এলপিএলে সাকিবের অভিষেক সুপার ওভারের জয়ে
শেষ ১৮ বলে ডাম্বুলা অরার প্রয়োজন ছিল ৩৯ রান, বাকি ছিল ৪ উইকেট। শেষ ওভারে সেটি গিয়ে দাঁড়ায় ১৬ রানে, বাকি ৩ উইকেট। কাসুন রাজিতার প্রথম ২ বলে অ্যালেক্স রস ২ রান নিলেও পরের তিন বলে একটা করে ছক্কা, চার ও দুই রান নিয়ে দারুণ এক জয়ের পথে এগিয়ে নিয়ে যান দলকে।
শেষ বলে ডাম্বুলা অরার প্রয়োজন ছিল দরকার ছিল ২ রান। কিন্তু তাতে ১ রানের বেশি আসেনি, তাতেই ম্যাচ গিয়ে ঠেকে সুপার ওভারে! লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে (এলপিএল) অভিষেকেই নাটকীয় টাই ম্যাচের সাক্ষী হলেন সাকিব আল হাসান, সুপার ওভারে গিয়ে জয় পেয়েছে তাঁর দল গল টাইটানস। ক্যারিয়ারে মাত্র তৃতীয়বার টাই ম্যাচে খেললেন সাকিব।
সুপার ওভারে ডাম্বুলা তোলে ৯ রান, প্রথম ও শেষ বলের দুটি বাউন্ডারিতে। তবে লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলতে গলের প্রয়োজন পড়ে মাত্র দুটি বৈধ ডেলিভারি, বিনুরা ফার্নান্ডোকে চারের পর ছক্কা মেরে জয় এনে দেন ভানুকা রাজাপক্ষে।
এমন ম্যাচে ব্যাট হাতে ঝড়ের আভাস দিয়েছিলেন সাকিব, যদিও শেষ পর্যন্ত টানতে পারেননি সেভাবে। ১৪ বলে ২৩ রান করার পর বোলিংয়ে এসে সাকিব আল হাসান নিয়েছেন ১ উইকেট, ৪ ওভার বোলিং করে ২৫ রান দিয়ে।
টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে নামা গল পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেটে হারিয়ে তোলে ৫৫ রান, দ্বিতীয় উইকেটে শেভন ড্যানিয়েল ও ভানুকা রাজাপক্ষের ৩২ বলে ৫০ রানের জুটিতে ভালো ভিত পায় তারা। ২৬ বলে ৩৩ রান করেন ড্যানিয়েল, রাজাপক্ষে থামেন ৩৪ বলে ৪৮ রানে।
পাঁচ নম্বরে নেমেছিলেন সাকিব। প্রথম চার বলে নেন চারটি সিঙ্গেল। এরপর চড়াও হন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার ওপর। ১৫তম ওভারের তৃতীয় ও চতুর্থ বলে মারেন টানা দুটি ছক্কা—ইনসাইড আউটে এক্সট্রা কাভারের পর স্লগ সুইপে মিডউইকেটের ওপর দিয়ে। পরের বলে ফিল্ডারের মিসফিল্ডের সৌজন্যে পান আরেকটি চার।
সাকিব এরপর বাউন্ডারির দেখা পাননি আর। মাঝে রানআউট হয়ে যান টিম সেইফার্ট, যাঁর সঙ্গে সাকিবের জুটিতে ১৬ বলে আসে ২৮ রান। পরে শানাকার সঙ্গে যোগ করেন আরও ১৬ বলে ১৬ রান। শাহনেওয়াজ দাহানিকে অফ স্টাম্পের বাইরে থেকে স্কুপ করতে গিয়ে স্টাম্পে বল ডেকে আনেন সাকিব। ১৫ বল বাকি থাকতে গলের স্কোর ছিল ৪ উইকেটে ১৩৯ রান।
এরপর তারা লাফ দেয় শানাকার ঝড়ে। শেষ ১৫ বলে আসে ৪১ রান। দাহানির করা শেষ ওভারে দুই ছক্কা ও এক চারে ১৭ রান তোলেন শানাকা। শেষ পর্যন্ত গল অধিনায়ক অপরাজিত থাকেন ২১ বলে ৪২ রানে।
রান তাড়ায় প্রথম ৮ বলেই দুই ওপেনার কুশল মেন্ডিস ও আভিশকা ফার্নান্ডোকে হারিয়ে চাপে পড়ে ডাম্বুলা। তবে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কুশল পেরেরার জুটি রান তাড়ায় ভালোভাবেই লড়াইয়ে রাখে তাঁদের, দুজন মিলে যোগ করেন ৪৮ বলে ৭৬ রান। আবারও গলের ত্রাণকর্তা হিসেবে হাজির হন অধিনায়ক শানাকা, ২৫ বলে ৪০ রান করা পেরেরার পর ৩১ বলে ৪৩ রান করা ধনাঞ্জয়াকেও ফেরান তিনি।
সাকিব প্রথম বোলিংয়ে আসেন পাওয়ারপ্লেতেই, পঞ্চম ওভারে। তার আগে অবশ্য মাঠে সাপ ঢুকে পড়ায় কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে খেলা। প্রথম ওভারে সাকিব দেন ৮ রান, কিন্তু এর মধ্যে ৪ রান আসে ওভারথ্রো থেকে। প্রান্তবদল করে অষ্টম ওভারে এসে দেন ৪ রান।
১৩তম ওভারে আবার ১ ওভারের জন্য আসেন তিনি, এবার নেন সাদিরা সামারাবিক্রমার উইকেট। স্পিন করে বেরিয়ে যাওয়া বলে ঘুরিয়ে খেলতে গিয়ে এজড হন তিনি, ভালো ক্যাচ নেন উইকেটকিপার সেইফার্ট। ১৭তম ওভারে নিজের বোলিং শেষ করেন সাকিব, হেইডেন কার ইনিংসে প্রথম বাউন্ডারিটি মারেন সাকিবকে।