২০০৫ সালের পর ২০২২—ইংল্যান্ডের দুটি পাকিস্তান সফরের মধ্যে ব্যবধান। এত দিন পর ইংল্যান্ড দলের পাকিস্তানে যাওয়াটাই ঐতিহাসিক মুহূর্ত। শেষ পর্যন্ত এ সফর কেটেছে নির্ঝঞ্ঝাটই।
সাত ম্যাচ সিরিজটিও হয়েছে দারুণ, শেষ ম্যাচে গিয়ে নির্ধারিত হয়েছে সিরিজের জয়ী দল। অবশ্য দাপটের সঙ্গে শেষ দুই ম্যাচ জিতে ৪-৩ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে ইংল্যান্ড। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) চেয়ারম্যান রমিজ রাজা বলছেন, এত দিন পর খেলতে আসা ইংল্যান্ডকে খালি হাতে তো ফিরতে দেওয়া যায় না! সিরিজ জয়ের ট্রফিটাও ইংল্যান্ডের কাছে সে কারণেই।
ব্যাপারটি যে রমিজ মজা করে বলেছেন, সেটি অবশ্য আলাদা করে না বললেও চলে। গত বছর বিশ্বকাপের আগে পাকিস্তান সফরে যাওয়ার কথা থাকলেও নিরাপত্তার কারণে যায়নি ইংল্যান্ড। সে সময় নিজের হতাশা উগরে দিয়েছিলেন রমিজ।
এবার অবশ্য সফরকারীদের আলাদা করে ধন্যবাদই জানালেন রমিজ। গতকাল লাহোরে শেষ টি-টোয়েন্টির পর তিনি বলেন, ‘ইংল্যান্ডকে আতিথেয়তা দেওয়াটা সম্মানের ব্যাপার। ১৭ বছর পর তারা এসেছে, তাদের ট্রফি বঞ্চিত করা ঠিক হতো না। আমরা তাদের খালি হাতে ফিরতে দেব না।’
তবে এরপরই রমিজ বলেছেন, যোগ্য দল হিসেবেই সিরিজ জিতেছে ইংল্যান্ড, ‘তবে সত্যি বলতে কী, তারাই দুই দলের মধ্যে বেশি ভালো খেলেছে। ধারাবাহিকভাবে উত্তেজনাকর একটা সিরিজ ছিল শেষ দুই ম্যাচের আগে। সেখানে পাকিস্তান পাত্তা পায়নি। পাকিস্তানের অনেক কিছু শেখার আছে, তবে আপাতত বিশ্বকাপের জন্য শুভকামনা। আমি চাই সমর্থকেরা এই পাকিস্তান দলের পাশে থাকুক।’
আগামী ডিসেম্বরেই আবার পাকিস্তান সফরে যাবে ইংল্যান্ড। সেটি অবশ্য টেস্ট সিরিজের জন্য। সেটির আমন্ত্রণও জানিয়ে রেখেছেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক রমিজ, ‘আবারও ইংল্যান্ডকে ধন্যবাদ। আমাদের জন্য এটি সম্মানের ব্যাপার ছিল। টেস্ট সিরিজে আবারও দেখা হবে, আপনাদের ভ্রমণ নিরাপদ হোক।’
এদিকে পাকিস্তানের আতিথেয়তা মুগ্ধ করেছে ইংল্যান্ড ক্রিকেটারদের। গতকাল সিরিজ শেষ হওয়ার পর দেশটিকে ধন্যবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন তাঁরা। জস বাটলারের চোটে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া মঈন আলী বলেছেন, ‘১৭ বছর পর আবার ফিরে ক্রিকেট খেলাটা অসাধারণ এক অভিজ্ঞতা। এমনকি ক্রিকেট শুরু হওয়ার আগে থেকেই আমাদের জন্য ব্যাপারটি দারুণ ছিল। আবারও এখানে ক্রিকেট খেলতে পেরে নিজেদের সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে।’
আলাদা করে পাকিস্তানের আতিথেয়তার কথাও বলেছেন মঈন, ‘বিশ্বের মধ্যে অন্যতম সেরা আতিথেয়তা এখানে। এখানকার মানুষ দারুণ যত্ন নিয়েছে আমাদের, অনেক ভালো তারা। আমাদের খুব ভালো খেয়াল রাখা হয়েছে। এত দিন পর এসে সত্যিই উপভোগ করেছি। অসাধারণ ছিল (এ অভিজ্ঞতা)।’
আর ইংল্যান্ডের সীমিত ওভারের কোচ ম্যাথু মট বলছেন, আর দশটি ক্রিকেট সফরের চেয়ে আলাদা ছিল এটি, ‘এটা ক্রিকেট সফরের চেয়েও বেশি কিছু। পাকিস্তানের মানুষ দারুণভাবে করেছে সব, আমাদের দলকে দারুণভাবে বরণ করে নিয়েছে। প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করেছি আমরা।’