সাকিব-তামিমরা ‘ভুয়া’ কেন
‘ভুয়া’ শব্দের অর্থ কী? ডিকশনারি খুলে দেখা যাচ্ছে, ‘ভুয়া’ মানে অলীক, মিথ্যা, যার কোনো অস্তিত্ব নেই। ইংরেজিতে ‘Unsubstantial’, ‘Empty’, ‘Fake’, ‘False’ এবং এ রকম আরও কিছু সমার্থক শব্দ। মোটকথা, ‘ভুয়া’ মানে যা নেই, কিন্তু আছে বলে বলা হয়, তা। আপনি যা নন, নিজেকে সেটা দাবি করলে আপনি ভুয়া। আপনি মিথ্যা খবর দিলেন তো আপনি ভুয়া খবর দিলেন।
সে জন্য ভুয়া সাংবাদিক হয়। সাংবাদিক নন, কিন্তু সাংবাদিক পরিচয় দিচ্ছেন, এমন ‘সাংবাদিক’ ভুয়া সাংবাদিক। এভাবে পত্রপত্রিকা পড়ে আমরা ভুয়া উকিল, ভুয়া ডাক্তার, ভুয়া পুলিশ, ভুয়া সরকারি কর্মকর্তা এবং আরও অনেক ‘ভুয়া’র সন্ধান পাই।
ধরুন গৃহকর্মী হিসেবে আপনি যাকে রেখেছেন, হঠাৎ একদিন ঘরে ফিরে দেখলেন সে আপনার আলমারি খালি করে পগারপার। তখন বুঝবেন সে ছিল আসলে ভুয়া বুয়া। ফেসবুকের যুগে ভুয়া প্রেমিক-প্রেমিকাও কম নেই। একটা অনলাইনে দেখলাম, আজকাল ভুয়া কবিও নাকি বের হয়েছেন, যাঁরা আসলে কবি নন। সুযোগ বুঝে অন্যের কবিতা নিজের নামে চালিয়ে দেন।
কিন্তু ভুয়া ক্রিকেটার—সেটা কীভাবে সম্ভব? চোখের সামনে দেখা যাচ্ছে দুজন মানুষ দিব্যি ফিল্ডিং করছেন, ব্যাটিং করছেন। একজন বোলিংও করছেন। চলমান বিপিএলের গ্যালারি থেকে তবু কিছু লোক সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালকে ‘ভুয়া, ভুয়া’ বলে ডাকাডাকি করেই যাচ্ছে। সম্মিলিতভাবে গলা ফাটিয়ে ‘ভুয়া, ভুয়া, ভুয়া’ চিৎকারে কী আনন্দ কে জানে! আর কেনইবা তা হবে? যাঁদের ‘ভুয়া’ বলা হচ্ছে, শব্দটা কি আদৌ যায় তাঁদের সঙ্গে?
একজন খেলোয়াড় খেলতে খেলতেই বড় হন। তাঁর রান, তাঁর উইকেট, তাঁর সাফল্য, তাঁর ব্যর্থতা—সব একান্তই তাঁর এবং সবই প্রকাশ্য। এখন কারও রান-উইকেট যদি অন্যের নামে চলে যায়, সেটা নিশ্চয়ই কোনো ‘ভুয়া’ স্কোরারের কাজ হবে। ক্রিকেটারের তাতে কোনো ধরনের অবদান থাকার কথা নয়।
হ্যাঁ, খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সে ওঠানামা আছে; যেটা আসলে সব মানুষের কর্মক্ষেত্রেই থাকে। আপনি আপনার চাকরি বা ব্যবসায় সব দিন একই রকম কাজ করতে পারবেন না। কোনো দিন ভালো হবে, কোনো দিন খারাপ হবে। কোনো দিন লাভ হবে, কোনো দিন লস হবে। খারাপের দিনে বা লসের দিনে যদি আপনার পাড়া-প্রতিবেশী, সহকর্মীরা আপনাকে দেখে ‘ভুয়া, ভুয়া’ বিদ্রূপ করতে থাকে, আপনার কেমন লাগবে?
