পদ্মা সেতুতে উঠবে বিশ্বকাপের ট্রফি
প্রতিটি বিশ্বকাপের আগেই বিশ্বকাপের ট্রফি বিশ্বভ্রমণে বের হয়। অক্টোবর-নভেম্বরে ভারতে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপ ক্রিকেট উপলক্ষেও এখন বিশ্বকাপের ট্রফি আছে বিশ্বভ্রমণে। বর্তমানে পাকিস্তানে থাকা বিশ্বকাপ ট্রফি শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশে আসবে ৭ আগস্ট।
৭ থেকে ৯ আগস্ট—এই তিন দিন বিশ্বকাপের ট্রফি থাকবে ঢাকায়। ট্রফির বাংলাদেশ ভ্রমণের সূচিও মোটামুটি ঠিকঠাক, এখন শুধু সেটা চূড়ান্ত হওয়া বাকি। প্রাথমিক যে আলোচনা, তাতে বাংলাদেশে এসে বিশ্বকাপের ট্রফি উঠবে পদ্মা সেতুতেও।
বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী আজ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘আইসিসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনো একটা বিশেষ স্থানে বা স্থাপনার সামনে বিশ্বকাপের ট্রফি নিয়ে ফটোসেশন করার রীতি আছে। গতবার যেমন আমরা জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে এটা করেছিলাম। এবার পরিকল্পনা আছে পদ্মা সেতুতে ট্রফি নিয়ে ফটোসেশন করার।’
গত বছরের ২৫ জুন উদ্বোধন করা হয় পদ্মা সেতুর। পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়ার পর থেকেই একটি দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠেছে। এবার বিসিবিও বাংলাদেশের দীর্ঘতম এই সেতুকে বেছে নিয়েছে বিশ্বকাপ ট্রফির ফটোসেশনের জন্য।
তবে পদ্মা সেতুতে ট্রফি যাবে শুধু ফটোসেশনের জন্যই। সাধারণ মানুষের দেখার জন্য ট্রফি প্রদর্শনের ব্যবস্থা হবে ঢাকার বড় কোনো শপিং মলে। এখন পর্যন্ত যা আলোচনা, তাতে ট্রফি প্রদর্শনের ব্যবস্থা হতে পারে বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সে। এ ছাড়া ক্রিকেটারদের ট্রফি দেখা ও ট্রফির সঙ্গে ফটোসেশন হবে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে।
গত ২৭ জুন ভারতের আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ট্রফি উন্মোচনের পর এর বিশ্বভ্রমণ শুরু হয় ১৪ জুলাই থেকে। মোট ১৭টি দেশে ঘুরে ট্রফিটি চূড়ান্তভাবে বিশ্বকাপের দেশ ভারতে যাবে ৪ সেপ্টেম্বর। এর আগেও অবশ্য দুবার ভারত ভ্রমণ করবে ট্রফি। বাংলাদেশ থেকে ১০ আগস্ট বিশ্বকাপের ট্রফি যাবে কুয়েতে।
বিশ্বকাপের ট্রফি এবার এমন কিছু দেশেও যাচ্ছে, যে দেশগুলোর নাম ক্রিকেটের ক্ষেত্রে বেশ কৌতূহলোদ্দীপক। কুয়েত ছাড়াও এ রকম দেশের তালিকায় আছে বাহরাইন, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, নাইজেরিয়া, উগান্ডা, পাপুয়া নিউগিনি, ফ্রান্স ও ইতালি। নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর পাকিস্তান ছাড়াও এরই মধ্যে ট্রফিটা ঘুরে এসেছে পাপুয়া নিউ গিনি ও যুক্তরাষ্ট্রে।
বিসিবির প্রধান নির্বাহী বলেছেন, ক্রিকেটের বিশ্বায়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই যেসব দেশে খেলাটা অপেক্ষাকৃত কম পরিচিত, সেসব দেশেও ট্রফি যাচ্ছে। বিশ্বকাপ ট্রফি উন্মোচনের দিন প্রায় একই কথা বলেছিলেন আইসিসির প্রধান নির্বাহী জিওফ অ্যালার্ডাইস, ‘বিশ্বে এক শ কোটিরও বেশি ক্রিকেট–ভক্ত আছে। আমরা চাই যত বেশি সম্ভব মানুষ বিখ্যাত এই ট্রফির কাছাকাছি আসতে পারুক।’ বিশ্বভ্রমণকালে বিশ্বকাপ ট্রফি শুধু বিভিন্ন দেশের বিশেষ বিশেষ জায়গায়ই যাবে না, দেখা পাবে অনেক রাষ্ট্রপ্রধানেরও।
বিশ্বকাপের স্বাগতিক হিসেবে এই ট্রফি কাছ থেকে দেখার সুযোগটা স্বাভাবিকভাবেই বেশি পাবেন ভারতীয়রা। ট্রফি উন্মোচনের দিন বিসিসিআই সেক্রেটারি জয় শাহও বলেছিলেন সে কথাই, ‘সমর্থকেরা যে যেখানেই থাকুন না কেন, ট্রফি ট্যুর তাদের সবাইকেই বিশ্বকাপের মতো মহাযজ্ঞের অংশ হওয়ার সুযোগ করে দেবে। সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিশ্বকাপের উদ্দীপনা ছড়িয়ে দিতে এবং বিভিন্ন দর্শনীয় শহর, স্থান এবং স্থাপনাকে তুলে ধরতে ভারতে ব্যাপকভাবেই এটা করা হবে।’