি নতুন করে চালু করা নিয়ে এরই মধ্যে লোকজনের আগ্রহ বেড়েছে। অনেকেই ভিড় জমাচ্ছেন। যেহেতু লোকজন ভিড় করছেন, তাই বুকিংয়ের ব্যবস্থাটা যথাযথ রাখতে চান গার্নে, ‘এই পানশালায় আগে যাঁরা আসতেন, সুনাম করতেন, আমরা সেসব হারাতে চাই না।’ ইংল্যান্ডের পেসার ব্রডও পানশালার নতুন যাত্রা নিয়ে আশাবাদী, ‘পানশালাটি খুব ভালো করছিল; কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এটি বন্ধ করতে হয়েছিল। আমরা এখন এটা পুনরায় চালু করার প্রহর গুনছি। সবাইকে উন্নতমানের সেবা দিতে চাই।’