শাহরুখ খান জানালেন, কলকাতারও আছে ‘জয় বীরু’ ও ‘সুপারম্যান’
বলিউডে ২০০৯ সালে মুক্তি পাওয়া ‘জয় বীরু’ সিনেমাটা কি দেখেছেন? ফারদিন খান ও কুনাল খেমু অভিনীত সেই সিনেমাটা দুই বন্ধুর গল্প নিয়ে। কলকাতা নাইট রাইডার্সেও এমন জয়–বীরু জুটি আছে। আর সেটা জানিয়েছেন স্বয়ং কলকাতারই সহমালিক বলিউড কিংবদন্তি শাহরুখ খান।
পুনীত সিরা পরিচালিত সেই সিনেমায় দেখা গিয়েছিল, দুই বন্ধু জয় ও বীরু মিলে এক মাফিয়া ডনের বিরুদ্ধে লড়ছে। ক্রিকেটীয় দৃষ্টিকোণ থেকে কলকাতার জয়–বীরু জুটির কাজটাও ঠিক তাই। ব্যাট হাতে দুজনেই ধ্বংসাত্মক। প্রতিপক্ষের বোলারদের একদম দুমড়ে–মুচড়ে দেন। কাদের কথা বলা হচ্ছে, এতক্ষণে নিশ্চয়ই আন্দাজ করে ফেলেছেন? আচ্ছা, বলেই দেওয়া যাক—আন্দ্রে রাসেল ও রিংকু সিং।
আইপিএলে গতকাল রাতে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসকে ২৪ রানে হারিয়েছে কলকাতা। এ ম্যাচের আগে টিভি চ্যানেল স্টার স্পোর্টসে ‘নাইট ক্লাব প্রেজেন্টস—কিং খান রুলস’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে নিজের ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের খেলোয়াড়দের নিয়ে কথা বলেন শাহরুখ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেলের প্রশংসা করতে গিয়ে রিংকু সিংয়ের উদাহরণ টানেন কিংবদন্তি, ‘অন্যান্য দারুণ কিছু গুণাবলীর পাশাপাশি সে (রাসেল) ছোটদের সঙ্গেও খুব ভালো। রিংকু এবং তার বন্ধন খুবই শক্তিশালী, জয়–বীরুর বন্ধুত্বের মতো। অনেক দিক থেকেই তারা আলাদা, তবু তারা একে–অপরকে ভালোবাসে, ক্রিকেটার এবং মানুষ হিসেবে একে–অপরকে সাহায্য করে।’
শাহরুখ রাসেলের ‘অন্যান্য গুণাবলী’ নিয়েও কথা বলেছেন। প্রথমত, রাসেলকে দেখে শাহরুখের ক্রিস গেইলকে মনে পড়ে। ২০০৯ সালে কলকাতার হয়ে খেলেছেন ‘ইউনিভার্স বস’খ্যাত ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি গেইল।
এরপর রাসেলের ফ্যাশন সচেতনতারও প্রশংসা করেন কলকাতার এই সহমালিক, ‘তাকে (রাসেলকে) দেখে আমাদের ইউনিভার্স বস মিস্টার গেইলকে মনে পড়ে। সে তার মতো এবং একটা ব্যাপার খুব ভালো লাগে যে সে ফ্যাশন–সচেতন। ভালো পোশাক পরতে পছন্দ করে, চুলের যত্ন নেয়। গতকাল রাতে যেমন তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তোমার কি দুই রঙের জুতা আছে? সে বলল, না তবে স্পাইকসের ডিজাইনার্স আছে। জানতে চাইলাম, সেগুলো কি গুচির ডিজাইনার্স স্পাইকস? সে বলল, হ্যাঁ। তার ফ্যাশন সচেতনতা আমি ভালোবাসি।’
মাঠে রাসেলকে যতটা ধ্বংসাত্মক রূপে দেখা যায়, মাঠের বাইরে কিন্তু তিনি অন্য মানুষ। শাহরুখ সে কথাও জানালেন, ‘আন্দ্রের সঙ্গে সিরিয়াস আলোচনা করতে পারি না। সে খুবই মিস্টি স্বভাবের। মাঠে সে যেমন, বাস্তবে একদমই উল্টো। বাস্তবে সে বিনয়ী ও মিস্টি স্বভাবের। এমনকি নাচের সময়ও বিনয়ী। তাকে ফিট রাখা নিয়েই মূলত আমাদের মধ্যে কথাবার্তা হয়। কোনো সমস্যা হলে সে আমাদের জানায়। সে একজন দুর্দান্ত ক্রীড়াবিদ, মানুষ হিসেবেও খুব ভালো, বড় মাপের ক্রিকেটার।’
মুম্বাইয়ের বিপক্ষে গতকাল ৭ রানে আউট হলেও এবার আইপিএলে রাসেলকে চেনা রূপেই দেখা যাচ্ছে। ১০ ম্যাচে ৭ ইনিংসে ব্যাট করে ৩৭.২০ গড়ে ১৮৯.৭৯ স্ট্রাইক রেটে ১৮৬ রান করেছেন রাসেল, উইকেট নিয়েছেন ১১টি।
কলকাতা নাইট রাইডার্সে কিন্তু একজন ‘সুপারম্যান’ও আছেন। শাহরুখ নিজেই দিলেন সেই সুপারম্যানের পরিচয়—সুনীল নারাইন, ‘দলের মধ্যে আমরা তাকে সুপারম্যান বলে ডাকি। মাঠে সে কর্তৃত্বপরায়ন। সে এমন এক খেলোয়াড়, যে বোলিং, ব্যাটিং, উইকেটকিপিং, ফিল্ডিং—যেকোনো ভূমিকা রাখতে পারে।’
২০১২ ও ২০১৪ সালে কলকাতার আইপিএল জয়ে দারুণ ভূমিকা রেখেছিলেন নারাইন। আইপিএলে বিদেশি স্পিনারদের মধ্যে নারাইনের উইকেটসংখ্যাই সবচেয়ে বেশি (১৭২ ম্যাচে ১৭৬ উইকেট)।
কলকাতা নাইট রাইডার্সে এই দুই ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটাও জানালেন শাহরুখ, ‘একবার ভাবুন, চোটের কারণে তাদের পাচ্ছে না কেকেআর (কলকাতা নাইট রাইডার্স)। ভাবতেই কেমন যেন লাগে, মনে হয় তাদের ছাড়া কীভাবে সামলাব! তারা অনেক বছর ধরে আমাদের সঙ্গে আছে এবং যেভাবে দলকে সমর্থন দেয়, তারা আসলে পরিবারেরই অংশ।’