আপনি, আমি বেঁচে যাই আসলে আমাদের স্টেডিয়ামে নেমে হাজার হাজার মানুষের সামনে নিজেদের কাজটা করতে হয় না বলে। আমাদের ভুল দুনিয়া দেখে না, তাই। আমাদের পারফরম্যান্সের আলোচনা চারদেয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ। কাজে ভুল করে বসের ঝাড়ি খেয়েও মুখে কপট হাসি নিয়ে ঘরে ফেরা সম্ভব। রাজ্য উদ্ধার করে আসার ভাব ধরা সম্ভব।
ক্রিকেটারদের সে উপায় নেই। তাঁদের পরীক্ষা খোলা আকাশের নিচে। পারফরম্যান্স মূল্যায়নের আছে লাখো কোটি ‘বিচারক’। ভুল করলে তাৎক্ষণিক প্রাপ্য বুঝিয়ে দিতে গ্যালারিতে থাকে ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান তোলা হাজারো সমর্থক। তাতেও কি মন ভরে! সোশ্যাল মিডিয়ায় কাটাছেঁড়া করে আরও নিখুঁত করে তোলা হয় ‘রিপোর্ট কার্ড’, যেন ক্রিকেটারটি যে ভালো না খেলে আসলেই প্রচণ্ড খারাপ একটা কাজ করে ফেলেছেন, সেটি ওই ক্রিকেটার, তাঁর পরিবার, বন্ধুবান্ধবসহ সবার মনে চিরস্থায়ীভাবে গেঁথে যায়।
ক্রিকেটার ঘরে ফেরার আগেই তাঁর পরিবার জেনে যায়, তিনি ‘রাজ্য ধ্বংস’ করে এসেছেন। ততক্ষণে গ্যালারির দর্শকদের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের কচুকাটা করতে যোগ দিয়ে ফেলেছেন টেলিভিশনে খেলা দেখা এবং কোথাও খেলা না দেখা লাখো কোটি ‘দর্শক’। কপট হাসি হেসেও পরিস্থিতি এড়ানোর সুযোগ কোথায় খেলোয়াড়ের!
শুধু খারাপ খেলা কেন, মাঠে কোনো কারণে তাঁরা একটু মেজাজ হারাক বা মুখটা একটু বাঁকা করে দেখুক। সেই দৃশ্য মুহূর্তে নানা রকম সম্ভাব্য-অসম্ভাব্য অর্থসহ ভাইরাল! কাল সাকিব ক্যাচ আউট হওয়ার পর তামিমের উদ্যাপন নিয়ে যেমন হাজারটা প্রশ্ন। রাতভর অজস্র ব্যঙ্গবিদ্রূপ ভেসে বেড়াল ফেসবুকে।
এখন তামিম কীভাবে উদ্যাপন করবেন, সেটাও কি দর্শকদের মত নিয়ে করতে হবে? আর তামিম যে জায়গায় দাঁড়িয়ে সেটা করেছেন, সাকিবের পক্ষে কি তা দেখা সম্ভব ছিল, নাকি তামিম সাকিবের মুখের ওপর এসে সেটা করেছেন? টেলিভিশনে না দেখাল ওই দৃশ্য হয়তো কারও চোখেই পড়ত না। খেলার মাঠে এ তো নিয়মিত ঘটনা!
