কলকাতার দুশ্চিন্তা: ১০ দিনের বিরতি, সল্টের অভাব পূরণের চ্যালেঞ্জ
১১ মে আইপিএলের এ মৌসুমে নিজের শেষ ম্যাচটি খেলেন ফিল সল্ট। পাকিস্তানের বিপক্ষে ২২ মে থেকে শুরু টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে এরপর দেশে ফিরে যান এই ইংলিশ উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান। সল্টের জায়গায় খেলার কথা আফগানিস্তানের রহমানউল্লাহ গুরবাজের। তবে প্লে–অফের আগে গুরবাজ মাঠেই নামতে পারলেন না!
শুধু গুরবাজ কেন, ১১ মে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের বিপক্ষে ওই ম্যাচের পর থেকে মাঠে নামার সুযোগ হয়নি কলকাতারই। ১৩ মে আহমেদাবাদে গুজরাট টাইটানসের বিপক্ষে ম্যাচটি ভেসে যায় বৃষ্টির কারণে। সে ম্যাচে টসই হতে পারেনি। অবশ্য ওই ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়ে যাওয়ার পর শীর্ষ দুইয়ে থেকে লিগ পর্ব শেষ করা নিশ্চিত হয় কলকাতার।
গতকাল গুয়াহাটিতে রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে ম্যাচটি আগামীকাল প্রথম কোয়ালিফায়ারের আগে হওয়ার কথা ছিল গা-গরমের। সে ম্যাচও ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। পার্থক্য বলতে, এবার টস হতে পেরেছিল। তবে এবারও একটি বলও মাঠে গড়াতে পারেনি। ফলে আগামীকাল সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে কলকাতা খেলতে নামবে ১০ দিনের বিরতির পর!
আইপিএলের যা সূচি, তাতে এমন বিরতি বেশ লম্বাই। তার ওপর সল্ট চলে যাওয়ায় দলের কম্বিনেশনটাও একটু যাচাই করে দেখার সুযোগ হারিয়েছে শেষ পর্যন্ত শীর্ষে থেকেই লিগ পর্ব শেষ করা কলকাতা। এমনিতে প্লে-অফে রিজার্ভ ডে থাকার কথা। তবে কোয়ালিফায়ারও শেষ পর্যন্ত মাঠে গড়াতে না পারলে আইপিএলের নিয়ম অনুযায়ী পয়েন্ট তালিকায় এগিয়ে থাকা কলকাতাই যাবে ফাইনালে।
এরপরও সল্টের শূন্যস্থান পূরণের চ্যালেঞ্জ কলকাতার থাকছেই। এ মৌসুমের আগে হয়ে যাওয়া নিলামে কোনো দল সল্টকে নেয়নি, জেসন রয় নিজেকে সরিয়ে নেওয়ায় কলকাতা তাঁকে দলে ভেড়ায়। সুনীল নারাইনের সঙ্গে সল্টের উদ্বোধনী জুটি এরপর হয়ে ওঠে কলকাতার সাফল্যের অন্যতম অংশ। ১২ ইনিংস একসঙ্গে খেলে দুজন যোগ করেন মোট ৫৫৯ রান, ৪৬.৫৮ গড়ে যে জুটি ওভারপ্রতি তোলেন ১২.৪৬ রান। সল্ট নিজে ১২ ইনিংসে ১৮২ স্ট্রাইক রেটে করেন ৪৩৫ রান।
হায়দরাবাদের বিধ্বংসী ব্যাটিং লাইনআপের জবাব দিতে নারাইন-সল্টের উদ্বোধনী জুটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল কলকাতার। এমনিতে গুরবাজও তাঁর বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত, তবে বিরতির পর প্রথম কোয়ালিফায়ারে এখন কোনো রকম ম্যাচ-প্রস্তুতি ছাড়াই নেমে পড়তে হবে তাঁকে। অবশ্য প্রথম কোয়ালিফায়ার বলেই হারলেও ফাইনালে যাওয়ার আরেকটি সুযোগ পাবে কলকাতা বা হায়দরাবাদ।
অন্যদিকে গতকাল কলকাতার সঙ্গে ম্যাচ ভেসে যাওয়ার পর এলিমিনেটর অবস্থানে নেমে যেতে হয়েছে রাজস্থানকে। গতকাল জয় পেলে শীর্ষ দুইয়ে থাকা নিশ্চিত হতো তাদের। অবশ্য এমনিতেও দলটি হেরে চলেছে একের পর এক ম্যাচ। প্রথম ৯ ম্যাচের ৮টিতে জেতা রাজস্থান পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থেকেই লিগ শেষ করবে, একটা সময় মনে হচ্ছিল এমন। কিন্তু টানা চারটি হারে পিছিয়ে পড়তে থাকে তারা। প্লে-অফ নিশ্চিত হতেও সময় লাগে তাদের।
তার ওপর জাতীয় দলের সিরিজের জন্য রাজস্থানকে আগেই ছেড়ে গেছেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলার। তাঁর জায়গায় আরেক ইংলিশ ব্যাটসম্যান টম কোলার-ক্যাডমোরকে খেলিয়েছিল রাজস্থান, তবে আইপিএল অভিষেকে তিনি মোটেও সুবিধা করতে পারেননি। পাঞ্জাব কিংসের কাছে হারা ম্যাচে ওপেনিংয়ে নেমে ২৩ বলে মাত্র ১৮ রান করেন কোলার-ক্যাডমোর। সর্বশেষ কয়েকটি ম্যাচে অবশ্য দলটির বড় দুশ্চিন্তা মিডল অর্ডারই।
এদিকে জাতীয় দলের সিরিজ থাকলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েলকে পাচ্ছে রাজস্থান। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের দলে রাখা হয়নি তাঁকে।