লড়াইটা ছিল দুই দলের জন্যই টিকে থাকার। সেই লড়াইয়ে নিউজিল্যান্ডের কাছে পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশের মেয়েরা। হেরেছে ৭১ রানের বড় ব্যবধানে। কেপটাউনের নিউল্যান্ডসে আজ টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩ উইকেটে ১৮৯ রান তোলে নিউজিল্যান্ড। নির্ধারিত ২০ ওভারে বাংলাদেশ ৮ উইকেট হারিয়ে করতে পেরেছে ১১৮ রান।
এর আগে শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়ার কাছেও হেরেছে নিগার সুলতানার দল। টানা ৩ হারে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিশ্চিত হলো তাদের। মঙ্গলবার একই মাঠে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচটা তাই নিগার-সালমাদের জন্য হয়ে দাঁড়িয়েছে নিয়মরক্ষার।
শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তবু কোনো না কোনো পর্যায়ে বাংলাদেশের কাছে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ছিল। তবে ওশেনিয়ার দুই প্রতিবেশী অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াইয়ের ছিটে ফোটাও দেখা যায়নি। নির্বিষ বোলিং, গা ছাড়া গোছের ফিল্ডিংয়ের পর টি-টোয়েন্টির দাবি মেটাতে না পারা সেই কচ্ছপগতির ব্যাটিং-তিন বিভাগেই দুর্বলতা স্পষ্ট ফুটে উঠেছে।
আগের দুই ম্যাচেই ৭৭ রানের কমে গুটিয়ে যাওয়া কিউই মেয়েরা কাল উদ্বোধনী জুটিতেই তুলে নিয়েছে এই রান। বার্নাডিন বেজুইডেনহুট ৪৪ রানে আউট হলেও সুজি বেটস ৮১ রানে অপরাজিত থেকে যান। অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে রানের খাতা খুলতে না পারা বেটস ঝাঁজ মিটিয়েছেন বাংলাদেশের বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে। ইনিংসটি খেলার পথে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ইতিহাসে প্রথম ব্যাটার হিসেবে ১০০০ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি।
বাংলাদেশের বোলিং নিয়ে বলার মতো কিছু থাকলে সেটা ফাহিমা খাতুনের দুই বলে দুই উইকেট। তিনে নামা অ্যামেলিয়া কেরকে নিজের বলে ক্যাচ নিয়ে ফেরানোর পরেই বোল্ড করেন সোফি ডিভাইনকে। এবারের বিশ্বকাপটা বড্ড বাজে কাটছে ডিভাইনের। কিউই অধিনায়ক তিন ম্যাচের দু্টিতেই মেরেছেন ‘গোল্ডেন ডাক’।
তবে ডিভাইনকে আউট করে বাংলাদেশ যেন খাল কেটে কুমির ডেকে আনে! হাশান তিলকারত্নের শিষ্যদের ওপর দিয়ে এরপর ঝড় বইয়ে দেন বেটস ও ম্যাডি গ্রিন। চতুর্থ উইকেটে দুজন ৪২ বলে তোলেন ৮২ রান। তাতে নিউজিল্যান্ড পেয়ে যায় ১৮৯ রানের বিশাল সংগ্রহ, যা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাদের দলীয় সর্বোচ্চ। ২০১০ বিশ্বকাপে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৮০ রান এতদিন ছিল সবার ওপরে।
কিউই ইনিংসে সাত বোলার ব্যবহার করেছেন অধিনায়ক নিগার। এক রুমানা আহমেদ ছাড়া সবাই ওভারপ্রতি ৯-এর বেশি রান দিয়েছেন।
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের মেয়েরা যে মন্ত্রে ব্যাটিং করে, আজও সেটার ব্যতিক্রম হয়নি। জয় নয়, হারের ব্যবধান কমানো আর পুরো ২০ ওভার খেলাই তাদের স্বার্থকতা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অধিনায়ক নিগার একাই লড়েছিলেন। আজ নিগার ৮ রানের বেশি করতে পারেননি।
ওপেনার মুর্শিদা খাতুনের সঙ্গে পাঁচে নামা স্বর্না আক্তারের ৪৬ রানের জুটিতে বাংলাদেশ তিন অঙ্ক ছুঁয়েছে, এই যা। অবশ্য এতে নিউজিল্যান্ড বোলারদেরও অবদান আছে। কিউইরা অতিরিক্ত খাত থেকে ১৭ রান না দিলে ১০০ করাও কঠিন হয়ে দাঁড়াত বাংলাদেশের।