২৪৬ করেও জয় দেখছিলেন নাজমুল
সুইং থাকবে। থাকবে সিম মুভমেন্টও। ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ডের মেঘলা আবহাওয়ায় পেসাররা দেখাবে দাপট। চেমসফোর্ডে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ডের মধ্যে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে এমন চিত্রনাট্য মেনেই এগিয়েছে। যদিও ম্যাচটি বৃষ্টির বাগড়ায় পণ্ড হয়ে গেছে। প্রথমে ব্যাটিং করে বাংলাদেশ ৯ উইকেটে ২৪৬ রান তুলেছিল স্কোরবোর্ডে। জবাবে আয়ারল্যান্ড ১৬.৩ ওভারে ৬৫ রান তুলতেই হারিয়েছিল ৩ উইকেট।
বাংলাদেশের ব্যাটিংটা প্রত্যাশামতো হয়নি। তবে বোলিংয়ের শুরুটা মোটামুটি ভালো হওয়ায় ম্যাচটা জেতার যথেষ্ট সম্ভাবনা ছিল বাংলাদেশের। বৃষ্টিতে খেলা পরিত্যক্ত হয়ে যাওয়ার পর উপস্থিত সাংবাদিকদের সেটিই জানিয়েছেন নাজমুল হোসেন, ‘শুরুটা ভালোই হয়েছিল। ম্যাচটা শেষ হলে হয়তো ফল আমাদের দিকেই আসত। আমাদের পেসার ও স্পিনাররা যেভাবে বোলিং করেছে, সেটি ভালোই ছিল। আবহাওয়ার ওপর আসলে কারওরই হাত নেই, তাই এটা নিয়ে ভাবছিই না।’
প্রথমে ব্যাটিং করে আয়ারল্যান্ডের সামনে খুব একটা বড় সংগ্রহ দাঁড় করাতে পারেনি কেন বাংলাদেশ? এ ব্যাপারে নাজমুল ব্যাখ্যা,‘সাধারণত এখানে ২৯০-৩০০ রান ওঠে। কিন্তু এটা মাথায় নিয়ে আমরা নামিনি। শুরুতে উইকেটটা বোঝার চেষ্টা করেছি। বুঝে খেলার চেষ্টা করেছি। যদিও আমাদের বড় বড় কোনো জুটি হয়নি। যদি হতো তাহলে আমরা আরও বড় স্কোর করতে পারতাম।’
লিটন দাস ছাড়া স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের প্রত্যেকেই উইকেটে থিতু হয়েছেন। কিন্তু কেউই ইনিংস বড় করতে পারেননি। বাংলাদেশ ইনিংসের সর্বোচ্চ ৬১ রান এসেছে মুশফিকুর রহিমের ব্যাট থেকে। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় কন্ডিশনেরও একটা বড় ভূমিকা ছিল।
তবে এই কন্ডিশনেও ইতিবাচক ক্রিকেট খেলার মানসিকতা ছিল বাংলাদেশ দলের, ‘শুরু থেকেই ইতিবাচক ব্যাটিংটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এখানে রক্ষণাত্মক ক্রিকেট বা সময় নিয়ে খেলার কিছু নেই। তবে উইকেটে কতটা মুভমেন্ট হচ্ছে, কীভাবে ইনিংস গড়ব—এই ভাবনাটা থাকা গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাটসম্যানরা ভালো শুরু করেছে। কিন্তু ইনিংসগুলো লম্বা হয়নি। এটা যদি আমরা করতে পারি, তাহলে পরের ম্যাচে বড় রানই হবে।’
বাংলাদেশ দলের একাদশেও ছিল ইতিবাচক ভাবনার প্রতিফলন। ব্যাটিংয়ের জন্য কঠিন কন্ডিশনেও মেহেদী হাসান মিরাজকে সাত নম্বরে রেখে একাদশ সাজিয়েছিল বাংলাদেশ। দলের জন্য এই কম্বিনেশনে খেলার বিষয়টি নতুন। তবে সতীর্থ মিরাজের ব্যাটিং সামর্থ্যে নাজমুলের পূর্ণ আস্থা আছে, সেটা বোঝা গেল তাঁর কথায়, ‘এটা আমাদের কাছে নতুন একটি অভিজ্ঞতা। তবে মিরাজ ব্যাটিংয়ে খুব ভালো ফর্মে আছে। সে আমাদের বেশ কিছু ম্যাচ জিতিয়েছে। আমরা মিরাজকে একজন বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবেই দেখছি। কিন্তু এটা একটু নতুন অভিজ্ঞতা।’
ইংল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের হয়ে খেলার অভিজ্ঞতাও নাজমুলের জন্য নতুনই। প্রবাসী বাংলাদেশিদের সমর্থনও তেমনই নতুন অভিজ্ঞতা। চেমসফোর্ড হওয়ার কথা ছিল আয়ারল্যান্ডের ঘরের মাঠ। কিন্তু প্রায় ৫ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামে ছিল বাংলাদেশি সমর্থকদের দাপট। নাজমুল যেমন বলছিলেন, ‘মনে হচ্ছিল ঘরের মাঠেই খেলছি। ৮০-৯০ ভাগই ছিল বাংলাদেশি সমর্থক। দারুণ লেগেছে। এত দর্শক আমাদের খেলা দেখতে এসেছে। এটা সব সময় আমাদের ভালো খেলতে অনুপ্রাণিত করে। আশা করি পরের ম্যাচেও এমন দর্শক মাঠে আসবে।’
দলের আরেক সদস্য হাসান মাহমুদও প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডে খেলছেন। পেসার হিসেবে ইংলিশ গ্রীষ্মের এই সময়টা বেশ উপভোগই করছেন তিনি। কন্ডিশন যে পেসারদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে! কাল নিজের প্রথম স্পেলে ৫ ওভারে ২১ রান দিয়ে তুলে নিয়েছিলেন একটি উইকেট।
ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণার পর বিসিবির পাঠানো ভিডিও বার্তায় হাসান জানান ইংলিশ কন্ডিশন নিয়ে তাঁর ভাবনার কথা, ‘বোলিংয়ে আমাদের পরিকল্পনা ছিল ফোর্থ-ফিফথ স্টাম্পের মধ্যে বোলিং করা। খুব বেশি জায়গা না দেওয়া, সুইং ব্যবহার করা, যতটা সম্ভব সামনে বল করা, নতুন বলটা ব্যবহার করা। আমরা শুরুটা মোটামুটি ভালোই করেছি।’