‘বন্ধু’ চলে গেছে, তাই বিশ্বকাপে সেরাটা দেওয়ার আশা হাসান মাহমুদের
চোটের সঙ্গে হাসান মাহমুদের সখ্য সেই বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকেই। চোট, পুনর্বাসনের পর খেলায় ফেরা—এই চক্রেই চলছে তরুণ পেসারের ক্যারিয়ার। ২০২০ সালের মার্চে অভিষেক হওয়া হাসান তাই ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ম্যাচ খেলেছেন মাত্র ৮টি।
তবে যতবারই জাতীয় দলের জার্সি গায়ে মাঠে নেমেছেন, ততবারই হাসানকে বাকিদের থেকে আলাদাই মনে হয়েছে। গতি, সুইং ও নিয়ন্ত্রণের সহজাত দক্ষতা দেখে জাতীয় দলের সাবেক পেস বোলিং কোচ ওটিস গিবসন হাসানকে বলেছেন বাংলাদেশ পেস বোলিংয়ের ভবিষ্যৎ। বর্তমান পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডও তাঁকে প্রথম দেখায় দলে নিতে চেয়েছিলেন।
যে কারণে খেলার মধ্যে না থেকেও হাসান সব সময় ছিলেন নির্বাচকদের আলোচনায়। অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলেও হাসানের থাকাটা প্রত্যাশিতই ছিল। তবে হাসান এখনো লড়ছেন চোটের সঙ্গে। অনুশীলনের সময় পায়ের চোটের কারণে এশিয়া কাপ খেলা হয়নি তাঁর। এখন তিনি আছেন পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায়। সব ঠিক থাকলে বোলিং করবেন ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে।
চোট থেকে ফিরে ধীরে ধীরে ম্যাচের আবহে ঢুকতে চান তিনি। সে জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজটি কাজে লাগাতে চান এই পেসার। আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের একাডেমি ভবনে ফিটনেস নিয়ে কাজ করার সময় তিনি বলছিলেন, ‘আমার ম্যাচের আবহে আসতে হবে। চোট থেকে ফিরছি, পুরোনো ছন্দে ফিরতে কিছুটা সময় তো লাগবেই।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বশেষ সফরে হাসান দারুণ ছন্দে ছিলেন। নতুন বলে প্রতি ম্যাচেই দলকে ভালো শুরু এনে দিয়েছিলেন বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে। সেই জিম্বাবুয়ে সিরিজটি ছিল হাসানের প্রত্যাবর্তন সিরিজ। এর আগে প্রায় দেড় বছর চোটের সঙ্গে লড়াই করেছেন। ২০২১ সালের মার্চে নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে পিঠে চোট পান। এরপর ২০২২ সালের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ থেকে মাঠে ফিরেছেন। এক প্রিমিয়ার লিগ দিয়েই আবার জাতীয় দলে ফিরেছেন হাসান।
চোটের সঙ্গে এই লুকোচুরি খেলায় হাসান এখন অভ্যস্ত। পেস বোলার হিসেবে এটাই যে তাঁর নিয়তি, সেটাও মেনে নিয়েছেন। আজ সাংবাদিকদের যেমন বলছিলেন, ‘ফাস্ট বোলারদের জন্য চোট জিনিসটা মানে একটা বন্ধুর মতো। এসে আবার চলে যায় (হাসি)। এটা নিয়েই কাজ করে যেতে হবে।’ চোটের বিরতির পর অবশ্য হাসানকে আত্মবিশ্বাসীই মনে হলো, ‘সর্বশেষ জিম্বাবুয়ে যে সিরিজটা খেলেছিলাম, সেখান থেকে নিজেকে খুবই আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছে। যেহেতু এখন বিশ্বকাপ দলে আছি, নিজের সেরাটাই দিতে চাই।’
এশিয়া কাপ থেকেই বাংলাদেশ দলের ডেথ ওভার বোলিং নতুন দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বকাপের আগে টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তাও এখন এটি। হাসানের কাছে আজ সবার জিজ্ঞাসাও ছিল ওই ডেথ ওভার নিয়ে। নিজের ছোট্ট আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের অভিজ্ঞতা থেকে হাসান বলছিলেন, ‘চাপের মুহূর্তে আমরা হয়তো আতঙ্কিত হয়ে যাই। অথবা আমাদের মূল যে দক্ষতা, সেটা হয়তো ভুলে যাই।’
ভুলে যাওয়া এই দক্ষতার নাম ইয়র্কার, যা ডেথ ওভারে বাংলাদেশ দলের পেসারদের বোলিংয়ে দেখা যায়নি। হাসান বলেছেন, ‘আমাদের নিজেদের দক্ষতার মধ্যে থাকতে হবে। তাহলে টানা ইয়র্কার মেরে যেতে পারব।’