টেলিভিশনে জুম করে দেখানো তামিমের ওই উদ্যাপন যে দৃষ্টিকটু লেগেছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। বুঝে নিতে অসুবিধা হয়নি তাঁকে আউট করে করা সাকিবের উদ্যাপনকেই ব্যঙ্গ করতে চেয়েছেন তামিম। আমরা এ–ও জানি, দুজনের সম্পর্কে অনেক দিন ধরেই একটা টানাপোড়েন চলছে, যে আগুনে বাড়তি ঘি ঢেলেছে গত বিশ্বকাপের আগে সাকিবের দেওয়া এক সাক্ষাৎকার। এখন তামিমও যেহেতু মানুষ, তাঁর কষ্টটা এ রকম হঠাৎ বাইরে চলে আসতেই পারে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেটাকে দ্বিপক্ষীয় বৈরিতার আরেকটি নিদর্শন হিসেবে প্রতিষ্ঠা না করলেও তো চলে। থাক না তাঁদের ব্যক্তিগত কিছু বিষয়।
আর আমরা কেনইবা ভুলে যাই খেলাধুলায় মাঠের উদ্যাপনটা খেলোয়াড়েরাই করেন, তাঁদের হয়ে কোনো দার্শনিক সেটা করে দেন না যে খুব ভেবেচিন্তে তা হবে। শরীর-মনে আবেগ-আনন্দ বেয়ে না পড়লে আবার কিসের উদ্যাপন! সে রকম কেউ করলে সেটাকেই বরং ‘ভুয়া’ উদ্যাপন বলা উচিত।
‘ভুয়া’র আভিধানিক অর্থ মাথায় রাখলে ‘ভুয়া, ভুয়া’ বলে গ্যালারি ফাটানো দর্শকেরা আসলে কী বলতে চান, তা আমার কাছে খুবই অস্পষ্ট লাগে। তাঁরা যে গলা ফাটিয়ে বলছেন ‘সাকিব ভুয়া’, ‘তামিম ভুয়া’, তার মানে তো এ–ই—সাকিব নেই, তামিম নেই। সাকিব মিথ্যা, তামিম মিথ্যা। তাঁরা অস্তিত্বহীন।
ব্যাপারটা কি আসলেই সে রকম? যদিবা হয়ও, ধরে নিলাম সাকিব-তামিম বলে আসলেই কেউ নেই। এই দুই নামে বাংলাদেশে কেউ কোনো দিন ক্রিকেট খেলেননি। সাকিব বিশ্বের এক নম্বর অলরাউন্ডার হননি। তাঁর কাণ্ডকীর্তি সবই ফ্যান্টাসি ভাবনা, অলীক কল্পনা। তামিমের বিধ্বংসী ইনিংসগুলোও কোনো মানুষের খেলা নয়। ‘এক দেশে ছিল এক রাজা’–টাইপ কোনো রূপকথার গল্পের নায়ক ধবধবে সাদা পঙ্খিরাজের পিঠে চড়ে এসে সোনার কাঠি-রুপার কাঠি দিয়ে ইনিংসগুলো খেলে গেছেন।
বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রথম এবং এখনো সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন যেহেতু সাকিব-তামিমরা, তাঁরাই যদি ‘ভুয়া’; মানে মিথ্যা, অলীক বা নেই হয়ে যান, বাকি কিছু আর থাকে কী করে! বাংলাদেশের ক্রিকেটটাই তো তখন নেই হয়ে যায়!
এমনকি ২০১০ সালে লর্ডসে সেঞ্চুরি করে ব্যাট হাতে তামিমের শূন্যে লাফিয়ে ওঠার যে দৃশ্যে আমরা রোমাঞ্চিত হয়েছি বা ও রকম আরও যত তাঁর আকাশ ছোঁয়ার চেষ্টা, সবই ত্রিমাত্রিক ছবি। ধরাছোঁয়া যায় না। বাস্তবে ঘটেনি। অথবা সেগুলো ছিল ‘ফেরি টেল থিয়েটার’–এর কয়েকটি পর্ব মাত্র।
তাহলে কী দাঁড়াচ্ছে? দাঁড়াচ্ছে তো না, স্রেফ শুয়ে পড়ছে। বাংলাদেশের ক্রিকেট বলতে আর কিছুই থাকছে না। সেটাকে মনে হবে অন্ধকার গুহার মধ্যে হওয়া কোনো খেলা, যেখানে ফ্লাড লাইট দূরে থাক, কুপির আলোও পৌঁছায় না। দুনিয়ার কেউ জানে না, ও রকম একটা গুহা আছে, যেখানে ক্রিকেট খেলাও হয়। বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রথম এবং এখনো সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন যেহেতু সাকিব-তামিমরা, তাঁরাই যদি ‘ভুয়া’; মানে মিথ্যা, অলীক বা নেই হয়ে যান, বাকি কিছু আর থাকে কী করে! বাংলাদেশের ক্রিকেটটাই তো তখন নেই হয়ে যায়!
