বিপিএল
কম বাজেটেও বড় আশা দুর্দান্ত ঢাকার
বিনোদনের ক্রিকেট টি–টোয়েন্টি, গ্যালারি ভরে বেশি এই খেলাতেই। আর বাংলাদেশের ঘরোয়া টি–টোয়েন্টি বলতে আছে বিপিএল–ই, ক্রিকেটার–দর্শক–সমর্থকদের অপেক্ষা থাকে এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের। টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বছর বলে এবার সেটি আরও বেশি। ১৯ জানুয়ারি শুরু হতে যাওয়া বিপিএলের ১০ম আসর সামনে রেখে প্রতিদ্বন্দ্বী সাত দলকে পরিচয় করিয়ে দিতেই এই আয়োজন। আজ প্রথম পর্বে বিপিএলের নতুন দল দুর্দান্ত ঢাকা—
বিপিএলের ‘ঢাকা’ যেন সদা পরিবর্তনশীল এক দল। ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস, ঢাকা ডাইনামাইটস, ঢাকা প্লাটুন, ঢাকা ডমিনেটরস—গত ৯টি আসরে চার ফ্র্যাঞ্চাইজির পরিচয়ে পরিচিত হয়েছে ঢাকা। এবার দশম আসরেও আছে নতুনত্ব। নিউটেক্স গ্রুপের মালিকানায় ঢাকা ফ্র্যাঞ্চাইজি এবার খেলবে ‘দুর্দান্ত ঢাকা’ নামে।
খেলোয়াড় তালিকায় চোখ রাখলেই বোঝা যায়, অপেক্ষাকৃত কম বাজেটের দলটি মূলত স্থানীয় ক্রিকেটারনির্ভর। তারকাখ্যাতির দিক দিয়ে তাসকিন আহমেদ আর শরীফুল ইসলামই দুর্দান্ত ঢাকার সবচেয়ে আলোকিত নাম। আছেন ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত পারফরমার জাতীয় দলের আরও দুই ক্রিকেটার মোসাদ্দেক হোসেন ও মোহাম্মদ নাঈম শেখও।
বিপিএলের অন্য দলগুলোর মতো বড় বিদেশি তারকাও খুঁজে পাওয়া যাবে না ঢাকায়। প্রথম বিদেশি ক্রিকেটার হিসেবে তারা চুক্তি করেছে কদিন আগেই পাকিস্তানের হয়ে টেস্ট অভিষেক হওয়া সাইম আইয়ুবের সঙ্গে। পিএসএল শুরু হলে বিপিএলের মাঝপথে তাঁকে দেশে ফিরতে হবে। উসমান কাদিরও বিপিএলের মাঝপথে যোগ দেবেন পিএসএলে। চতুরাঙ্গা ডি সিলভা, লাসিথ ক্রুসপুল্লে, দানুস্কা গুনাতিলকার মতো কয়েকজন শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটারও আছেন বিপিএলে নবাগত এই ফ্র্যাঞ্চাইজিতে। তবে সবচেয়ে বড় নাম অবশ্য ছন্দে থাকা লঙ্কান মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান সাদিরা সামারাবিক্রমা।
টুর্নামেন্টে ঢাকার ভাগ্য হয়তো শেষ পর্যন্ত স্থানীয় ক্রিকেটাররাই নির্ধারণ করে দেবেন। উদ্বোধনী জুটিতে দেখা যেতে পারে নাঈম ও সাইফ হাসানকে। ইরফান শুক্কুর, সাব্বির হোসেনের মতো ঘরোয়া ক্রিকেটের সফল ব্যাটসম্যানরা আছেন। তবে ঢাকার ব্যাটিংটা মূলত নির্ভর করবে মোসাদ্দেকের ওপর। বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে তরুণ বাঁহাতি মেহরব হাসান একাদশে ভারসাম্য গড়ে দেবেন। তবে ব্যাটিং অর্ডারে দ্রুত রান তোলার মতো কোনো স্থানীয় কেউ নেই। সে কাজটা করতে হবে বিদেশিদেরই।
ভালো কিছু করতে হলে বোলারদেরই দারুণ কিছু করতে হবে। জাতীয় দলের দুই পেসার তাসকিন আর শরীফুলের ৮ ওভার হিসাব করে ব্যবহার করতে হবে তাদের। বোলিং আক্রমণের প্রাণভোমরা হবেন এ দুজনই। তিন সংস্করণের ক্রিকেটে গত বছর সবচেয়ে ধারাবাহিক ছিলেন শরীফুল। বিপিএল দিয়ে শুরু নতুন বছরে সেই ছন্দ ধরে রাখতে চাইবেন এই বাঁহাতি। তাসকিনের জন্যও টুর্নামেন্টটা হচ্ছে চোট কাটিয়ে নিজেকে ফিরে পাওয়ার উপলক্ষ। সঙ্গে অভিজ্ঞ আরাফাত সানির বাঁহাতি স্পিনে নির্ভরতা খুঁজবে ঢাকা। হাত ঘোরাবেন মেহরব, মোসাদ্দেকও। এই বোলিং আক্রমণ দিয়ে যদি প্রতিপক্ষকে ধারাবাহিকভাবে ১৫০ রানের আশপাশে আটকে রাখা যায়, ঢাকাও তাহলে যেতে পারে অনেক দূর।
এখনো অধিনায়ক ঘোষণা করেনি দুর্দান্ত ঢাকা। প্রধান কোচ হিসেবে আছেন খালেদ মাহমুদ। ঘরোয়া ক্রিকেটে সফল এই কোচ কাল মুঠোফোনে তরুণ দলটা নিয়ে প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘তাসকিন-শরীফুল ছাড়া দলে নামকরা খেলোয়াড় নেই। সানি, নাঈম, ইরফানরা আছে। বিদেশি বড় নামও যে আছে, তা–ও না। তবে আমি খুশি। আমাদের বাজেট বেশি নয়, বড় খেলোয়াড়ও আনা সম্ভব নয়। তবে প্রতিযোগিতা করার মতো একটা দলই মনে করি আমি ঢাকাকে।’
ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক আফতাব খানও দুর্দান্ত ঢাকা নিয়ে বেশ আশাবাদী। কম বাজেটের দলের কাছেই দুর্দান্ত কিছুর আশা তাঁর, ‘যে সময় আমরা দলটা হাতে পেয়েছি, তখন সবকিছু গোছানোর মতো যথেষ্ট সুযোগ ছিল না। তবে সীমাবদ্ধতার মধ্যেই যতটা সম্ভব ভালো দল সাজানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি, এ দলটাই ভালো ফল এনে দেবে।’
একনজরে দুর্দান্ত ঢাকা
স্থানীয় খেলোয়াড়: তাসকিন আহমেদ, আরাফাত সানি, শরীফুল ইসলাম, মোসাদ্দেক হোসেন, সাইফ হাসান, ইফরান শুক্কুর, আলাউদ্দিন বাবু, মেহরব হোসেন, মোহাম্মদ নাঈম, সাব্বির হোসেন, জসিমউদ্দিন।
বিদেশি খেলোয়াড়: সাদিরা সামারাবিক্রমা, চতুরঙ্গা ডি সিলভা, সাইম আইয়ুব, উসমান কাদির, লাসিথ ক্রসপুল্লে, দানুস্কা গুনাথিলাকা।
অধিনায়ক: এখনো ঘোষণা হয়নি।
কোচ: খালেদ মাহমুদ।
গত বিপিএলে অবস্থান: এবারই প্রথম খেলবে।