রোহিত শর্মা দারুণ এক রেকর্ড করলেন আজ। কিন্তু তাঁর মুম্বাই ইন্ডিয়ানস নিজেদের রেকর্ডের কোনো পরিবর্তন আনতে পারেনি। সব ধরনের টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে রোহিত ২০০তম ম্যাচে অধিনায়কত্ব করলেন। কিন্তু আইপিএলে মুম্বাইয়ের যে প্রথম ম্যাচের ‘গেরো’, সেটি খুলতে পারেনি তারা। আজ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর কাছে হেরে আইপিএলে টানা ১১বার প্রথম ম্যাচে হারল মুম্বাই।
বেঙ্গালুরুর জয়টা বিরাট কোহলি আর ফাফ ডু প্লেসির ব্যাটের দাপটেই। শুরুর বিপর্যয় সত্ত্বেও তিলক ভার্মার একপ্রান্ত ধরে রেখে ৪৬ বলে ৮৪ রানের ইনিংসে মুম্বাইয়ের সংগ্রহটা মন্দ ছিল না— ৭ উইকেটে ১৭১। কিন্তু কোহলি আর ডু প্লেসির ব্যাটের ঝড়ে খড়কুটোর মতো উড়ে গেল সেই সংগ্রহ। কোহলি-ডু প্লেসির ৮৯ বলে ১৪৮ রানের ওপেনিং জুটিতেই খেল খতম! বেঙ্গালুরুর জয় যখন প্রায় নিশ্চিত তখন মুম্বাই ২ উইকেট তুলে নিলে ১০ উইকেটের জয়টিই শুধু আসেনি। বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে চার-ছয়ের ঝড় তুলে কোহলি আর ডু প্লেসি খেলাটাকে সহজ করে দিয়েছেন। কোহলি ৪৯ বলে ৬ চার ও ৫ ছক্কায় ৮৪ রান করে অপরাজিত থাকলেন, ডু প্লেসি ৫ চার ও ৬ ছক্কায় ৪৩ বলে ৭৩ রান করে যখন ফেরেন, রোহিতের দলের বিপক্ষে বেঙ্গালুরুর জয়টা তখন প্রায় নিশ্চিতই। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল শেষ দিকে নেমে মাত্র ৩ বল খেলে করেছেন ১২। মাত্র ১৬.২ ওভারেই ১৭১ রান তাড়া করে ফেলে বেঙ্গালুরু। এতেই বোঝা যায়, কতটা আগ্রাসী ছিলেন কোহলি-ডু প্লেসিরা।
রোহিতের মুম্বাইয়ের ওপর কোহলির বেঙ্গালুরুর দাপটা ছিল শুরু থেকেই। টসে জিতে ফিল্ডিংয়ে নেমেই মোহাম্মদ সিরাজ আর রিস টপলিদের বোলিংয়ের সামনে অসহায় লাগছিল মুম্বাইকে। দিনটা আজ রোহিতের যে ছিল না সেটি তাঁর ইনিংসই বলে দিচ্ছে ১০ বল খেলে ১ রান করে তিনি অবশ্য ফিরেছেন আকাশদীপ সিংয়ের বলে। উইকেটের পেছনে দিনেশ কার্তিক নিয়েছেন তাঁর ক্যাচ। সিরাজ ফেরান ঈশান কিষাণকে (১৩ বলে ১০ রান), টপলির বলে ৫ রান করে বোল্ড হন ক্যামেরন গ্রিন।
একপর্যায়ে ২০ রানে ৩ উইকেট হারানো মুম্বাইয়ের ত্রাণকর্তা হয়ে ওঠেন তিলক ভার্মা। একপ্রান্তে উইকেট হারানোর মিছিলের মধ্যেও অবিচল আস্থায় ব্যাটিং করে গেছেন তিনি। ৪৬ বলে ৯ বাউন্ডারি আর ৪ ছক্কায় ৮৪ রান করেন তিনি। মুম্বাইয়ের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস নিহাল ওয়াধেরার—১৩ বলে ২১। ভারতের হয়ে ওয়ানডে ম্যাচে টানা তিন শূন্য মেরে টি-টোয়েন্টির ‘নিজ ঘরে’ ফেরা সূর্য কুমার যাদব আজও ছিলেন ব্যর্থ। ১৬ বলে ১৫ রান করে মিচেল ব্রেসওয়েলের বলে শাহবাজ আহমেদের ক্যাচ হন তিনি। শেষের দিকে আরশাদ খান করেন ৯ বলে ১৫। তিলক, নিহাল, সূর্য আর আরশাদের বাইরে মুম্বাইয়ের ইনিংসে দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি আর কোনো ব্যাটসম্যানই।
কোহলি আর ডু প্লেসির জুটি ১০০ রান তুলে ফেলেন ইনিংসের ১১তম ওভারেই। এরপর তাঁরা দুজনই মনোযোগ দেন ম্যাচটা সুন্দর করে শেষ করার দিকে। এ দুজনের জুটিতে আগ্রাসন তো ছিলই, ছিল সতর্কতাও। মুম্বাইয়ের বোলাররা ইনিংসের কোনো পর্যায়েই এ দুজনের ওপর কোনো ধরনের চাপ তৈরি করতে পারেননি, এ দুজনকে কোনো প্রকার শঙ্কার মধ্যে ফেলতে পারেননি। মুম্বাই শুরুতে ব্যাটিংয়ের সময় কিছুটা ধুঁকলেও কোহলি আর ডু প্লেসি দেখিয়ে দিয়েছেন আজ এ ম্যাচের উইকেট কতটা ব্যাটিং-বান্ধব ছিল।