জানি প্রতিবাদ আসবে। সাকিব-তামিম ছাড়া কি আর এ দেশে ক্রিকেটার আসেননি? এসেছেন, ভালো ভালো ক্রিকেটারই এসেছেন। তবু ওই দুজনকে নিয়ে আলাদা করে বলার কারণ, অন্য সবার চেয়ে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে বিশ্বে ইতিবাচক পরিচয়ে পরিচিত করে তুলতে তাঁদের অবদান সবচেয়ে বেশি।
মাঠের পারফরম্যান্সে বাকিরা বেশির ভাগ সময়ই ছিলেন সাকিব-তামিমের আলোয় আলোকিত অথবা অনুপ্রাণিত। তাঁদের পদযাত্রা বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নতির মিছিলকে অবশ্যই সমৃদ্ধ করেছে। তবে ঝান্ডা ছিল সাকিব-তামিমের হাতে। এই দাবিকে ‘ভুয়া, ভুয়া’ বলে উড়িয়ে দেওয়ার আগে যদি পারেন একটু পেছন ফিরে যেতে থাকুন। তাঁদের কীর্তিতে হয়তো নিজের হাততালির শব্দও শুনতে পাবেন তখন। সেটাও কি ‘ভুয়া’ ছিল?
তবু যদি আমরা তাঁদের ‘ভুয়া’ বলে অদৃশ্য করে দিতেই চাই, এ চিন্তাটাও তখন অবশ্যই করতে হবে যে তাহলে বাকি কী থাকল? বাংলাদেশের গত ১৫ বছরের ক্রিকেট ‘মাইনাস’ সাকিব এবং তামিম—এই বিয়োগ অঙ্কের ফলটা দেখেও কি বলবেন, সাকিব-তামিম ভুয়া, তাঁরা আসলে নেই, ইংরেজিতে ‘Unsubstantial’, ‘Empty’, ‘Fake’, ‘False’?
ক্রিকেট যেমন একজনের খেলা নয়, তেমনি একটা দেশের ক্রিকেট–সংস্কৃতি গড়ে উঠতেও বহুকালের পরিক্রমা পার হতে হয়। অনেক আগুনে পুড়ে তবেই খাঁটি সোনা হওয়ার মতো এক ব্যাপার সেটা। এ দেশের ক্রিকেট সেসব কাল এখনো অতিক্রম করেনি এবং অতটা আগুনের আঁচে এখনো পোড়েনি বলেই ক্রিকেট–সংস্কৃতিও এখানে সেভাবে গড়ে ওঠেনি।
আর সব বাদ দিন, এ দেশের ‘ক্রিকেট–ভাবুক’ লাখো কোটি ‘বিশ্লেষক মন’ কি এটাও ঠিকমতো জানে, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট বলতে আসলে কী বোঝায়? ক্রিকেট–উন্নত বিশ্বের ক্রিকেট যেভাবে চলে, বাংলাদেশের ক্রিকেটের সঙ্গে তার কতটা মেলে? শুধু গ্যালারিভর্তি দর্শকই কিন্তু একটা দেশের ক্রিকেট–সংস্কৃতি নয়। ওটাকে বড়জোর ক্রিকেটের বাজার বলা যায়। বাজারে ব্যবসা হয়, খেলার সংস্কৃতি গড়ে ওঠে না।
তো এই ‘ভুয়া’ ক্রিকেটীয় পরিবেশেও যে আমরা আশরাফুল, মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ, মোস্তাফিজদের মতো সহজাত ক্রিকেটার প্রায় একই কালের ব্র্যাকেটে পেয়ে গেছি, সেটা প্রকৃতির বড় এক অন্যায্য দান। সমস্যাটা হয়তো এখানেই হয়ে যাচ্ছে। হেলায় পাওয়া রত্নেরও যে কদর থাকে না! ‘ভুয়া, ভুয়া’ শুনে অতিষ্ঠ কেউ যখন ব্যাটের হ্যান্ডেলকে বিশেষ ভঙ্গিমায় গ্যালারির দিকে তাক করেন, তখনই কেবল মনে হবে—আরে এ না লিজেন্ড! এমন কাজ কি তাঁকে শোভা পায়?
