আবার ডি ককের শতক, সঙ্গে ফন ডার ডুসেন; দক্ষিণ আফ্রিকার রেকর্ড ৩৫৭
‘যাচ্ছে না কেন’ আর ‘এখনই যাচ্ছে কেন’।
অ্যাথলেটদের অবসর নেওয়ার ক্ষেত্রে দুটি কথাই প্রচলিত। কেউ সেভাবে পারফর্ম করতে না পারলে বলা হবে, যাচ্ছে না কেন। আর কেউ পারফরম্যান্সের দিক দিয়ে বেশ উঁচুতে থাকার সময় বলতে শোনা যায়, কেন এখনই অবসর। কুইন্টন ডি কক এ বিশ্বকাপে নিশ্চিত করছেন, তাঁকে নিয়ে বলা হবে পরের কথাটিই। পুনেতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এবারের বিশ্বকাপে চতুর্থ শতকটি করার পর সে কথাই আসছে আরেকবার।
ডি ককের ১১৪, রেসি ফন ডার ডুসেনের ১৩৩ রানের সঙ্গে ডেভিড মিলারের ৩০ বলে ৫৩ রানের ইনিংসে টসে হেরে ব্যাটিং করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা তুলেছে ৫০ ওভারে ৪ উইকেটে ৩৫৭ রান। এ নিয়ে ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে আগে ব্যাটিং করে টানা ৮ ম্যাচে ৩০০ বা এর বেশি রানের স্কোর গড়ল দক্ষিণ আফ্রিকা। নিউজিল্যান্ড বেশ খানিকটা সময় দক্ষিণ আফ্রিকাকে সেভাবে ছুটতে দেয়নি। তবে ক্যাচের সুযোগ হাতছাড়া করা, চোট নিয়ে ৫.৩ ওভার করেই ম্যাট হেনরির উঠে যাওয়া ভুগিয়েছে তাদের।
ট্রেন্ট বোল্ট ও হেনরির নতুন বলের হুমকির কথা ভালোভাবেই জানতেন ডি কক। সে সময় সতর্ক থেকেছেন, প্রথম ৩৯ বলে করেছিলেন মাত্র ২২ রান। বল একটু পুরোনো হয়ে আসার পর থেকেই চড়াও হন তিনি, ৬২ বলে পূর্ণ করেন অর্ধশতক। জেমস নিশামকে ছক্কা মেরে শতক পূর্ণ করেন মাত্র ১০৩ বলে। শেষ পর্যন্ত ১১৬ বলে ১১৪ রানের ইনিংসে মেরেছেন ১০টি চারের সঙ্গে ৩টি ছক্কা। ক্যারিয়ারে সবচেয়ে ফর্মে আছেন কি না, ইনিংস বিরতিতে হার্শা ভোগলের করা এমন এক প্রশ্নের জবাবে ডি কক বলেছেন, ‘আমারও তাই মনে হয়।’ তবে অবসরের আগে সব কিছু দিয়ে যেতে চান, সেটিও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
আগামী ডিসেম্বরে বয়স ৩১ হবে, ডি কক এ মাসেই চলে যাবেন ওয়ানডে থেকে অবসরে। দক্ষিণ আফ্রিকা ফাইনাল পর্যন্ত গেলে আজকের পর তিনি খেলবেন আর সর্বোচ্চ চারটি ম্যাচ। তবে প্রথম ৭ ম্যাচেই বিশ্বকাপটি স্মরণীয় করে রাখলেন এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান।
এর আগে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ১০০, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ১০৯ ও বাংলাদেশের সঙ্গে ১৭৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন ডি কক। আজকের শতক দিয়ে বিশ্বকাপের সংক্ষিপ্ত এক তালিকায় ঢুকে গেছেন তিনি। কুমারা সাঙ্গাকারা, রোহিত শর্মার পর তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে এক আসরে চারটি শতক করলেন তিনি। সব মিলিয়ে ওয়ানডেতে এটি তাঁর ২১তম শতক, দক্ষিণ আফ্রিকানদের মধ্যে সর্বোচ্চ শতকের তালিকায় তিনে থাকা হার্শেল গিবসকেও ছুঁয়ে ফেলেছেন তিনি।
এ ইনিংসের পথে প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকান হিসেবে বিশ্বকাপের এক আসরে ৫০০ রানের রেকর্ডও হয়ে গেছে তাঁর, যে মাইলফলক ছুঁতে আজ তাঁর প্রয়োজন ছিল ৬৯ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার আগের সর্বোচ্চ ছিল ২০০৭ সালে জ্যাক ক্যালিসের ৪৮৫ রান। অথচ বিশ্বকাপের আগের দুই আসর ডি ককের জন্য ছিল বিস্মৃত হয়েই। এবারের আগে ১৭ ম্যাচ খেলে করেছিলেন ৪৫০ রান, শতক ছিল না একটিও। এবার প্রথম ৭ ম্যাচেই ৭৭.৮৫ গড় ও ১১২.৬০ স্ট্রাইক রেটে ৫৪৫ রান। শচীন টেন্ডুলকারের এক আসরের সর্বোচ্চ ৬৭৩ রানের রেকর্ডটিও তাই হুমকির মুখে, বিশেষ করে যেভাবে এগোচ্ছে ডি ককের দল দক্ষিণ আফ্রিকাও।