নিজের ঘরে যেন অতিথি বাংলাদেশ দল
‘নো মিডিয়া হেয়ার!’
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ইনডোরে ঢুকেই আশপাশে তাকিয়ে কথাটা বললেন প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। তাঁর কণ্ঠে বিস্ময়। ইনডোরে অনুশীলনের সময় স্টেডিয়ামের গ্যালারির এক পাশে সংবাদমাধ্যমের ভিড় দেখে অভ্যস্ত ক্রিকেটার ও কোচরা। আজ সেখানে বাংলাদেশ দলের অনুশীলন শুরুর অনেকটা সময় দু-একজন সংবাদকর্মী ছাড়া কেউই ছিলেন না।
সবার ক্যামেরা তখন মিরপুর স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে তাক করা। ভারতীয় দলের অনুশীলন চলছিল সেখানে। কোহলিরা কী করছেন, সেদিকে আঠার মতো লেগে ছিল সবার চোখ। ভারতীয়দের ওয়ার্ম আপে ভলিবল খেলা থেকে শুরু করে নেট সেশনের শেষ পর্যন্ত ছিল একই রকম। আর সব জায়গার মধ্যমণি ওই একজনই—কোহলি।
ওয়ার্ম আপে সবচেয়ে বেশি ‘এনার্জেটিক’ সেই কোহলিই। সতীর্থদের সঙ্গে ভাগ হয়ে খেলা ভলিবল ম্যাচটাতেও তাঁকে চরম সিরিয়াস মনে হয়েছে। এরপর নিজের বিশাল কিট ব্যাগটা কাঁধে করে নিয়ে যেতে দেখা যায় একাডেমিতে। নেট সেশনে সবচেয়ে বেশি ব্যাটিংটাও করেছেন কোহলি। রোহিত-রাহুলরাও ব্যাটিং করেছেন। কিন্তু ‘অ্যাকশন’ যা ছিল, তা কোহলির নেটেই।
কোহলির সেই অবিশ্বাস্য প্রাণশক্তি থেকে চোখ সরাতে পারছিল না বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম। কোহলির কারণেই কিছুক্ষণের জন্য মনে হচ্ছিল, ভারত খেলবে তাদের ঘরের মাঠে। আর বাংলাদেশ যেন নিজের মাঠেই অতিথি! ডমিঙ্গোর সেই বিস্ময়ের কারণ বোধ হয় এটাই।
ওদিকে বাংলাদেশ দলকে ঘিরে আলোচনা ছিল একটাই—কে হচ্ছেন ওয়ানডে দলের অধিনায়ক? অনুশীলনের শুরু থেকেই সবার মুখে এই একটাই প্রশ্ন।
তামিম ইকবালের চোটে পড়ায় অধিনায়ক কে হবেন, সেই খোঁজে ছিল সংবাদমাধ্যম। অনুশীলনের শুরুতে সাকিব আল হাসানকে মাঠে দেখা যায়নি। বিকেলের দিকে তিনি মাঠে এসেছেন।
জানা গেছে, তামিমের অবর্তমানে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের নেতৃত্বটা সাকিবের হাতে তুলে দেওয়ার ইচ্ছা ছিল বিসিবির। কিন্তু সাকিব তাতে রাজি হওয়ায় লিটন দাসকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এ তো গেল অধিনায়কত্বের আলোচনা, তামিম না থাকায় একজন ওপেনারও খুঁজতে হবে বাংলাদেশ দলকে। লিটন তো আছেনই। তাঁর সঙ্গী কে হতে যাচ্ছেন, সে আভাসটা কিছুটা হলেও পাওয়া গেল অনুশীলনে এনামুল হককে নতুন বল খেলতে দেখে।
অন্তত প্রথম ওয়ানডের জন্য একজন নতুন বলের বোলারেরও খোঁজ টিম ম্যানেজমেন্টের। পিঠের পুরোনো ব্যথা ফিরে আসায় তাসকিন আহমেদ প্রথম ওয়ানডে থেকে ছিটকে পড়েছেন। যিনি কিনা অস্ট্রেলিয়ার অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের নতুন বলের ভরসার প্রতীক হয়ে উঠেছেন।
তাসকিন না থাকায় ইবাদত হোসেন সুযোগ পেতে পারেন। শরীফুল ইসলামও হতে পারেন তাসকিনের বদলি। আজ দুজনের সঙ্গেই নতুন বলের বোলিং নিয়ে কাজ করেছেন অ্যালান ডোনাল্ড। সিম মুভমেন্টে এনামুলের পরীক্ষা নিয়েছেন দুজনই।
পরীক্ষা হবে বাংলাদেশ দলেরও।
পূর্ণ শক্তির ভারতীয় দল ২০২৩ বিশ্বকাপের যাত্রাটা শুরু করছে এই সিরিজ থেকেই। ওয়ানডে সুপার লিগের সিরিজ না হওয়ার পরও রোহিত-কোহলিরা ওয়ানডে সিরিজ খেলতে এসেছেন। দুজনই সর্বশেষ ওয়ানডে খেলছেন এ বছরের জুলাই মাসে। গত কয়েক মাস টি-টোয়েন্টির ব্যস্ততায় কেটেছে ভারতীয়দের সময়। বাংলাদেশেরও তাই। এবার ওয়ানডের আমেজে ঢোকার পালা।