অচেনা মায়াঙ্কের গতির সামনে বেসামাল পাঞ্জাব
লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের ১৯৯ রান তাড়া করতে নেমে ১০ ওভারেই ৯৮ রান তুলে ফেললেন শিখর ধাওয়ান–জনি বেয়ারস্টো। পাঞ্জাব কিংস ওপেনারদের তখনো অনুমান করার কথা নয়, পরের কয়েক ওভারে অচেনা এক তরুণ কীভাবে তাঁদের জয়ের পথ থেকে ছিটকে ফেলবেন।
আজ লক্ষ্ণৌর একানা স্টেডিয়ামে ধাওয়ানের দলকে সত্যিকার অর্থেই ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছেন মায়াঙ্ক যাদব নামের সেই তরুণ। ২১ বছর বয়সী এই ডানহাতি পেসার আজই আইপিএলে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেছেন। আর নেমেই গতিতে রীতিমতো ভড়কে দিয়েছেন ধাওয়ানদের। গড়েছেন এবারের আসরের সবচেয়ে গতিময় বলের রেকর্ড। নিয়েছেন উইকেটও।
পাঞ্জাবের বিপক্ষে লক্ষ্ণৌর ২১ রানের জয়ে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরাও মায়াঙ্কও। অচেনা একজন হয়ে মাঠে নেমে প্রথম ম্যাচেই যিনি নিজেকে চিনিয়েছেন গতিময় বোলার হিসেবে।
মায়াঙ্ক প্রথম বল হাতে নেন পাঞ্জাবের ইনিংসের দশম ওভারে। প্রথম তিন ডেলিভারির তিনটিই ছিল ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটার গতির বেশি, তৃতীয়টি ১৫০!
গতিতে ঝড় তুললেও বেয়ারস্টো আর ধাওয়ান একটি করে চার তুলে নেন ওই ওভার থেকে। তবে নিজের দ্বিতীয় ওভারে ফিরেছেন আরও বেশি গতি নিয়ে। ধাওয়ানকে করা প্রথম বলেই ঘণ্টায় ১৫৫.৮ কিলোমিটার গতি। এবারের আইপিএলে যা সর্বোচ্চ।
ওই ওভারেই মায়াঙ্ককে পুল করতে গিয়ে টাইমিংয়ের গড়বড়ে ক্যাচ তোলেন বেয়ারস্টো (২৯ বলে ৪২)। পরে তৃতীয় ওভারে এসে শর্ট বলে ক্যাচ বানিয়ে ফেরান প্রভসিমরানকে (৭ বলে ১৯)। উইকেটহীন থাকেনি চতুর্থ ওভারও। জিতেশ শর্মা নাভিন উল হকের ক্যাচ বানিয়ে নেন নিজের তৃতীয় উইকেট।
বিনা উইকেটে ১০২ থেকে পাঞ্জাবের স্কোর পরিণত হয় ৩ উইকেটে ১৩৯ রানে। প্রথম ওভারে ১০ রান দিয়ে ফেলা মায়াঙ্ক ৪ ওভারের কোটা শেষ করেন ২৭ রানে ৩ উইকেটে!
ম্যাচে এখানেই ফসকে ফেলে পাঞ্জাব, নিয়ন্ত্রণ নেয় লক্ষ্ণৌ। ধাওয়ানের ৫০ বলে ৭০ আর শেষ দিকে লিয়াম লিভিংস্টোনের ১৭ বলে ২৮ রানের পরও তাই ২১ রানের সহজ জয়ই পেয়েছে লক্ষ্ণৌ।
গতিতে ঝড় তোলার পাশাপাশি মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া উইকেট শিকারের সুবাদে ম্যাচসেরার স্বীকৃতি উঠেছে মায়াঙ্কের হাতেই।
ম্যাচ শেষে অভিষিক্ত মায়াঙ্কের বোলিংয়ের প্রশংসা করে পাঞ্জাব অধিনায়ক ধাওয়ান বলেন, ‘ওর গতিতে বিস্মিত হয়েছি। চেয়েছিলাম ওর গতিটা কাজে লাগিয়ে ব্যাট করতে। কিন্তু সে বাউন্সার আর ইয়র্কারও করেছে।’
২০২২ সালে নিলামে ২০ লাখ মূল্যে লক্ষ্ণৌতে বিক্রি হলেও সে বছর কোনো ম্যাচ খেলতে পারেননি মায়াঙ্ক। গত বছর খেলতে পারেননি প্রথম ম্যাচের আগে প্রস্তুতিতে চোট পেয়ে ছিটকে গেলে। এবার তৃতীয় আসরে সুযোগ পেয়ে নিজেকে চেনাতে সময় নিলেন মাত্র একটাই ম্যাচ!