শ্রীলঙ্কায় পর্যটক ফেরাতে জয়াসুরিয়ার দূতিয়ালি
ব্যাট হাতে প্রতিপক্ষ বোলারদের মূর্তিমান আতঙ্ক ছিলেন সনাৎ জয়াসুরিয়া। ওপেনিংয়ে নেমে ব্যাট হাতে ঝড় তুলে শুরুতেই প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেওয়াই ছিল তাঁর মূল কাজ
বিশেষ করে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে বিপ্লব এনেছিলেন জয়াসুরিয়া। ১৯৯৬ সালে শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম সারথিও ছিলেন এই ব্যাটিং অলরাউন্ডার। ‘মাতারা হারিকেন’কে এখন দেখা যাচ্ছে অন্য এক রূপে।
না, এবার তিনি ব্যাট হাতে আর কাউকে ভয় দেখাচ্ছেন না। ভয়ের বদলে বরং ভ্রমণের ডাক নিয়ে নতুন এক মিশন শুরু করেছেন জয়াসুরিয়া। তাঁর কাজ যেসব দেশে ক্রিকেট জনপ্রিয়, সেসব দেশে ভ্রমণ করে তাদের জনগণকে শ্রীলঙ্কায় বেড়াতে যেতে উদ্বুদ্ধ করা। সহজ কথায়, শ্রীলঙ্কার পর্যটনদূত হিসেবে কাজ করছেন জয়াসুরিয়া। গত বছর শ্রীলঙ্কার পর্যটন বিভাগের দূত হিসেবে কাজ শুরু করেছেন জয়াসুরিয়া। সম্প্রতি ভারতের কোচিতে মানোরমা স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে উপস্থিত হয়েও সবাইকে শ্রীলঙ্কা ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন জয়াসুরিয়া।
রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে সম্প্রতি বেশ টালমাটাল অবস্থায় ছিল শ্রীলঙ্কা। এখন সেই দুর্যোগ কাটিয়ে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে পর্যটন খাত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশটি বৈদেশিক মুদ্রার মজুতের একটা বড় অংশ পর্যটন খাত থেকে আয় করে। অর্থনৈতিক সংকটের এই সময়ে নিজেদের পর্যটনশিল্পকে চাঙা করার দায়িত্ব পড়েছে জয়াসুরিয়ার ওপর। সবাইকে শ্রীলঙ্কা ভ্রমণের ডাকও দিয়েছেন জয়াসুরিয়া।
জয়াসুরিয়া বলেছেন, ‘আমি আপনাদের আমার নিজ দেশে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। মানুষ এখন আর রান্নার গ্যাস ও পেট্রলের জন্য রাস্তায় দাঁড়ায় না। প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর আর স্বল্পতা নেই। আপনি যদি ক্রিকেটের ভক্ত হন, তবে আমার দেশের প্রতি আপনার বাড়তি ভালোবাসা থাকতেই পারে। আমি মালায়লিবাসীকে শ্রীলঙ্কা ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানাব। স্বাভাবিক জীবনকে পুনরুদ্ধার করতে আমার দেশের মানুষ লড়াই করছে। আপনাদের সমর্থন তাদের প্রয়োজন।’
বর্তমানে শ্রীলঙ্কার পর্যটনমন্ত্রী হারিন ফার্নান্দোর কোম্পানির হয়ে কাজের অংশ হিসেবে সারা বিশ্বে ভ্রমণ করছেন জয়াসুরিয়া। পাশাপাশি ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার হিসেবেও বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করে নিজের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন সাবেক এই লঙ্কান অধিনায়ক।
শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি আগের চেয়ে কতটা উন্নত হয়েছে, সে বার্তা দিয়ে জয়াসুরিয়া আরও বলেছেন, ‘পরিস্থিতি এখন বেশ ভালো। ভারতীয়রা নিশ্চিতভাবে শ্রীলঙ্কার জনতাত্ত্বিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য উপভোগ করতে পারবে। সাংস্কৃতিকভাবে ভারত ও শ্রীলঙ্কার অনেক মিলও রয়েছে। আর শ্রীলঙ্কা একটি ছোট দ্বীপদেশ, যা মূলত ভ্রমণস্বর্গ।’
বিরূপ পরিস্থিতি ক্রিকেট কীভাবে দেশটিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল, সেটি জানাতে গিয়ে জয়াসুরিয়া বলেছেন, ‘আমরা যখন নজিরবিহীন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলাম, তখন অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল আমাদের দেশে ভ্রমণ করেছে। এমন পরিস্থিতিতেও মাঠগুলোকে ক্রিকেট–ভক্তরা ভরিয়ে রেখেছিল। এটি লঙ্কানদের অদম্য স্পিরিটের সাক্ষ্য দেয়।’