এবারের বিপিএলসহ সাকিব এই কাজটা ক্রিকেট মাঠে একাধিকবার করেছেন। পরে নিজের কৃতকর্মের ভিডিও দেখে তিনি অনুতপ্ত হন কি না জানা নেই, তবে বড়ই অনুচিত এবং দৃষ্টিকটু ভঙ্গি। মহাতারকা যখন হয়েই গেছেন, দর্শকের কিছু গালমন্দ সহ্য করার মানসিকতা তো তাঁরও এত দিনে হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। সেটা বেশ হয়েছে বলেও তো জানি। তবু যে কেন মাঝেমধ্যে নিয়ন্ত্রণ হারান, সেটা সাকিবই ভালো বলতে পারবেন। হয়তো শুধু ক্রিকেট খেলেই শেখা যায় না কিসে খেলাটার শোভা আরও বাড়ানো যায়। সে জন্য বড়ও হতে হয় ক্রিকেট–সংস্কৃতির আলো-বাতাস গায়ে মেখে।
অথবা ‘শোভা’ ব্যাপারটাই হয়তো এ রকম। আমরা সেটা অন্যের মধ্যেই কেবল দেখতে চাই। আমার মধ্যে তা অন্যের না দেখলেও চলবে। এই করে করে কারও ‘শোভা’ই আর কারও দেখা হয়ে ওঠে না। ‘শোভা’ থেকে যায় আড়ালে।
ক্যারিয়ারের দিগন্ত ছোঁয়ার অপেক্ষায় থাকা ক্রিকেটারদের অবদান তাঁদের সাক্ষী রেখেই আমরা স্মৃতির পাতা থেকে আড়ালে পাঠিয়ে দিচ্ছি। বুঝে বা না বুঝে ‘ভুয়া, ভুয়া’ চিৎকারে তাঁদের সব গৌরব–অর্জনকে আমরা নাই করে দিতে চাই। সাকিব-তামিমরাই যদি ‘ভুয়া’ হন, তাহলে তাঁদের অর্জনইবা থাকে কোত্থেকে!
অবশ্য এভাবেও ভাবা যায়—এ দৈন্য আসলে ক্রিকেট–সংস্কৃতির পূর্ণতা না পাওয়ারই আরেকটি বহিঃপ্রকাশ। বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রথম ‘লটে’র মহাতারকারাই এখনো ক্যারিয়ারের চক্র পূরণ না করায় মাঠের খেলা থেকে কেমন করে কিংবদন্তিদের বিদায় জানাতে হয়, তা তো আমাদেরও অদেখা-অজানা। তাঁদের বিদায়বেলায় করা ভুল থেকেই হয়তো আমরা সেটি শিখব। তারপর কোনো এক ভবিষ্যৎকালে আবার যখন কিংবদন্তি বিদায়ের উপলক্ষ আসবে, আমরা দাঁড়িয়ে টুপিখোলা অভিনন্দন জানাব তাঁদের।
ভুল শোধরানোর সেই সুযোগ কতকাল পরে আসবে, সেটাই হলো কথা। যেদিকে তাকাবেন, সবই তো এখন ‘ভুয়া’! যে শূন্যস্থানগুলো পূরণ হলে সে রকম দিন আসতে পারে, সেসব জায়গায় ‘Substantial’, ‘Full’, ‘True’ বা ‘Real’ কি আদৌ কিছু আছে? কিংবা গ্যালারি কি শোধরাবে তার ভুল? ‘ভুয়া’র আসল অর্থটা বুঝবে?