বাংলাদেশ–নেদারল্যান্ডস ম্যাচের ভেন্যু আর্নস ভেল: যে মাঠে খেলা হয় না ১০ বছর
সমুদ্রঘেঁষা মাঠটার বয়স কম হয়নি। সেই ১৯৮১ সালেই প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছে এখানে। সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড গ্রেনাডাইনসের এই মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাওয়া বিদেশি দলগুলো খেলেছেও নিয়মিত। কিন্তু আজ বাংলাদেশ–নেদারল্যান্ডস ম্যাচ দিয়ে যখন ২০২৪ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বরণ করে নিচ্ছে আর্নস ভেল, তখন দীর্ঘ এক বিরতিরই অবসান হতে যাচ্ছে।
কিংসটাউনের আর্নস ভেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হতে যাচ্ছে ঠিক এক দশক পর। এ মাঠে ছেলেদের সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে। ৫ থেকে ৯ সেপ্টেম্বরজুড়ে হওয়া টেস্ট ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রতিপক্ষ ছিল মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। ঘটনাচক্রে সেই বাংলাদেশই নামছে আর্নস ভেলের বৈশ্বিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনের দিনে।
১৮ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার আর্নস ভেল গত ১০ বছরে শুধু ছেলেদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটই নয়, মেয়েদের ম্যাচ বা অনূর্ধ্ব–১৯ পর্যায়ের কোনো ম্যাচও আয়োজন করেনি। এমনকি ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (সিপিএল) ম্যাচও নয়। এবারের বিশ্বকাপের ভেন্যু হওয়ার আগে স্টেডিয়ামটিতে ব্যাপক আকারে সংস্কার করা হয়েছে। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে ফ্লাডলাইটবিহীন একমাত্র আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম ছিল এটি। এখন ছয়টি টাওয়ার বসানো হয়েছে। যুক্ত করা হয়েছে ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড, সংস্কার করা হয়েছে সড়ক।
৭ জুন আর্নস ভেলের লাইট টাওয়ার উদ্বোধনের সময় মাঠে ছিলেন সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড গ্রেনাডাইনসের প্রধানমন্ত্রী ড. রালফ গনসালভেস, অর্থমন্ত্রী ক্যামিলো গনসালভেস ও শিক্ষামন্ত্রী কার্টিস কিং। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে জানান, মাঠের সংস্কারে ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার বরাদ্দ করা হয়েছিল, এর মধ্যে ৭০ শতাংশই লাইট, স্কোরবোর্ড ও রাস্তায় ব্যবহার করা হয়েছে।
৩ টেস্ট ও ২৩ ওয়ানডে হওয়া আর্নস ভেলে সংস্কারের আগে টি–টোয়েন্টি হয়েছিল মাত্র দুটি। দুটিই ২০১৩ সালে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ–পাকিস্তানের মধ্যে। দীর্ঘ বিরতির পর এখন পিচের আচরণ কেমন হবে, এ নিয়ে কৌতূহল অনেকেরই। ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজের (সিডব্লুআই) প্রধান পিচ কিউরেটর কেন ক্রাফটন অবশ্য উইকেটে রান থাকবে বলে আশাবাদী। সেন্ট ভিনসেন্টের সংবাদমাধ্যম সার্চলাইটকে তিনি বলেন, ‘গত সপ্তাহের পিচ পরীক্ষা ও আমার পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে যা বলতে পারি, তা উৎসাহব্যঞ্জক। ধারাবাহিক বাউন্স ও পেস আছে, যেটা ভালোমতোই ব্যাটে আসার কথা। আর্নস ভেলে সবাই ভালো উইকেটই পেতে যাচ্ছে বলে আমি আশাবাদী।’
বাংলাদেশ দলের অবশ্য এ মাঠে খেলার ভালো অভিজ্ঞতাই আছে। ২০১৪ সালের আগে ২০০৯ সালেও এখানে টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ দল। তার আগে ২০০৪ সালে খেলেছে দুটি ওয়ানডে। আর্নস ভেলে খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন দুজন ক্রিকেটার আছেন বর্তমান বিশ্বকাপ দলে—সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ। বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল গতকাল ম্যাচ–পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বলেছেনও, সাকিব–মাহমুদউল্লাহর কাছ থেকে আর্নস ভেলে খেলার অভিজ্ঞতা জেনেছেন বাকিরা।