বাবর-শাহিনদের ডলার দিতে গিয়ে বিপাকে পিএসএল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো
তাঁরা পাকিস্তানের ক্রিকেটার। আয়ের উৎস পাকিস্তানের ভেতরে, ব্যয়ের বেশির ভাগও পাকিস্তানি মুদ্রাতেই। কিন্তু এই ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক দিতে হচ্ছে ডলারে। পিএসএলে (পাকিস্তান সুপার লিগ) বাবর আজম, শাহিন আফ্রিদিদের পারিশ্রমিক ডলারে দিতে গিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো এখন বিপাকে।
ড্রাফটের সময় যে খরচ হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল, ডলারের বিপরীতে রুপির মান কমে যাওয়ায় সেটা বেশ বড় অঙ্কে বেড়ে গেছে।
ক্রিকেটপাকিস্তান ডটকমের খবরে বলা হয়, আগামী ১৩ এপ্রিল শুরু হবে পিএসএলের অষ্টম আসর। সাধারণত পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিকের ৭০ শতাংশ দেওয়া হয় টুর্নামেন্ট শুরুর আগে। বাকি ৩০ শতাংশ টুর্নামেন্ট শেষে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী, দেশি-বিদেশি সব খেলোয়াড়কে মার্কিন ডলারে পারিশ্রমিক দিতে হবে। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর ড্রাফটের সময় ১ ডলার কিনতে খরচ হতো ২২৫ পাকিস্তানি রুপি।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানের রুপির মান রেকর্ড পরিমাণে কমেছে। গত বৃহস্পতিবার প্রতি ডলারের দাম ৯ দশমিক ৬ শতাংশ কমে ২৫৫ রুপিতে দাঁড়িয়েছে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, এই দরপতন গত দুই দশকের বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড়।
এমন পরিস্থিতিতে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক বাবদ ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর খরচ বেড়েছে ৩০ শতাংশের মতো। একটি ফ্র্যাঞ্চাইজির কর্মকর্তা ক্রিকেটপাকিস্তানকে বলেন, পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের ডলারে পেমেন্ট করার বাধ্যবাধকতা থাকায় খরচের অঙ্ক বেড়েছে। দেশি ক্রিকেটারদের বিদেশি মুদ্রায় পারিশ্রমিক দেওয়ার যৌক্তিকতা নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সমস্যাটি নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো পিসিবি চেয়ারম্যান নাজাম শেঠির সঙ্গে দেখা করলেও কোনো সমাধান আসেনি। পিএসএলে প্লাটিনাম ক্যাটাগরির ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক হয়ে থাকে ১ লাখ ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার। ডায়মন্ড ৮৫ থেকে ৬০ হাজার, গোল্ড ৫০ থেকে ৪০ হাজার এবং সিলভার ২৫ থেকে ১৫ হাজার ডলার।
২০২১ সালে বিদেশি ক্রিকেটার ও প্রোডাকশন বাদে বাকিদের পারিশ্রমিক দেওয়া হয়েছিল পাকিস্তানি রুপিতে। তবে গত বছর আবারও মার্কিন ডলারে পেমেন্ট–ব্যবস্থা চালু করে রমিজ রাজার নেতৃত্বাধীন পিসিবি। সেই নিয়মই এখন ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পিএসএলের সপ্তম আসরের ড্রাফটের সময় প্রতি ডলারে ১৭৫ পাকিস্তানি রুপি পাওয়া যেত, যা অষ্টম আসরের ড্রাফট আসতে আসতে ৫০ রুপি বেড়ে যায়। এখন পারিশ্রমিক পরিশোধের সময়ে বেড়েছে আরও ৩০ রুপি।
সব মিলিয়ে খরচ কেমন বেড়েছে, তার উদাহরণ দিতে গিয়ে ক্রিকেটপাকিস্তান বলছে, সপ্তম পিএসএলে যে ক্রিকেটারকে ৩ কোটি রুপি দিতে হয়েছে, দাম অপরিবর্তিত থাকার পরও একই খেলোয়াড়ের জন্য এবার বাড়তি ৮২ লাখ রুপি খরচ হচ্ছে।